আজ শনিবার, ৯ই ফাল্গুন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২২শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

বিষাক্ত পানি গায়ে !

নিজস্ব প্রতিবেদক:

নারায়ণগঞ্জের তল্লা বায়তুস সালাত জামে মসজিদের সামনে দীর্ঘদিনের জলাবদ্ধ পানি দুর্ভোগের কারন ছিল স্থানীয়দের জন্য। ইউনিয়ন পরিষদের অবহেলার কারনে চলাফেরা করতে ভোগান্তি পোহাতে হতো পথচারীদের। জলাবদ্ধ এই পানিতে বৃষ্টি, ড্রেন এবং ডাইংকের পানি মিশ্রিত হয়ে দুর্গন্ধ ছড়াতো প্রতিনিয়ত। কোন কারনে সেই পানিতে পা ফেললে পায়ে দেখা দিত ঘা কিংবা চুলকানি রোগ। অথচ সেই বিষাক্ত পানি প্রাণ বাচতেঁ গায়ে মেখেছিলেন মসজিদের দগ্ধ মুসুল্লীরা।

মসজিদে বিস্ফোরণের পর থেকেই আলোচনায় আসে পশ্চিম তল্লা এলাকার যোগাযোগ ব্যবস্থা নিয়ে। সরু গলিতে প্রবেশে বাধা পাচ্ছিলো ফায়ার সার্ভিসের গাড়ি। সড়ক ধরে পাশাপাশি দুজন হাঁটতেই পানিতে পরে যাবার উপক্রম হচ্ছিলো গণমাধ্যম কর্মীরা। এসব নিয়ে চারদিকে সমালোচনার ঝড় উঠার পর নাসিক মেয়র বলেন, এলাকাটি যদিও আমাদের সীমানায় নয় তবুও এর সংস্কার করার সিদ্ধান্ত গ্রহন করা হয়েছে।

জানা যায়, বিস্ফোরণের পর পরেই মুসুল্লিদের অনেকেই বাঁচাও বাঁচাও বলে মসজিদের সামনে নোংরা পানিতে ঝাপিয়ে পরে। সেখানকার পানি গায়ে মেখে কমানোর চেষ্টা করে জ্বালা যন্ত্রণার। কিন্তু শেষ রক্ষা হয়নি ২৮ জন দগ্ধের। বুধবার পর্যন্ত প্রাপ্ত তথ্য মতে বার্ন ইউনিটে প্রাণ হারিয়েছেন ২৮ জন। বাকিদের অবস্থাও আশঙ্কাজনক। সাধারণ পোড়া যায়গায় পানি লাগালে উপশম হবার কথা। কিন্তু সেখানে ময়লা পানি লাগানোয় তা হিতে বিপরীত হয়েছে দগ্ধদের এমনটাই মনে করছেন সচেতন চিকিৎসকরা।

স্থানীয়রা জানান, সড়কের সামনে জলাবদ্ধ পানিতে মিশ্রিত ছিল সুয়্যারেজের লাইন, বৃষ্টির পানি ও ডাইংক এর অবৈধ লাইন। এসব কারনেই বছরের অধিকাংশ সময় পানির নিচে থাকতো পশ্চিম তল্লার সড়ক। এই পানিতে পা লাগলে পা চুলকাতো এবং অনেক সময় ঘা পাঁচড়া তৈরী হতো। এই পানি যেহেতু দগ্ধ মুসুল্লিরা গায়ে মেখেছে সুতরাং ইনফেকশন হওয়াই স্বাভাবিক।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে ডাঃ কামরুল ফুয়াদ বলেন, পানিতে যদি ডাইংকের কেমিক্যাল মিশ্রিত থাকে তাহলে ক্ষতি স্বাভাবিক ভাবেই বেশী হবে। বিশেষ করে এসিড মিশ্রিত পানি আহতদের ক্ষতস্থান আরও বেশী ক্ষতিগ্রস্থ করে তুলবে। যেহেতু কি ধরনের পানি ছিল তা আমরা জানিনা সুতরাং এ বিষয়ে নিশ্চিত করে কিছু বলা সম্ভব নয়।