আজ শনিবার, ১৪ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২৭শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

ভরসার শেষ ঠিকানা হয়ে ওঠে গাজী পিসিআর ল্যাব

টি.আই.আরিফ

করোনার সময় কে কি করছে তা সবার মনে আছে। করোনাভাইরাস পরিস্থিতি বিবেচনায় নারায়ণগঞ্জকে কোভিড-১৯ এর হটস্পট ও রেড জোন হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছিল। করোনার অন্যতম হটস্পট হিসেবে ঘোষিত এই এলাকায় শুরুতে ছিলো না কোভিড-১৯ নমুনা পরীক্ষার জন্য কোনো পিসিআর ল্যাব। ঢাকার ল্যাবগুলোই ছিল এখানকার মানুষদের ভরসা। তবে পরিস্থিতি মোকাবিলায় বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার গাইডলাইন অনুযায়ী বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী বীরপ্রতীক ও গাজী গ্রুপের উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক গাজী গোলাম মর্তুজা পাপ্পার নিজস্ব অর্থায়নে স্থাপিত গাজী কোভিড-১৯ পিসিআর ল্যাব নারায়ণগঞ্জবাসীকে আশার আলো দেখিয়েছে। রেড জোনের স্বাস্থ্যসেবায় নারায়ণগঞ্জবাসীর কাছে একমাত্র ভরসা হয়ে উঠেছিল ল্যাবটি। সরকারী দল,বিরোধী দলের নেতাদের বাড়ি থেকে নমুনা সংগ্রহের ব্যবস্থা করেছেন মন্ত্রীপুত্র। শুধু নারায়ণগঞ্জবাসী নয়, গাজী কোভিড-১৯ পিসিআর ল্যাবের সুফল পেয়েছেন আশপাশের জেলার মানুষও। র‌্যাব, পুলিশ, ম্যাজিস্ট্রেট, চিকিৎসক, ব্যবসায়ী, জনপ্রতিনিধিসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ গাজী পিসিআর ল্যাবে বিনামূল্যে করোনাভাইরাস পরীক্ষা করাচ্ছেন। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত গাজী পিসিআর ল্যাবে প্রায় তিন লক্ষের অধিক করোনার নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। গত ১৩ সেপ্টেম্বর গাজী পিসিআর ল্যাবে বিনামূল্য করোনাভাইরাস পরীক্ষা করতে দেখা গেছে। করোনার ধাক্কা শেষ হলেও কাঞ্চনের কেন্দুয়ায় অবস্থিত বাংলাদেশের প্রথম একমাত্র বেসরকারী এই গাজী পিসিআর ল্যাব এখনো চালু রয়েছে।

জানা গেছে, গাজী গ্রুপের উদ্যোগে প্রতিষ্ঠিত এই করোনাভাইরাস পরীক্ষার ল্যাব শুধু রূপগঞ্জের জন্য না, এখান থেকে এখনও সারা নারায়ণগঞ্জের মানুষের নমুনা পরীক্ষা করা হচ্ছে। এছাড়া নারায়ণগঞ্জের আশেপাশের জেলার ব্যক্তিদের করোনাভাইরাস পরীক্ষাও করা হচ্ছে এখানে। অর্থায়নের পাশাপাশি পুরো কার্যক্রমই গাজী গ্রুপের উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক গাজী গোলাম মর্তুজা পাপ্পা তদারকি করছেন। ইতোমধ্যে করোনা যোদ্ধা হিসেবে গাজী গোলাম মর্তুজা বেশ পরিচিতি পেয়েছেন। তরুণ এই আওয়ামী লীগ নেতার কর্মকান্ডে মুগ্ধ জনগণ।
এদিকে, গাজী কোভিড-১৯ পিসিআর ল্যাব প্রতিষ্ঠার ৩ বছর পূর্তি উপলক্ষে বিনামুল্যে চিকিৎসা সেবা, রক্তের গ্রুপ নির্নয়, ডায়াবেটিকস পরীক্ষাসহ নানা কর্মসূচি পালন হয়েছে ল্যাবে। এছাড়া কেক কেটে গাজী কোভিড-১৯ পিসিআর ল্যাব প্রতিষ্ঠার তিন বছর পূর্তি উৎসব পালন করে ল্যাবের কর্মরতরা।

