আজ শুক্রবার, ৩রা জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৭ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

চ্যালেঞ্জের মুখে আ.লীগ

সংবাদচর্চা রিপোর্ট:
দেশের রাজনীতির অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ জেলা নারায়ণগঞ্জ। জনশ্রুতি রয়েছে আওয়ামী লীগের জন্ম নারায়ণগঞ্জে। বাংলাদেশের প্রত্যেকটা আন্দোলন সংগ্রামে নারায়ণগঞ্জের অবদান ভুলবার নয়। এখানে আওয়ামী লীগ দুটি ভাগে বিভক্ত রয়েছে। একটি অংশের নেতৃত্বে রয়েছে বন্ত্র ও পাট মন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী ও নাসিক মেয়র ডাক্তার সেলিনা হায়াত আইভী। অপর অংশের নেতৃত্বে রয়েছে শামীম ওসমান।

তবে গাজী আইভীর বলয় বড়। জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগের মধ্যে গ্রুপিং থাকলেও তারা কেন্দ্রের সিদ্ধান্ত মেনে চলে। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মনোনয়ন লড়াইয়ে বিরোধ থাকলেও নৌকার পক্ষে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করেছেন নারায়ণগঞ্জ জেলা উপজেলা মহানগর আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ। আওয়ামী লীগের ত্যাগী নেতাদের ত্যাগের কারণেই এবার আওয়ামী লীগ নিরঙ্কুশ বিজয় লাভ করেছে।

তাই ত্যাগীদের মূল্যায়ণ করতে ভুল করেন নাই আওয়ামী লীগ। আগামী ২৩ জুন আওয়ামী লীগের ৭০ তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উপলক্ষে প্রত্যেক জেলার দুজন করে ত্যাগী এবং প্রবীন নেতাকে সংবর্ধনা দেয়ার কথা রয়েছে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির।

এব্যাপারে গত শনিবার ( ৮ জুন) আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের শেখ হাসিনার রাজনৈতিক কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ২৪ জুন বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলনে কেন্দ্রে আলোচনা সভা ও প্রতি জেলার দুই জন করে প্রবীণ নেতাদের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হবে। আমরা জেলায় জেলায় ফোন করে প্রতিটি জেলা থেকে দুই জন সিনিয়র নেতার নাম পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছি। এরপর ২৫ জুন বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হবে।

নারায়ণগঞ্জ জেলা উপজেলা মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি সাধারণ সম্পাদক সহ অধিকাংশ নেতা প্রবীন। এছাড়া জেলার মন্ত্রী এমপিরাও ত্যাগী। তারাও সংবর্ধনা পাওয়ার যোগ্য। এক্ষেত্রে দুই জন ব্যক্তি কে নির্বাচন করে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির কাছে নাম জমা দেয়া জেলা আওয়ামী লীগের অত্যন্ত কঠিন কাজ। নারায়ণগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুল হাই সাধারণ সম্পাদক ভিপি বাদল। মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি আনোয়ার হোসেন সাধারণ সম্পাদক এড. খোকন সাহা। হাই আনোয়ারও প্রবীন নেতা। পদের বাইরেও আওয়ামী লীগের কিছু ত্যাগী এবং প্রবীণ নেতা রয়েছে । তারা দলের জন্য কাজ করে সর্বদা। আলোচনা ছাড়াই হাই আনোয়ার দলীয় ক্ষমতা বলে নিজেদের নাম কেন্দ্রে পাঠানোর শঙ্কা রয়েছে। তাছাড়া শামীম ওসমান আইভী পন্থীদের জামায়াত হাইব্রিড আখ্যা দেয়। আবার শামীম ওসমান পন্থীদের মধ্যে একাধিক বিতর্কিত নেতা রয়েছে।

অনেকেই চাচ্ছে নারায়ণগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের ত্যাগী নেতার পুরস্কার। তারা সবাই দৌড়ঝাপ শুরু করে দিয়েছে। পিছিয়ে নেই দলছুট হাইব্রিড নেতারা। তারাও চাচ্ছে আওয়ামী লীগের প্রবণী এবং ত্যাগী নেতার পুরস্কার। যদি অযোগ্য ব্যক্তি ত্যাগী এবং প্রবীণ আওয়ামী লীগের সংবর্ধণা পায় তাহলে নারায়ণগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের জন্য বড় কলঙ্ক হয়ে দাঁড়াবে বলে মনে করছে তৃণমূল আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। তারা চায় বঙ্গবন্ধুর প্রকৃত আদর্শের সৈনিক ত্যাগী এবং প্রবীণ নেতা সংবর্ধনা পাক। আবার গত সংসদ নির্বাচনে মনোনয়ন বঞ্চিত একাধিক নেতা রয়েছেন যারা বঞ্চিত হয়েও নারায়ণগঞ্জের ৫ টি আসনে নৌকা কে বিজয়ী করতে বিরাট ভূমিকা রেখেছে। এখন পর্যন্ত বঞ্চিতদের বঙ্গবন্ধুর কন্যা কোন পুরস্কার দেন নাই। তারাও আশায় বুক বেধে আছে হয়ত এবার নারায়ণগঞ্জ থেকে তারা ত্যাগী নেতার পুরস্কার পাবেন।

কেন্দ্রে নাম পাঠানোর ব্যাপারে নারায়ণগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতির সাথে যোগাযোগ করা হলে তার মোবাইল নাম্বার বন্ধ পাওয়া যায়।

তবে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এড. আবু হাসনাত শহীদ মো. বাদল একটি সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, ‘এ সংক্রান্ত আনুষ্ঠানিক চিঠি আসেনি। তবে কেন্দ্রীয় নির্দেশনা রয়েছে এ ব্যাপারে। ত্যাগী নেতাকর্মীদের সম্মাননা প্রদান করা হবে। আগামী ১৫ জুন বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউতে কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দের সাথে এ বিষয়ে বৈঠক রয়েছে। ওই বৈঠকে সকল নির্দেশনা দেওয়া হবে।’

মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি আনোয়ার হোসেন বলেন, আমরা এখনো কোন কিছু পাই নি। নির্দেশ পেলে পাঠাব।

স্পন্সরেড আর্টিকেলঃ