আজ শনিবার, ৭ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২০শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

নিজস্ব সম্পদেই বাংলাদেশ আত্মনির্ভরশীল হবে: মেয়র আ.জ.ম. নাছির উদ্দিন

নিজস্ব সম্পদেই বাংলাদেশ

নিজস্ব সম্পদেই বাংলাদেশ

ইমরান সোহেল, চট্টগ্রাম :
চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ও নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আ.জ.ম নাছির উদ্দীন স্বাধীনতার চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে বাংলাদেশের চলমান অগ্রগতির যেন থেমে না যায় সে বিষয়ে জনগণকে সচেতন থাকার আহ্বান জানিয়ে বলেছেন, বাংলাদেশ

একদিন জাতির পিতার স্বপ্নের ক্ষুধা-দারিদ্রমুক্ত দেশ হিসেবেই গড়ে উঠবে এবং বিশ্বের মাথা উঁচু করে চলবে। নিজস্ব সম্পদ দিয়েই আত্মনির্ভরশীল হবে। মুক্তিযুদ্ধে বিজয়ী জাতি হিসেবে কারো কাছে হাত পেতে নয়, বাঙালি জাতি যতটুকু সম্পদ তা দিয়েই আমরা এগিয়ে যাচ্ছি এবং বঙ্গবন্ধুর কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে এগিয়ে যাব। দেশকে আমরা আরো সম্মানজনক অবস্থানে নিয়ে যাব ইনশাল্লাহ।

আজ ২৯ মার্চ বিকেলে নগরীর আন্দরকিল্লাস্থ নগর ভবন চত্বরে স্বাধীনতা উৎসব উদযাপন পরিষদ চট্টগ্রাম আয়োজিত তিনদিনব্যাপী স্বাধীনতা উৎসবের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির ভাষণে তিনি একথা বলেন। সিটি মেয়র বলেন, স্বল্পোন্নত দেশের তালিকা থেকে বেরিয়ে উন্নয়নশীল দেশের তালিকায় আশা বাংলাদেশ বিশ্বের বুকে ইতিমধ্যে সম্মানজনক অবস্থানে এসেছে। বাংলাদেশের এই অগ্রযাত্রাকে অব্যাহত রাখতে হবে।

২০২১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে মধ্যম আয়ের দেশ এবং ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত দেশ হিসেবে গড়ে তোলার পূর্ণ ব্যক্ত করে সিটি মেয়র আরো বলেন, ৩০ লক্ষ শহীদের রক্তের বিনিময়ে স্বাধীনতা অর্জন করেছি। এই বাংলাদেশকে আমারা উন্নত-সমৃদ্ধ দেশ হিসেবে গড়ে তুলতে চাই। প্রত্যেকটি মানুষেরই রাষ্ট্রের কাছ থেকে মৌলিক চাহিদাগুলো পূরণের অধিকার রয়েছে। আর জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আমাদে যে সংবিধান দিয়ে গেছে সেখানেও এই মৌলিক অধিকারগুলো নিশ্চিত করার কথা বলে গেছেন।

কাজেই আমাদের কর্তব্য আমাদের এই মহান স্বাধীনতা সংগ্রামে যারা শহীদ হয়েছেন এবং সকল মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মান করা। তিনদিনব্যাপী স্বাধীনতা উৎসবের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উদ্বোধকের ভাষণে চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি, বীর মুক্তিযোদ্ধা মাহতাব উদ্দিন চৌধুরী বলেন, উন্নয়ন এবং শান্তির জন্য বঙ্গবন্ধু কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনার কোন বিকল্প নেই।

সুখ-সমৃদ্ধি, শান্তি ও উন্নয়নের জন্য আগামী নির্বাচনে নৌকা প্রতীকে ভোট দিয়ে শেখ হাসিনার বিজয় নিশ্চিত করতে হবে। সিঙ্গাপুর, মালেয়েশিয়ার নাম উল্লেখ করে মাহতাব উদ্দিন চৌধুরী আরো বলেন, সে সব দেশের মত বাংলাদেশকে আরো এগিয়ে নিতে শেখ হাসিনাকে সময় দিতে হবে। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশ আলোকিত হয়েছে। নিম্ন আয়ের দেশ থেকে বেরিয়ে বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশে উন্নীত হয়েছে। মর্যাদা পেয়েছে বাঙালি জাতি। সভাপতির ভাষণে স্বাধীনতা উৎসব উদযাপন পরিষদ এর চেয়ারম্যান ও নগর আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা নঈম উদ্দিন চৌধুরী ৭১‘র গণহত্যাকারী ও তাদের দোসর-মদদদাতাদের প্রতি চরম ঘৃণা প্রকাশ করে বলেছেন, ৭১’র গণহত্যাকারী যুদ্ধাপরাীদের যারা বিএনপি-জামাত) মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রী-উপদেষ্টা বানিয়ে পুরস্কৃত করেছে মদদ দিয়েছে তারাও সমান অপরাধী। উভয় সমান দোষের দোষী।

