আজ বুধবার, ১১ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২৪শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

দক্ষ চিকিৎসক ছাড়াই নারায়ণগঞ্জে গড়ে উঠছে ক্লিনিক, ভুল চিকিৎসায় বাড়ছে মৃত্যু

দক্ষ চিসিৎসক ছাড়াই নারায়ণগঞ্জে

দক্ষ চিসিৎসক ছাড়াই নারায়ণগঞ্জে

সংবাদচর্চা রিপোর্ট:

বাংলাদেশের সবচেয়ে ধনী জেলা নারায়ণগঞ্জ। এখানে গড়ে উঠেছে বিভিন্ন শিল্পকল কারখানা। সারাদেশের বিভিন্ন স্থান থেকে কর্মের সন্ধানে বেকার মানুষ নারায়ণগঞ্জে ভির জমায়।

জনসংখ্যা বৃদ্ধির সাথে সাথে নারায়ণগঞ্জের বিভিন্ন স্থানে গড়ে উঠছে বেসরকারী ক্লিনিক। দেখা গেছে অধিকাংশ ক্লিনিকে নেই কোন অপারেশনের ভালো যন্ত্র। নেই কোন দক্ষ ডাক্তার। চিকিৎসার নামে প্রচুর হয়রানির শিকার হচ্ছে রোগীরা। অদক্ষ ডাক্তাররা করছে চিকিৎসা বানিজ্য।

নারায়ণগঞ্জে নেই কোন ভালো হাসপাতাল এবং সরকারি মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়। এক জরিপে দেখা গেছে ভুল চিকিৎসায় নারায়ণগঞ্জে মৃত্যুর হার বৃদ্ধি পাচ্ছে। প্রতিনিয়ত বাড়ছে মা ও শিশু মৃত্যুর হার। যার বেশির ভাগ মরছে ভুল চিকিৎসায়। যে সকল হাসপাতালে ভুল চিকিৎসায় রোগী মারা যাচ্ছে সে সকল হাসপাতালে প্রশাসন তদারকি করলেও তার ফল ভালো হচ্ছে না। ক্লিনিকের মালিকদের সরকারের উপর মহলে হাত থাকায় বিভিন্ন কৌশলে বিচারের হাত থেকে বেচে যাচ্ছে।

গতকাল ফতুল্লায় এক প্রসূতি ও সদ্য নবজাতকের মৃত্যুর অভিযোগের ঘটনায় পপুলার হাসপাতালটি বন্ধ করে দিয়েছে পুলিশ। এ ঘটনায় হসপিটালটির ৪ মালিক এক ডাক্তারসহ ৬ জনকে আটক করেছে পুলিশ। হাসপাতালের মালিক মালিক ডা. মজিবুর রহমান, মাসুম আহমেদ, আহম্মদ আলী খান, কামরুন্নাহার, মেডিকেল অফিসার ডা. জামিল আহমেদ ও নার্স সুরমা বেগম।

শনিবার (২৯ সেপ্টেম্বর) সকাল ৯টার দিকে এই হাসপাতালে প্রসূতি ও নবজাতকের মৃত্যুর ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় ওই হাসপাতালে ব্যাপক ভাঙচুর করেছে নিহতের স্বজন ও বিক্ষুব্ধ জনতা।

ডেলিভারীর সময় হওয়ার আগেই স্বামীর অনুমতি না নিয়ে প্রসূতি শিল্পী বেগমকে সিজার করা হয়েছে বলে অভিযোগ তার স্বামীর। শিল্পী বেগম উপজেলার কুতুবপপুর পূর্ব দেলপাড়া এলাকার রং মিস্ত্রি আলমগীর হোসেনের স্ত্রী।

এদিকে পাগলা এলাকার নিউ পপুলার জেনারেল হসপিটালে শুধু এবারই প্রথম রোগির মৃত্যুর ঘটনা ঘটেনি। এর আগেও বেশ কয়েকবার এমন ঘটনা ঘটেছে বলে অভিযোগ করেছেন এলাকাবাসী। তারপরও প্রভাবশালীদের ছত্রছায়ায় এই হসপিটালটি বীরদর্পে চালিয়ে আসছিলো কৃর্তপক্ষ।

নিহতের স্বামী আলমগীরে অভিযোগ, “ডাক্তারের পরামর্শে আমার স্ত্রীকে বৃহস্পতিবার বিকেলে হাসপাতালে ভর্তি করি। শুক্রবার দুপুর থেকেই হাসপাতালের লোকজন বলছে অপারেশন করতে হবে। তখন আমি জানতে চাই ‘গর্ভের সন্তান নরমাল থাকলে অপারেশন কেন।’ তারা বললো রক্ত নিয়ে আসেন দ্রুত। এতে আমি রক্ত আনতে যাই। এরমধ্যে আমার স্ত্রীকে কোনো অনুমতি ছাড়াই অপারেশন করে সন্তান বের করে।”

তিনি আরও জানান, আমি রক্ত নিয়ে এসে দেখি শিশুটির গলাকাটা এবং স্ত্রী নিথর দেহ পড়ে থাকতে দেখে জানতে চাইলে নার্স ও ডাক্তাররা জানায় ‘আপনার স্ত্রীকে ঢাকা মেডিকেলে নিতে হবে।’ তখন তারাই অ্যাম্বুলেন্সে উঠিয়ে দেয়। এতে আমার সন্দেহ হয়। এরপর তাদের লোকজনই জানায় সে মারা গেছে। আমি এর বিচার চাই।”

ফতুল্লা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শাহ মোহাম্মদ মঞ্জুর কাদের জানান, হাসপাতালটি তাৎক্ষণিকভাবে বন্ধ করে দেয়া হয়েছে এবং আটককৃতদের থানায় এনে জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। পরবর্তীতে বাদির অভিযোগের প্রেক্ষিতে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

সম্প্রতি শহরের বেসরকারি মেডিস্টার জেনারেল হাসপাতা , মুক্তি জেনারেল হাসপাতাল নামের দুটি বেসরকারি ক্লিনিকে ভুল চিকিৎসায় ২ শিশুর মৃত্যুর মৃত্যু হয়েছে।

চিকিৎসা বিশ্লেষকরা বলেছে, তদন্তের অভাবে নারায়ণগঞ্জে ভুল চিকিৎসায় মৃত্যুর হার বৃদ্ধি পাচ্ছে। এখানে জনগণকে অধিকসচেতন হতে হবে। সরকারকে দক্ষ চিসিৎসক নিয়োগ দিতে হবে। তা না হলে ভুল চিকিৎসায় মৃত্যুর হার মারাত্ব রূপ ধারণ করবে।

স্পন্সরেড আর্টিকেলঃ