আজ রবিবার, ১৫ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২৮শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

পোকামাকড় না থাকলে কি হতো

পৃথিবীতে মানুষ না থাকলে কি হবে? এর উত্তর- পৃথিবীর কিচ্ছু হবে না। পৃথিবীর প্রাণী বৈচিত্র যেমন আছে তেমনই থাকবে। কিন্তু আমরা যাদের ‘উপদ্রব’ বলে মনে করি সেই পোকামাকড় না থাকলে কি হত সেই প্রশ্নের উত্তর দিয়েছেন প্রাণী গবেষকরা। তারা বলেছেন, পোকামাকড় না থাকলে সৃষ্টির ভারসাম্য নষ্ট হয়ে যেত। ফলে ধীরে ধীরে বাতিল গ্রহে পরিণত হয়ে যেত পৃথিবী।

পোকামাকড়দের প্রয়োজনীয়তা নিয়ে বই লিখেছেন প্রাণী গবেষক ডেভিড ম্যাকনিল। তিনি বলেছেন, আমাদের প্রতি মানুষের বিপরীতে প্রায় ১৪০ কোটি পোকামাকড় আছে পৃথিবীতে। এরা আমাদের প্রকৃতি পরিচ্ছন্ন রাখার পাশাপাশি বিশ্ব অর্থনীতির পেছনে বিরাট ভূমিকা পালন করে। পোকামাকড় না থাকলে পৃথিবী অসংখ্য রোগজীবানুতে ভরে যেত। ফলে মানুষের পক্ষে বেচে থাকা কঠিন তো হতোই, অন্যান্য প্রাণীদেরও অস্তিত্ব হুমকির মুখে পড়তো।

ম্যাকনিল লিখেছেন, এই ধরনীকে বাঁচিয়ে রাখার পেছনে পোকামাকড়দের অবদান খালি চোখে দেখা যায় না। এরা কাজ করে যায় নিভৃতে। তার মতে কেবল মৌমাছিই বিশ্ব অর্থনীতিতে বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার অবদান রাখে। ফসলের ক্ষেতে যদি পোকামাকড় হানা না দিত তবে পরাগায়ন অনেক কম হতো। কারণ বেশিরভাগ পরাগায়ন হয়ে থাকে পোকামাকড়ের মাধ্যমে। তাই  গাছে গাছে ফল ধরে। বায়ু কিংবা পানির মাধ্যমে যে পরিমাণ পরাগায়ন হয় তা পতঙ্গ পরাগায়নের তুলনায় খুব সামান্য। তাই এরা না থাকলে এখন যে ফল উত্পাদন হয় তার শত ভাগের একভাগও হতো না। ম্যাকনিলের মতে, শুধু যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতিতে পতঙ্গরা ৫৭ বিলিয়ন ডলার অবদান রাখে।

অন্যদিকে, পৃথিবীর ৩ হাজারের বেশি নৃতাত্ত্বিক গোষ্টি ২ হাজার ৮৬ প্রজাতির পোকামাকড় খেয়ে থাকে। এছাড়া আরো অনেক দেশে সাধারণ মানুষও বাড়িতে কিংবা হোটেলে পোকামাকড় দিয়ে বানানো খাবার খেয়ে থাকে। চীন, জাপানসহ এশিয়ার অনেকে দেশে পোকামাকড় দিয়ে বানানো খাবার খুব জনপ্রিয়। আর মেক্সিকোতে অনেক প্রকারের ফড়িং ভাজা প্যাকেট করে বিক্রি হয়। আফ্রিকাতে শুয়োপোকাও ব্যাপক জনপ্রিয়। জাপানের টোকিও এবং শিনজুকুতে তিনটি রেস্টুরেন্ট আছে যেখানে অন্য কোনো খাবার পাওয়া যায় না। কেবলমাত্র পোকামাকড়ের রেসিপি চলে সেখানে। তাই পোকামাকড় না থাকলে এই রেস্টুরেন্টগুলোও পথে বসতো! লেখক ম্যাকনিল দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, আধুনিক যুগে অনেক কিটনাশকের কারণে অনেক উপকারী পতঙ্গ মারা যাচ্ছে। অনেক প্রজাতির পতঙ্গ বিলুপ্তির পথে। তিনি সাবধান করে দিয়ে বলেছেন, পতঙ্গ বিলুপ্ত হলে মানুষের পক্ষেও বেঁচে থাকা সম্ভব হবে না। -ন্যাশনাল জিওগ্রাফি

স্পন্সরেড আর্টিকেলঃ