আজ সোমবার, ৩০শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৩ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

না.গঞ্জে মহাজোট প্রার্থীদের জয়ের পাল্লা ভারী

জয়ের পাল্লা ভারী

সংবাদচর্চা রিপোর্ট: সারা দেশের ন্যায় নারায়ণগঞ্জে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ভোট গ্রহণ আজ রবিবার। তফসিল ঘোষণার পর থেকে নারায়ণগঞ্জের ৫ টি আসনের মাঠ দখল করে রেখেছে আওয়ামীলীগ নেতৃত্বাধীন মহাজোটের প্রার্থীরা। নারায়ণগঞ্জের ৫ টি আসনে মহাজোট যাদের মনোনয়ন দিয়েছে তারা সবাই বেশ জনপ্রিয়। তাদের উন্নয়ন মূলক কর্মকান্ডে বেশ খুশি নারায়ণগঞ্জ বাসী।

নারায়ণগঞ্জ ১ ( রূপগঞ্জ ) আসনে আওয়ালীগ সমর্থিত প্রার্থী গোলাম দস্তগীর গাজীর গাজী রূপগঞ্জে সর্বকালের সেরা উন্নয়ন করেছেন। রূপগঞ্জে আওয়ামীলীগের প্রার্থীদের সাথে কোন দ্বন্দ্ব নেই। গোলাম দস্তগীর গাজীর রয়েছে বিশাল ভোট ব্যাংক। বিএনপির সমর্থিত প্রার্থী কাজী মনির গত নির্বাচনে প্রায় ৫০ হাজার ভোটের ব্যবধানে গোলাম দস্তগীর গাজীর কাছে হেরেছে। রূপগঞ্জে বিএনপির মধ্যে কোন্দল চরমে রয়েছে। বিএনপির একটি অংশ কাজী মনিরুজ্জামান কে বর্জন করে গোলাম দস্তগীর গাজীর পক্ষে কাজ করছে।


নারায়ণগঞ্জ-২ (আড়াইহাজার) আসনে ভোটের লড়াইয়ে ক্ষমতাসীন আওয়ামীলীগ দলীয় বর্তমান সাংসদ নজরুল ইসলাম বাবু মুখোমুখি হতে যাচ্ছেন কেন্দ্রীয় বিএনপির সহ আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক নজরুল ইসলাম আজাদ। এই আসনে উভয় পক্ষের মধ্যে হামলা, পাল্টা হামলা ঘটনা ঘটছে। তবে এ পর্যন্ত ধানের শীষ প্রতীকের প্রার্থী নজরুল ইসলাম আজাদের গাড়ি বহরে সবচেয়ে বেশি হামলা হয়েছে। এতে করে এখন পর্যন্ত সমীকরণে হিসেবে মহাজোট প্রার্থী এগিয়ে আছে।

