আজ শনিবার, ১৪ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২৭শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

পুলিশ চেকপোস্ট বন্ধ!

সাবিত আল হাসান:

ঢাকা নারায়ণগঞ্জ লিংক রোডে ২টি থানার মোট ৪টি চেকপোস্ট রয়েছে। এই সড়ক ধরে নারায়ণগঞ্জে মাদক ও অপরাধ চক্রের লাগাম নিয়ন্ত্রণে আনার জন্য বসানো হয়েছিলো চেকপোস্ট। কিন্তু পূর্ব ঘোষণা ছাড়াই হটাৎ করেই বন্ধ রয়েছে চেকপোস্টের নিরাপত্তা কার্যক্রম। এনিয়ে লিংক রোড সংশ্লিষ্ট থানা গুলো থেকে পাওয়া যাচ্ছে ভিন্ন ভিন্ন কারন। তবে জেলা পুলিশের সর্বোচ্চ কর্মকর্তা বলছেন করোনার শুরু থেকেই চেকপোস্ট বন্ধ রাখা হয়েছে।

সম্প্রতি ঢাকা নারায়ণগঞ্জ লিংক রোডে লক্ষ করা যায় পুলিশ চেকপোস্টগুলো বন্ধ হয়ে আছে। অথচ ঈদের আগেও এই সড়কে পুলিশের উপস্থিতি ছিল নিয়মিত। বিশেষ করে রাত ১০ টার পরেই বিনা প্রয়োজনে কাউকে বের হতে দেখলে জিজ্ঞাসাবাদের মুখোমুখি হতে হতো অনেককেই। কিন্তু ঈদের পরেই লিংকরোডের চেকপোস্টগুলো বন্ধ রাখতে দেখা যায়। প্রথমে এটি স্বাভাবিক ২/১ দিনের ব্যাপার ভাবা হলেও বেশকিছুদিন বন্ধ রাখায় অনেকেরই মনে প্রশ্ন জন্মে। যেসকল মাদক ব্যবসায়ী বা অপরাধ চক্রের সদস্যরা এই পথ অতিক্রম করতে ভীত সন্ত্রস্থ থাকতো তারাও যেন নির্বিঘ্নে চলাচল করার সাহস পেয়ে গেলো।

সরজমিনে রাতের লিংক রোড ঘুরে দেখা যায়, শহরের প্রবেশ মুখ সাইনবোর্ড, জালকুড়ির চেকপোস্টে নেই কোন পুলিশ সদস্য। একই ভাবে শহর থেকে বাহির হবার পথে শিবু মার্কেট ও ফতুল্লা স্টেডিয়াম চেকপোস্টের দরজায় ঝুলছে তালা। দিনে ও রাতে দেখা যায় একই চিত্র। আশেপাশে থাকা বিভিন্ন অটোচালক ও দোকানিরা জানান, বেশ কিছুদিন ধরেই চেকপোস্টে পুলিশের আনাগোনা দেখা যায়না।

মূলত লিংক রোডের সাইনবোর্ড, স্টেডিয়াম ও শিবু মার্কেট চেকপোস্ট ফতুল্লা থানার আওতায় নিয়ন্ত্রিত। অপর দিকে জালকুড়ি চেকপোস্টটি সিদ্ধিরগঞ্জ থানা দ্বারা নিয়ন্ত্রণ করা হয়।

চেকপোস্ট থেকে পুলিশ সদস্যদের সরিয়ে নেয়ার বিষয়ে কেউ কেউ বলছেন, কক্সবাজারে পুলিশ চেকপোস্টে মেজর সিনহা নিহত হবার ঘটনার পর থেকেই পুলিশ চেকপোস্ট কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। চেকপোস্টে অপরাধী শনাক্তের পাশাপাশি সাধারন মানুষকে হেনস্থারও অভিযোগ উঠে প্রায়ই। সেই দিক বিবেচনায় পুলিশকে নতুন করে বিতর্কের জালে না ফেলতেই অভ্যন্তরীন এমন সিদ্ধান্ত নেয়া হতে পারে।

এ ব্যাপারে সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা কামরুল ফারুক বলেন, মূলত চেকপোস্ট কার্যক্রম সারাদেশেই বন্ধ রাখা হয়েছে। পুলিশ সদস্য সংখ্যা কম থাকা, করোনাকালীন সময়ে সদস্যদের নিরাপত্তা, ঈদ পূজায় ও মোবাইল টিম পরিচালনার কারনে আপাতত চেকপোস্ট বন্ধ রাখা হয়েছে। কিছুদিন পূর্বেই এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।

একই বিষয়ে ফতুল্লা মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আসলাম হোসেন জানান, অপরাধীদের ধরতে বিভিন্ন সময় কিছু কৌশল অবলম্বন করতে হয়। সেই ধারাবাহিকতায় চেকপোস্টের আদলে মোবাইল টিম পরিচালনা করছি। তবে আমাদের ফোর্সের কোন সংকট নেই।

সবশেষ চেকপোস্ট বন্ধ থাকার কারন জানতে চাওয়া হয় জেলা পুলিশ সুপার জায়েদুল আলমের নিকট। তিনি প্রতিবেদককে জানান, শুধু নারায়ণগঞ্জ নয় সারাদেশেই চেকপোস্ট কার্যক্রম মোবাইল টিমের মাধ্যমে পরিচালনার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। করোনার কারনে পুলিশ সদস্যদের নিরাপত্তার বিষয়টি চিন্তা করে মোবাইল টিম পরিচালনা করছে পুলিশ। তবে কবে নাগাদ এই নির্দেশনা দেয়া হয়েছে জানতে চাইলে তিনি জানান, করোনা শুরু হবার পর থেকেই এই নির্দেশনা প্রদান করা হয়েছে।

স্পন্সরেড আর্টিকেলঃ