তিনি আরো বলেন, যুদ্ধাপরাধীদের মত তাদেরও সমানভাবে বিচার হওয়া উচিত। আর পাকি প্রেমে যারা হাবুডুবু খাচ্ছে, ৭১’র গণহত্যাকারীর মদদদাতাদেরও উপযুক্ত জবাব বাংলার মানুষকে দিতে হবে। তাদেরকেও শাস্তি দিতে হবে। তাদের পাকি প্রেম ভুলিয়ে দিতে হবে। বাঙালি যদি এটা না পারে তাহলে নিজেদের অস্থিত্ব থাকবে না। স্বাধীনতা উৎসব উদযাপন পরিষদ এর প্রধান সমন্বয়কারী খোরশেদ আলমের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত তিনদিনব্যাপী স্বাধীনতা উৎসবের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের আলোচনা সভায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন স্বাধীনতা উৎসব উদযাপন পরিষদের মহাসচিব লায়ন মোহাম্মদ ইলিয়াছ, শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন যুগ্ম মহাসচিব সুমন দেবনাথ, বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন নগর আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক নোমান আল মাহমুদ, আওয়ামীলীগ নেতা মোহাম্মদ ইছা।

উপস্থিত ছিলেন জাতীয় শ্রমীকলীগ কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম সম্পাদক বীরমুক্তিযোদ্ধা আলহাজ্ব সফর আলী, বীর মুক্তিযাদ্ধা আবু সাঈদ সর্দার, নগর আওয়ামীলীগের উপদেষ্টা মন্ডলীর সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা শেখ মাহমুদ ইসহাক, কার্য নির্বাহী সদস্য হাজী বেলাল আহমেদ, ফিরিঙ্গী বাজার ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক রফিকুল হোসেন বাচ্চু, ২৪ নং উত্তর আগ্রাবাদ ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের সভাপতি সৈয়দ জাকারিয়া জগু, কেন্দ্রীয় যুবলীগের সাবেক সদস্য আবদুল মান্নান ফেরদৌস, চসিক কাউন্সিলর হাসান মুরাদ বিপ্লব, সাংস্কৃতিক সংগঠক শওকত আলী সেলিম, মহিউদ্দিন মঈনুল আলম, এস এম মামুনুর রশিদ, মুজিবুর রহমান নারী নেত্রী সৈয়দা শাহানারা বেগম, রুমকি সেন গুপ্ত, রাধা রানী দেবী প্রমূখ। অনুষ্ঠানের শুরুতেই ৫২’র ভাষা আন্দোলন, ১৯৭১ এর মহান মুক্তিযুদ্ধে ও ৭৫‘র ১৫ আগস্ট কালোরাত্রিতে এবং ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা নিহত সকল শহীদদের স্মরণেএক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। অনুষ্ঠানে বেলুন, পায়রা ও জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশনের মাধ্যমে তিনদিনব্যাপী স্বাধীনতা উৎসবের উদ্বোধন করা হয়।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উদ্বোধনী সঙ্গীত পরিবেশন করেন সৃজামি সাংস্কৃতিক অঙ্গন। দলীয় আবৃত্তি পরিবেশন করেন তারুণ্যের উচ্ছাস আবৃত্তি দল। দলীয় নৃত্য পরিবেশন করেন নৃত্যম একাডেমী। বিশেষ সঙ্গীত অনুষ্ঠন পরিবেশন করেন বেতার ও টেলিভিশন এবং নতুন প্রজন্মের শিল্পীবৃন্দ। আজ ৩০ মার্চ সন্ধ্যা ৬ টায় স্বাধীনতার মঞ্চে স্মৃতি চারন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন কক্সবাজার বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ডা. আবুল কাশেম, মূখ্য আলোচক হিসেবে উপস্থিত থাকবেন বরেণ্য বুদ্ধিজীবি কবি অরুন দাশ গুপ্ত।

স্পন্সরেড আর্টিকেলঃ