সংবাদচর্চা রিপোর্ট: কাঞ্চন ব্রীজের পাশে ছোট্ট একটি ফ্লেক্সিলোডের ব্যবসা করেন নাজমুল ইসলাম। বাবা ফটিক মিয়ার নামে নিয়েছিলেন বিকাশ এজেন্ট সিম। বিকাশে লেনদেন করে কিছুটা লাভ হত তার। অনার্স পাশ করে নাজমুল কোন চাকুরি না পেয়ে পেশা হিসেবে বেছে নিয়েছেন ছোট্ট এ ব্যবসা। যা আয় হয় তা দিয়ে পরিবার নিয়ে দিন চলে যায় কোনরকম। একদিন এক ব্যক্তি তার বাড়িতে গরু কেনার জন্য বেশ কিছু টাকা বিকাশে পাঠাতে আসেন। কিন্তু নাজমুল যে বিকাশ নম্বরে টাকা পাঠাবে তার একটি ডিজিট ভুল করেন। ফলাফল টাকা চলে যায় অজ্ঞাত ব্যক্তির বিকাশ একাউন্টে। সেই নম্বরে ফোন করে অনেক আঁকুতি করে সে। মন গলেনি অজ্ঞাত ব্যক্তির। তদুপরি বিভিন্ন ধরনের কটু কথা শুনিয়ে দেন নাজমুলকে। এরপর অজ্ঞাত ব্যক্তিটি তার ফোন বন্ধ করে দেয়। নাজমুল চোখে অন্ধকার দেখে। এতগুলো টাকা তার পক্ষে ফেরত দেয়া প্রায় অসম্ভব। বিভিন্ন ব্যক্তির নিকট থেকে ধার-দেনা করে সেবা গ্রহীতার টাকা ফেরৎ প্রদান করলেও নাজমুল অনিশ্চিত ছিলেন এ টাকা তিনি ফেরৎ পাবেন কিনা। তবুও দ্রুত চলে যান রূপগঞ্জ থানায়। ডিউটি অফিসারের পরামর্শে করেন জিডি। তদন্তভার দেয়া হয় এসআই আজহার আলীকে। তিনি বিষয়টি দ্রুত অবহিত করেন নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশের আইসিটি শাখাকে। আইসিটি শাখার ইনচার্জ এসআই হাফিজুর রহমান সংগে সংগে বিকাশ কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করে সংশ্লিষ্ট বিকাশ একাউন্টটির লেনদেন বন্ধ করে দেন। যার ফলে ভুলে চলে যাওয়া টাকা তুলে নিতে পারেনি অজ্ঞাত ব্যক্তি। এরপর শুরু হয় বিকাশ কর্তৃপক্ষের সাথে পত্রালাপ। বিকাশ অফিস থেকে বিষয়টি সার্বক্ষণিক মনিটরিং করেন সিনিয়র অফিসার মোঃ কামরুল ইসলাম।বিকাশ কর্তৃপক্ষ বিষয়টি যথেষ্ট গুরুত্ব ও আন্তরিকতার সাথে বাংলাদেশ ব্যাংকের নীতিমালা অনুসরণ করে তদন্ত করেন। তদন্তে বিষয়টির সত্যতা পাওয়ায় ব্যবসায়ী নাজমুল ইসলামের একাউন্টে আজ সেই টাকা ফেরৎ প্রদান করেন বিকাশ কর্তৃপক্ষ। নাজমুল ইসলাম তার অভিব্যক্তি প্রকাশ করে জানান, তিনি কখনও আশা করেননি এ টাকা তিনি ফেরৎ পাবেন। পুলিশ ও বিকাশ কর্তৃপক্ষের সাহায্য পেয়ে তিনি যারপর নেই খুশি। তিনি ধন্যবাদ জানান বিকাশ কর্তৃপক্ষসহ তদন্ত সংশ্লিষ্ট সকলকে। বুধবার ( ১৮ নভেম্বর) নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশ কর্মকর্তা হাফিজুর রহমান এসব তথ্য জানান।