আজ মুক্তিবাহিনীর সর্বাধিনায়ক জেনারেল ওসমানীর মৃত্যুবার্ষিকী
নবকুমার:
মুক্তিবাহিনীর সর্বাধিনায়ক বঙ্গবীর জেনারেল আতাউল গণি ওসমানীর আজ মৃত্যুবার্ষিকী। ১৯৮৪ সালের এই দিনে ক্যান্সার রোগে তিনি লন্ডনে শেষ নিঃশ^াস ত্যাগ করেন। তীক্ষ্ম মেধা ও উজ্জ্বল ব্যক্তিত্বের অধিকারী ওসমানী ছিলেন চিরকুমার।
একজন সুদক্ষ সেনানায়ক হিসেবে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ পরিচালনা করেছেন তিনি। পাকিস্তান সেনাবাহিনীতে বাঙালি সৈনিকদের জন্য পদ সংরক্ষণ, পাকিস্তান ইষ্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের মার্চ সঙ্গীতরূপে কাজী নজরুল ইসলামের চল চল চল উর্ধ্ব গগনে বাজে মাদল” গানটিকে সরকারি স্বীকৃতি আদায়ের নায়ক ওসমানী।
বেঙ্গল রেজিমেন্ট গঠনে অবদানের জন্য তাকে ফাদার অব দি বেঙ্গল রেজিমেন্ট হিসেবে সম্মান করা হয়। বঙ্গবীর আতাউল গণি ওসমানী ১৯১৮ সালের ১ সেপ্টেম্বর সুনামগঞ্জে জন্মগ্রহণ করেন।
তিনি ১৯৩৪ সালে প্রবেশিকা পাস করেন। ১৯৩৮ সালে গ্রাজুয়েশন ডিগ্রি লাভ করেন আলীগড় মুসলিম বিশ^বিদ্যালয় থেকে। তার বাবার নাম খান বাহাদুর মফিজুর রহমান। তিনি ছিলেন ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট। পরে আসামের জেলা প্রশাসক হন। ওসমানীর মায়ের নাম বেগম জোবেদা খাতুন। দু’ভাই ও এক বোনের মধ্যে ওসমানী সবার ছোট।
ছাত্রজীবনে তিনি ছিলেন অত্যন্ত মেধাবী। ভারতীয় সিভিল সার্ভিসে যোগ না দিয়ে ওসমানী যোগ দেন ভারতীয় সামরিক বাহিনীতে। ১৯৪১ সালে ক্যাপ্টেন এবং ১৯৪২ সালে মেজর হিসেবে পদোন্নতি পান।
দ্বিতীয় বিশ^যুদ্ধে বার্মার রণাঙ্গনে সেনা অধিনায়ক ছিলেন তিনি। পাকিস্তানে আসার পর লেফটেন্যান্ট কর্নেল পদে উন্নীত হন। ১৯৫১ সালে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান রাইফেলস-এর অতিরিক্ত কমান্ডেন্ট নিযুক্ত হন।
১৯৫৬ সালে কর্নেল পদে উন্নীত হন। অবসর । গ্রহণ করেন ১৯৬৭ সালে। ১৯৭০ সালে রাজনীতিতে যোগ দেন। আওয়ামীলীগের প্রার্থী হিসেবে জাতীয় পরিষদের সদস্য নির্বাচিত হন।
১৯৭১ সালের ১৭ এপ্রিল অস্থায়ী মুজিবনগর সরকার গঠিত হলে তিনি মুক্তিব হনীর প্রধান সেনাপতি নিযুক্ত হন। মুক্তিযুদ্ধে বীরত্বপূর্ণ অবদানের জন্য তাকে বঙ্গবীর উপাধি দেয়া হয়। ১৯৭৩ সালে তিনি জাতীয় সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন ৷ ডাক, তার, টেলিফোন যোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পালন করেন।
১৯৭৫ সালে বাকশাল গঠন করার বিরোধিতা করে ওসমানী সংসদ থেকে পদত্যাগ করেন। পরে রাষ্ট্রপতি খন্দকার মোশতাক আহমদের প্রতিরক্ষা বিষয়ক উপদেষ্টা নিযুক্ত হন। এ পদ থেকে দু’মাস পর পদত্যাগ করেন।
১৯৭৬ সালে তিনি গঠন করেন জনতা পার্টি। ১৯৭৮-এর রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন ঐক্যজোটের প্রার্থী এবং ৮১ তে জাতীয় নাগরিক কমিটির প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দিতা করে উভয় নির্বাচনেই পরাজিত হন ।