আজ বৃহস্পতিবার, ১২ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২৫শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

মহানগরে জেলার ছায়া !

সংবাদচর্চা রিপোর্ট
মেয়াদ শেষ হয়েও ২ বছর হলেও নারায়ণগঞ্জ মহানগর আওয়ামী লীগের সম্মেলন হয়নি। দলের কেন্দ্রীয় কমিটির আগে এ নিয়ে কথা শোনা গেলেও শেষতক তা থেমে যায়। তবে সম্প্রতি ফের আলোচনা শুরু হয়েছে। দলীয় সূত্র বলছে, কোন্দল ও গ্রুপিংয়ের কারনে শেষ পর্যন্ত সম্মেলন নাও হতে পারে। তবে ২/১ মাসের মধ্যেই নয়া কমিটি গঠন করা হবে আর তা দলের শীর্ষ পর্যায়ে থেকে ঘোষণা হতে পারে। সূত্র আরও জানায়, শীর্ষ পদ সহ বিভিন্ন পদে নতুন মুখ আসতে পারে। সেই সাথে জেলা কমিটির ছায়া পড়তে পারে মহানগরে।

২০১৩ সালের ১১ সেপ্টেম্বর মহানগর আওয়ামীলীগের দুই সদস্যের কমিটি ঘোষণা করা হয়। সভাপতি করা হয় আনোয়ার হোসেনকে আর সাধারণ সম্পাদক খোকন সাহা। দায়িত্বপ্রাপ্ত এ দুই নেতাকে ৭ দিনের মধ্যে পূর্নাঙ্গ কমিটি গঠন করে কেন্দ্রে জমা দেয়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তবে ৭ দিন নয় দুই বছরেরও বেশী সময়ের পরও তারা তা পারেননি। পরে ২০১৫ সালের ২৬ নভেম্বর মহানগর আওয়ামীলীগের ৭১সদস্যের পূর্নাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করেন বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। দলীয় সূত্র জানায়, শহরের উত্তর-দক্ষিণ কোন্দলের কারনেই স্থানীয় শীর্ষ নেতারা পূর্নাঙ্গ কমিটি গঠন করতে পারেনি। পরে বাধ্য হয়ে দলীয় সভাপতি কমিটি ঘোষণা করেন। এবার নয়া কমিটি গঠনেও এমনটা হতে পারে বলে মনে করেন নেতাকর্মীরা।

মহানগর আওযামী লীগের এক শীর্ষ নেতা জানান, সাংগঠনিকভাবে নারায়ণগঞ্জের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা হলেন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম। এক সপ্তাহ আগে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আবদুল হাই এবং সাধারণ সম্পাদক আবু হাসনাত মো. শহীদ বাদল ঢাকায় মির্জা আজমের সাথে বৈঠক করেন। এ সময়ে নারায়ণগঞ্জের সাংগঠনিক কর্মকান্ড নিয়ে আলাপ হয়। সেই সাথে মহানগর আওয়ামী লীগের কমিটি গঠন বিষয়ে আলোচনা হয়। এরপর থেকেই একটা তৎপরতা লক্ষ্য করা যায় মহানগরের নেতাদের মাঝে। দলীয় সূত্র জানায়, মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি আনোয়ার হোসেন কে জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান করায় এবার তিনি মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতির পদ নাও পেতে পারেন। এ সুযোগে সভাপতি পদের দিকে ঝুঁকেছেন সাধারণ সম্পাদক খোকন সাহা। শহর ও মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক পদে একটানা এক দশক ধরে থাকায় তিনি ইচ্ছা করেই পদ পরিবর্তন করতে চাইছেন। তবে কেন্দ্রীয় শীর্ষ নেতাদের মর্জি হলে আনোয়ার হোসেনকেই সভাপতি রাখতে পারেন। ক্লীন ইমেজধারী কোন সভাপতি না পেলে পূণরায় তাকে পদ দেয়া হতে পারে। এ দুইজন ছাড়াও আরও কয়েকজন সভাপতি পদ চাইছেন বলে জানা গেছে। তবে কেউই প্রকাশ্যে তা চাইছেন না। অপেক্ষায় আছেন, কী হয় দেখি। এদিকে সাধারণ সম্পাদক পদে কয়েকজন প্রার্থী রয়েছেন। এরমধ্যে দুই সাংগঠনিক সম্পাদক জাকিরুল আলম হেলাল ও জিএম আরাফাতের নাম শোনা যাচ্ছে। এ দুইজনই ছাত্রলীগের রাজনীতি থেকে উঠে এসেছেন। এরমধ্যে হেলাল সরকারী তোলারাম কলেজের জিএস ছিলেন। আরাফাত জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ও লিয়াকত সিকদার এবং নজরুল ইসলাম বাবুর নেতৃত্বাধীন ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক ছিলেন। এছাড়া মহানগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক শাহ নিজামও সাধারণ সম্পাদক পদ চাইছেন। তবে শহরের উত্তরপন্থি হিসেবে পরিচিত হেলাল, নিজামদের মধ্যে থেকে যে কোন একজনকেই বেছে দিবে তাদের নেতা।

নারায়ণগঞ্জ মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক খোকন সাহা সংবাদচর্চাকে জানান, আমাদের মহানগর কমিটির মেয়াদ ৩ বছর ৬ মাস। এখনো কেন্দ্র থেকে সম্মেলনের বিষয়ে কোন দিক নির্দেশনা আসেনি। তিনি বলেন, এবারের সম্মেলনে তৃণমূল নেতারা ঠিক করবেন তিনি কোন পদে থাকবেন বলে জানান মহানগর আওয়ামী লীগের এই নেতা।

বিশ্লেষকদের মতে, অতীতের সব কমিটির মতোই কমপক্ষে দু’টি তালিকা কেন্দ্রে জমা পড়বে। একটিতে শামীম ওসমানপন্থি অর্থাৎ উত্তর মেরুর নাম অপরটিতে দক্ষিণপন্থিদের নাম। এরপর কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ দুই তালিকা যাচাই বাছাই করে একটা কমিটি ঘোষণা দিবেন। তবে জেলা আওয়ামী লীগের কমিটি গঠনে দক্ষিণপন্থিরা সুবিধায় পেয়েছেন। ক্লীন ইমেজধারী দেখে দেখে ওই বলয়ের নেতারাই বেশী পদ পেয়েছেন। মহানগরের নয়া কমিটিতে সে ছায়া পড়বে না-কি নতুন কিছু হবে তা জানতে অপেক্ষা করতে হবে আরও কিছু দিন।

স্পন্সরেড আর্টিকেলঃ