এ ব্যাপারে গাজী কোভিড-১৯ পিসিআর ল্যাব এর ল্যাবরেটরী প্রধান এসোসিয়েট প্রফেসর ডাক্তার রুখসানা রায়হান বলেন, ‘গাজী পিসিআর ল্যাবের সুফল পাচ্ছেন নারায়ণগঞ্জসহ আশপাশের জেলার মানুষ। ঘনবসতিপূর্ণ নারায়ণগঞ্জে যারা আক্রান্ত হচ্ছেন, তাদের দ্রুত শনাক্ত করা যাচ্ছে। আক্রান্ত ব্যক্তিদের আইসোলশনে রাখা হচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, ‘নারায়ণগঞ্জ জেলায় আগে কোনো পিসিআর ল্যাব ছিল না। যে কারণে নমুনা সংগ্রহ করে তা পরীক্ষা সময়সাপেক্ষ হয়ে যেত। কিন্তু গাজী কোভিড-১৯ পিসিআর ল্যাবের কারণে এখন অনেক উপকার হচ্ছে। প্রতিদিন সেখানে বিভিন্ন স্থান থেকে নমুনা সংগ্রহ করে পাঠানো হচ্ছে। আগে ৬/৭ দিন রিপোর্টের জন্য অপেক্ষা করতে হয়েছে। এখন ২৪ ঘণ্টার মধ্যে রিপোর্ট পাওয়া যাচ্ছে। এ ল্যাবে লক্ষাধিক করোনার নমুনা পরীক্ষা হয়েছে। বর্তমানে ল্যাবে কর্মরতরা করোনার নমুনা সংগ্রহ ও পরীক্ষার পাশাপাশি বিনামূল্যে মানুষকে চিকিৎসা সেবা দিয়ে যাচ্ছে। এছাড়া গবেষনামূলক কাজ করছে তারা।’

প্রসঙ্গত প্রথমে নারায়ণগঞ্জে করোনা ভাইরাস পরীক্ষার কোনো পিসিআর ল্যাব ছিলো না, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তখন নারায়ণগঞ্জে ল্যাব স্থাপনের উপর গুরুত্ব আরোপ করেন। প্রধানমন্ত্রীর গুরুত্ব আরোপের প্রেক্ষিতে বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী বীর প্রতীকের নিজস্ব অর্থায়নে এবং গাজী গ্রুপের উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক তরুণ শিল্প উদ্যোক্তা বিসিবি ও যমুনা ব্যাংকের পরিচালক গাজী গোলাম মর্তুজার উদ্যোগে রূপগঞ্জে করোনা ভাইরাস পরীক্ষার জন্য গাজী কোভিড-১৯ পিসিআর ল্যাব উদ্বোধন করা হয়। ২০২০ সালের ২৯ এপ্রিল দুপুরে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী ডা: জাহিদ মালেক এবং বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী বীর প্রতীক যৌথভাবে গাজী পিসিআর ল্যাব উদ্বোধন করেন। করোনার হটজোন নারায়ণগঞ্জের প্রথম ল্যাব এটি। গাজী পিসিআর ল্যাবের সুফল পাচ্ছে নারায়ণগঞ্জসহ আশপাশের জেলার মানুষ।
এব্যাপারে রূপগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগ সহ-সভাপতি গাজী গোলাম মর্তুজা পাপ্পা জানান, জনগণকে সেবার দেওয়ার লক্ষ্যে আমরা গাজী পিসিআর ল্যাব প্রতিষ্ঠা করেছিলাম। সবার সেবা করে যাচ্ছি। রূপগঞ্জবাসীর সুখে-দুঃখে সবসময় গাজী পরিবার আছে। মাননীয় মন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী বীরপ্রতীক মহোদয় করোনার সময় সবার খোঁজ নিয়েছে এবং সহযোগিতা করেছে। তখন বিরোধী দলের নেতারা রূপগঞ্জবাসীর খোঁজ রাখেনি। এখন নির্বাচন এসেছে অনেক সুযোগ সন্ধানী দানবীর হয়ে গেছে। করোনার সময় তাদেরকে খুঁজে পাওয়া যায়নি। করোনার সময় যারা জনগণের পাশে ছিলো আগামী নির্বাচনে জনগণ তাদেরকেই ভোট দেবে।

স্পন্সরেড আর্টিকেলঃ