নারায়ণগঞ্জ-৩ (সোনারগাঁও) আসনে ভোটের লড়াইয়ে ক্ষমতাসীন দলের শরীক দল জাতীয় পার্টির বর্তমান সাংসদ লিয়াকত হোসেন খোকার মুখোমুখি হতে যাচ্ছেন জেলা বিএনপির সহ সভাপতি আজহারুল ইসলাম মান্নান। আওয়ামীলীগ দলীয় সাবেক সাংসদ কায়সার হাসনাত বিদ্রোহী প্রার্থী হয়েছিলেন। যেকারণ এই আসনে ক্ষমতাসীন দলের পরাজয়ের সম্ভাবনা দেখা দিয়েছিল। কিন্তু শেষ সময়ে এসে অনেকটা চমক দেখা গেছে এই আসনে। এই আসনে জাপার প্রার্থীর পথে একমাত্র বাধা দিয়ে আওযামীলীগ দলীয় স্বতন্ত্র প্রার্থী কায়সার হাসনাত ছিল। কারণ মহাজোটের ভোটে স্বতন্ত্র প্রাথী কায়সারের ভোটারদের ভোট ভাগ হবে। তাছাড়া এই আসনের বিগত দিনের ইতিহাসে ভোট সমীকরণে তলানিতে রয়েছে জাতীয় পার্টি। যেকারণে জাপা প্রার্থী খোকার পরাজয়ের সম্ভাবনা দেখা দেয়। কিন্তু এরই মধ্যে গত ২৮ ডিসেম্বর সন্ধ্যা ৮ টায় এক সংবাদ সম্মেলনে স্বতন্ত্র প্রার্থী কায়সার হাসনাত জানান, ‘তিনি নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ালেন। অনেকটা চাপের মুখে তিনি সরে দাঁড়াচ্ছেন। এর আগে সন্ধ্যা পৌনে ৭ টায় আইনশৃঙ্খলার যৌথ বাহিনী কায়সারের বাড়িতে অভিযান চালায়। এসময় কায়সারের সমর্থন নেতাকর্মীরা তাদের বাধা দিয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কয়েক রাউন্ড গুলি ছুড়ে। এসময় ১৫ জনকে আটক করে। পরে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর সমঝোতায় কায়সার আটকৃত ১৫ জনকে ছাড়িয়ে নেয়।’
এতে করে এই আসনটিতে এখন মহাজোটের ভোট ভাগ হওয়ার কোন সুযোগ নেই। তাই মহাজোটের প্রার্থী খোকার সামনে জয়ের জন্য একমাত্র বাধা হিসেবে ধানের শীষ প্রতীকের প্রার্থী আজহারুল ইসলাম মান্নান রয়েছে। অথচ এই আসনে বিএনপি দলীয় হেভিওয়েট প্রার্থী মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এটিএম কামালকে বাদ দিয়ে মান্নানকে প্রার্থী করা হয়েছে। আর মান্নান প্রার্থী হওয়ার পরে ইতোমধ্যে তার নেতাকর্মীদের উপর হামলা, মামলার ঘটনা ঘটেছে। তবে এর মধ্যে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর এক সভায় পুলিশ কর্মকর্তাদের সামনে প্রকাশ্যে প্রার্থী মান্নানের উপর হামলা চালিয়েছে ছাত্রলীগ নেতা। যেকারণে এই আসনটিতে মহাজোটের জয়ের সমীকরণ একেবারে সহজ হয়ে উঠছে।

নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনে ২০ দলের শরীক দল জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের জেলা সভাপতি মুফতি মনির হোসাইন কাসেমীকে আওয়ামীলীগের প্রভাবশালী প্রার্থী ও সাংসদ শামীম ওসমানের প্রতিদ্বন্দ্বী করে ভোটের লড়াইয়ে মাঠে নামানো হয়েছে। অথচ এই কাসেমীকে বিএনপি দলের তৃণমূলের কেউ চিনেনা। এমন প্রার্থী কিভাবে শামীম ওসমানের মত হেভিওয়েট প্রার্থীর বিপক্ষে লড়বে এমন প্রশ্ন সকলের। যেকারণে নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনে মহাজোটের প্রার্থী শামীম ওসমানের জয় সুনিশ্চিত প্রায়।

নারায়ণগঞ্জ-৫ (শহর ও বন্দর) আসনে ভোটের লাড়াইয়ে ক্ষমতাসীন আওয়ামীলীগ দলের শরীক দল জাতীয় পার্টির বর্তমান সাংসদ সেলিম ওসমানে মুখোমুখি হতে যাচ্ছেন বিএনপি দলটির শরীক দল নাগরিক ঐক্যের উপদেষ্টা এস এম আকরাম। এই আসনটিতে প্রথম থেকেই আকরামের লোকজনেরা হামলা, মামলার শিকার হয়েও মাটি কামড়ে নির্বাচনী মাঠে পড়ে ছিল। কোনভাবেই নির্বাচনী মাঠ ছাড়েনি। কিন্তু গত কয়েকদিনের ব্যবধানের আকরামের লোকজনদের একের পর এক মামলার আসামী করে গ্রেফতার করার ফলে তিনি অনেকটা নেতাকর্মী শূন্য হয়ে পড়ছে। যেকারণে এই নেতাও বেশ কোনঠাসা হয়ে পড়েছে। আর তাই এই আসনে মহাজোটের প্রার্থী সেলিম ওসামনের বিজয়ের সমীকরণে আলোর উজ্জ্বলতা ক্রমশ বাড়ছে।

নারায়ণগঞ্জ জেলার ৫টি আসনে মহাজোটের প্রার্থীরা প্রায় সবকটি আসনে জয়ের পথে এগোচ্ছে।  মামলা হামলায় বিএনপির অধিকাংশ কর্মী সমর্থক আত্নগোপনে রয়েছে।

স্পন্সরেড আর্টিকেলঃ