আজ শনিবার, ৪ঠা জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৮ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

নারায়ণগঞ্জে রাজনীতি নেই আছে বিরোধ!

সংবাদচর্চা রিপোর্ট:

নারায়ণগঞ্জে রাজনীতি নেই  আছে নেতাকর্মীদের মাঝে বিরোধ। নিজেদের জাহের করা, প্রভাবশালী একাধিক পরিবারের আধিপত্য বিস্তারের লড়াই। ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ বা ক্ষমতাহীন দল বিএনপি, কোন দলের নিজেদের মধ্যে রাজনৈতিক মনোভাব নিয়ে এগিয়ে যেতে পারছেন না শুধুমাত্র নিজেদের বিরোধের কারনেই বলে অভিযোগ করেছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।

ঘটনা সূত্রে প্রকাশ, প্র্যাচ্যের ডান্ডিখ্যাত নারায়ণগঞ্জ রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণে বারংবার আলোচনার শীর্ষে থাকে। নারায়ণগঞ্জের প্রভাবশালী নেতারা বারংবার সুন্দর, পরিচ্ছন্ন নারায়ণগঞ্জ গড়ার কথা বললেও তা করতে ব্যর্থ হচ্ছেন কেনো তাই নিয়ে জনমনে প্রশ্ন।

ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ

বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কাছে নারায়ণগঞ্জ গুরুত্বপূর্ন একটি জেলা। যেখানে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ প্রতিষ্ঠা হয়েছে। সর্বপরি, বাংলাদেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে নারায়ণগঞ্জ একটি উজ্জ্বল নক্ষত্রের ন্যায়। কিন্তু ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ হবার পরও নেতাদের বিরোধের কারনে বারংবার আলোচনায় আসছে নারায়ণগঞ্জ। জানা যায়, দুই মেরুর দ্বন্দ্ব বহুদিনের। সেই দ্বন্দ্ব প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধারাবাহিক ভাবে চলে আসছে। উত্তর মেরুর প্রভাবশালী শামীম ওসমান, দক্ষিন মেরুর প্রভাবশালী সেলিনা হায়াৎ আইভীর দ্বন্দ্বের কারনেই নেতারা রাজনৈতিক অঙ্গন থেকে বিমুখ রয়েছেন। নেতাদের থেকে রাজনীতি শেখার পরিবর্তে শিখেছেন দ্বন্দ্ব। কখনও কখনও সেই দ্বন্দ্ব বাকযুদ্ধ থেকে সংঘর্ষেও রূপ নিয়েছে।

জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগের দুই সভাপতি প্রবীন রাজনীতিবিদ নিজেদের দ্বন্দ্বের কারণে কর্মীদের অধিকার থেকে বঞ্চিত করলেও সম্প্রতি তারা এক টেবিলে বসতে সক্ষম হয়েছেন। তবে নারায়ণগঞ্জ আওয়ামী লীগের দুই প্রবীন নেতা জেলা ও মহানগরের সভাপতি নেতাদের মাঝে দ্বন্দ্বের অবসান ঘটাতে সর্বোচ্চ চেষ্টা চালিয়ে গেলেও কতটুকু সফল হবে তাই দেখার বিষয়।

ক্ষমতাহীন দল বিএনপি
দীর্ঘ একযুগেরও বেশি সময় ধরে ক্ষমতায় নেই বিএনপি। নিজেদের যেখানে গুছিয়ে সংগঠনকে এগিয়ে নিয়ে যাবে সেখানে নিজেদের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখতে নেতায় নেতায় বিভেদ সৃষ্টি করছেন। ২০০৯ সালের ২৫ নভেম্বর সম্মেলনের মাধ্যমে নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির সভাপতি হিসেবে অ্যাডভোকেট তৈমুর আলম খন্দকার ও সাধারণ সম্পাদক পদে কাজী মনিরুজ্জামান মনির নির্বাচিত হন। তবে তারা দীর্ঘ ৬ বছরেও তারা পূর্ণাঙ্গ কমিটি করতে পারেননি। পরবর্তিতে কাজী মনিরুজ্জামান মনিরকে সভাপতি, অধ্যাপক মামুন মাহমুদকে সাধারণ সম্পাদক পদে অধিষ্ট করে কমিটি ঘোষণা হবার ৫মাসের মাথায় পূণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা হয়। অপরদিকে মহানগর কমিটিতে সাবেক এমপি আবুল কালাম সভাপতি, জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি এড. সাখাওয়াত হোসেন খান সহ-সভাপতি, এটিএম কামাল সাধারণ সম্পাদক ঘোষনা করে কমিটি দেওয়া হলেও নিজেদের দ্বন্দ্বে দূরত্ব হয়েছে অনেক।
পবিত্র মাহে রমজান উপলক্ষে যেখানে বিভিন্ন দল, সংগঠন নিজেদের কর্মী নিয়ে একাট্টা হবার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন সেখানে বিএনপি নিজেদের দ্বন্দ্বের কারনে এখনো এক টেবিলে বসতে পারেননি। সম্প্রতি জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের ইফতারেও বিভক্ত ছিলো বিএনপি পন্থী আইনজীবীরা।

গত ২৫ মে জেলা বিএনপির ইফতার মাহফিলে উপস্থিত হয়েছিলেন মহানগর বিএনপির সিনিয়র সহ-সভাপতি এড. সাখাওয়াত হোসেন খান। কিন্তু এখনো পর্যন্ত মহানগর বিএনপি সকল নেতাকর্মীকে এক টেবিলে বসতে পারে নাই। সিনিয়র সহ-সভাপতি সাখাওয়াত হোসেন খান নিজে বলয় শক্ত করতে আলাদা ইফতার মাহফিল করলেও মহানগর বিএনপি এখনো পর্যন্ত কোন রূপ কর্মসূচি পালন করতে পারেনি।

পরবর্তিতে আদালত পাড়ায় জিয়াউর রহমানের মৃত্যু বার্ষিকী ও খালেদা জিয়ার কারামুক্তি কামনায় ঈদ সামগ্রী বিতরণ করা হয়। এতে দেখা যায়, বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান খন্দকার মাহবুব হোসেন উপস্থিত হন। তৈমূর আলম খন্দকারও উপস্থিত ছিলেন, কিন্তু সেখানেও দেখায় যায় বিভক্ত। কেন্দ্রীয় নেতা এবং নিজের দলীয় চেয়ারপার্সনের মুক্তির দাবির ব্যানারে এক হতে পারিনি বিএনপির নেতাকর্মীরা। সাখাওয়াত বলয়ের কেউ উপস্থিত ছিলেন না কেন্দ্রীয় নেতার উপস্থিতি অনুষ্ঠানে।

স্পন্সরেড আর্টিকেলঃ