আজ বৃহস্পতিবার, ১৮ই আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ৩রা অক্টোবর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

বন্দরের ভিলেন মুকুল

ভিলেন মুকুল


নিজস্ব প্রতিবেদক:
নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির সহ-সভাপতি ও বন্দর উপজেলার চেয়ারম্যান আতাউর রহমান মুকুল। পদবী অনুসারে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি করলেও কাজে কর্মে সর্ম্পূণ তার উল্টো। কিছুদিন এক পক্ষের কথা বললেও বেশী দিন তার বক্তব্যে স্থীর থাকতে পারেননা তিনি। ডিগবাজি দেয়াই তার মূল কাজ। যেখানে সুবিধা পান ঠিক সেখানেই দৌড়ান। মুকুল হলেন বন্দরের ভিলেন। স্বাভাবিকের চেয়ে অনেক লোভী একজন নেতা। হ্যা ঠিক এমনটাই মনে করেন নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট মনোনিত প্রার্থী এস এম আকরামের কর্মী সমর্থকরা।

তার কারণ অনুসারে আকরাম সমর্থকরা মনে করেন, হয়ে যাওয়া একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে মুকুল বিভিন্ন রুপ ধারণ করেছেন, খেয়েছেন পাল্টি। কখনোও মহাজোটের প্রার্থী ও বর্তমান সংসদ সদস্য একেএম সেলিম ওসমানের পক্ষ নিয়ে কথা বলেছেন এবং মহাজোটের বিভিন্ন অনুষ্ঠানে তিনি অংশগ্রহণ করেছেন। আবার কখনোও তিনি ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থী এস এম আকরামের পক্ষে কাজ করার অঙ্গীকার করেছেন। তার সভা ও অনুষ্ঠানে উপস্থিত থেকেছেন। মূলত তার লক্ষ্যেই ছিলো যেখান থেকে সুবিধা পাবে সেখানেই থাকবেন। এগুলো কোন নেতার আদর্শ হতে পারেনা। তাছাড়া লোভী মানুষেরা কোনদিন নেতা হতে পারনা।

মুকুল ধানের শীষের প্রার্থী আকরামের পক্ষে কাজ করার জন্য প্রস্ততি সভাও করেছিলেন। এবং সেই সভায় বলেছিলেন তিনি আকরামের হয়েই কাজ করবেন। ধানের শীষের পক্ষেই থাকবেন। এর পর আবার লাঙলের প্রার্থী সেলিম ওসমানের বিভিন্ন সভা সমাবেশে সক্রিয় ভূমিকা ও সেখানে উপস্থিত ছিলেন মুকুল। নির্বাচনের আগে এক সভায় মুকুলের নেতৃত্বে বেশ কয়েকজন কাউন্সিলর সহ বিএনপির ১ হাজার নেতাকর্মী নিয়ে লাঙলের পক্ষে কাজ করার অঙ্গিকার ব্যক্ত করেন। সেই সভায় উপস্থিত ছিলেন সাংসদ সেলিম ওসমান। সেখানে তিনি সেলিম ওসমনকে লক্ষ্য করে বলেন, ভবিষ্যতে যেন পুলিশি হয়রানির ব্যাপার ও তার নামে মামলা গুলোর বিষয়ে একটু দেখেন।
সেলিম ওসমানের বিভিন্ন সভায় মুকুল বলেন, জালাল হাজীর আমলে বিএনপির নেতৃত্বে ছিলেন এড. আবুল কালাম। কি করেননি তিনি দলের স্বার্থে অনেক কিছুই করেছেন তিনি। কিন্তু তাকে রেখে এমন একজনকে মনোনয়ন দেয়া হয়েছে যাতে করে প্রতিয়মান বিএনপিকে ধ্বংসের পথে নেয়া হচ্ছে। আর ঠিক সেজন্যই মুকুল সেলিম ওসমানের পক্ষে কাজ করার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।

নির্বাচনের দিন মুকুলের নামে কেন্দ্র দখল করে সেলিম ওসমানের পক্ষে লাঙলের ভোট ডাকাতির অভিযোগ করেন এস এম আকরাম। সেসময় হয়ে যাওয়া নির্বাচন গ্রহণযোগ্য, অংশগ্রহণমুলক, নিরেপেক্ষ কিংবা সুষ্ঠ এমন কোন সংজ্ঞাতেই ফেলা যাবেনা বলে মন্তব্যে করেন আকরাম। যেই পোলিং এজেন্টদের কাছে অরজিনাল ভোটার আইডি কার্ড ছিল কিন্তু ফটোকপি না থাকতে বের করে দেয়া হয়েছে। আবার যারা ফটোকপি নিয়ে গেছে তাদের অরজিনাল কার্ড না থাকার কারনে বের করে দেয়া হয়েছে। আওয়ামী লীগের নেতা ও বিএনপির মুকুল একত্রে হয়ে এজেন্ট ও ভোটারদের বের করে দিয়েছেন। সেই সাথে ভোটারদের তারা বলেছে আপনাদের ভোট হয়ে গেছে চলে যান।
সেসময় আকরাম আরও অভিযোগ করে বলেন, ভোটারদের আঙুলে কালি লাগিয়ে তাদের ভোট হয়ে গেছে বলে বের করে দিয়েছেন তারা। আমরা কোন পোলিং এজেন্ট ছিলোনা কেন্দ্রে। তাদেরকে ভয়-ভীতি দেখানো হয়েছে। আবার কিছু কিছু ক্ষেত্রে জোর করে লাঙলে ভোট দেয়ার জন্য চাপ প্রয়োগ করা হয়েছে।

এছাড়াও নির্বাচনের আগে সেলিম ওসমানের বিভিন্ন সভায় উপস্থিত থেকে তার পক্ষে কাজ করার কথা বলেছেন বিএনপি নেতা মুকুল। এবং তার বেশীরভাগ সভায় উপস্থিত থাকতেন তিনি। যার কারনে বিএনপির অন্যান্য নেতাদের ব্যাপক সমালোচনা মধ্যে পড়েন তিনি। এমনকি কিছু দিন আগে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানকে তার সমানে গালি দেয়া হলেও নিরব ভূমিকায় ছিলেন আতাউর রহমান মুকুল। সবমিলিয়ে বিএনপির সাইনবোর্ড ধারী ও আওয়ামী লীগের পক্ষে কাজ করা নেতা আতাউর রহমান মুকুলকে পল্টিবাজ ও লোভী নেতা বলে মনে করেন বিএনপির বিভিন্ন অঙ্গ সংগঠনের নেতা-কর্মীরা।