আজ মঙ্গলবার, ১২ই ফাল্গুন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২৫শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

ঘুষ নেয়ার অভিযোগ ডিবির জলিলের বিরুদ্ধে

অপরাধ প্রতিবেদক:

নারায়ণগঞ্জ জেলা গোয়েন্দা পুলিশের উপ পরিদশক (এসআই) আব্দুল জলিলের বিরুদ্ধে দশ হাজার টাকা ঘুষ নেয়ার অভিযোগ উঠেছে। ১৮ জানুয়ারী রাতে মদ্যপান অবস্থায় দাদা হোটেল (ফাতিন হোটেল) থেকে সাদা পোশাকে বাংলাদেশ নৌযান শ্রমিক লীগ নারায়ণগঞ্জ জেলা কমিটির সভাপতি আবু তাহেরকে আটক করে গোয়েন্দা পুলিশ।

এজহার সূত্রে জানা যায়, ১৮ জানুয়ারী ডায়েরী নং ৪০২ নারায়ণগঞ্জ সদর মডেল থানা এলাকায় মাদক বিরোধী অভিযান পরিচালনাকালে রাত ৯.৫০ মিনিটের সময় চাষাড়া থাকা অবস্থায় গোপন সূত্রের মাধ্যমে জানতে পারেন ১নং রেল গেইট এলকায় একজন ব্যক্তি মাদক সেবন করে চেচামেচি ও মাতলামি করছে। উক্ত সংবাদের ভিক্তিতে উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করে সাথে থাকা ফোর্স নিয়ে মৃত মজিবুর রহমারে ছেলে আবু তাহের কে আটক করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে সে মাদক সেবন করেছে বলে নিশ্চিত করে। আটককৃত আসামী অতিরিক্ত নেসাগ্রস্থ থাকায় প্রাথমিকভাবে নারায়ণগরঞ্জ খানপুর ৩০০ শয্যা হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়। প্রাথমিকভাবে তদন্তকালে জানা যায় সে আবু তাহের মাদক ব্যবসায়ী ও সেবনকারী এবং মামলা তদন্ত অব্যাহত আছে এজহারে বলা হয়।

কিন্তু যা হয়েছিল আটকের পর সেই সূত্র অনুসন্ধানে বেরিয়ে আসে ভিন্ন ধরনের তথ্য। আবু তাহেরের পক্ষে একজন মধ্যস্থতাকারী এসআই আব্দুল জলিল তার সাথে থাকা ফোর্সদের সাথে যোগাযোগ করলে তার কাছ থেকে প্রথমে পঞ্চাশ হাজার টাকা দাবী করে। কিন্ত টাকা দিতে না পারায় সমাধান করেনি এই পুলিশ সদস্য। পরের দিন (নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক) দুপুর অনুমানিক ১.৩০ এর সময় ডিসি অফিসে ডিবি পুলিশের উপ পরিদর্শক আ. জলিলের সাথে দেখা করেন। পরে সে তাকে বলে আপনি রিক্সা নিয়ে মেট্রো হলের সামনে যান আমি যথারিতি সেখানে যাই। আনুমানিক ২.৩০ মিনিটের সময় তিনি সাদা পোশাকে আমার কাছ থেকে দশ হাজার টাকা নেয়। কিন্তু ওনি বলেছেন এক আর করলেন আরেক।

আটকের বিষয়ে নৌযান শ্রমিক লীগের সাধারণ সম্পদক আলমগীর হোসেনের সাথে মুঠো ফোনে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, ডিবি পুলিশের হেফাজতে থাকা তাহেরের আটকের বিষয়টি মিমাংসা করার জন্য জেলা গোয়েন্দা শাখা ডিবি পুলিশের জন্য একজন ব্যক্তির মাধ্যমে পনের হাজার টাকা পাঠাই।

ঘুষ গ্রহনের বিষয়ে জেলা গোয়েন্দা শাখা (ডিবি) উপ পরিদর্শক আ. জলিলের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ইন্সপেক্টর শাহীন মন্ডল এর নেতৃত্বে আমিসহ অন্যান্য সঙ্গীয় ফোর্সদের নিয়ে মাদক বিরোধী অভিযানে ছিলাম। অভিযান চলাকালে তাহের নামের একজনকে আটক করা হয়। দশ হাজার টাকা লেনদেনের বিষয়ে জিজ্ঞেস করলে তিনি জানান, না আমি কোন টাকা নেই নি। আপনার কিছু বলার বা জানার থাকলে অফিসে এসে কর্মকর্তাদের সাথে কথা বলেন।

১৮ জানুয়ারী জেলা গোয়েন্দা শাখার মাদক বিরোধী অভিযান পরিচালানাকালী দলের পরিদর্শক শাহীন মন্ডল জানান, অভিযানের বিষয়টি সঠিক মনে পড়ছে না। তবে আ. জলিল নামে একজন উপ পরিদর্শক আমাদের অভিযান টিমে আছে। তাহের নামে কাউকে আটক করার পর কোন টাকা পয়সা নেয়া হয়েছে বলে আমার জানা নেই। তবে আমি নিশ্চিত কোন টাকা নেওয়া হয় নি।

উপরোক্ত ঘটনার প্রেক্ষিতে নারায়ণগঞ্জ জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার নূরে আলম জানান, এ ধরনের ঘটনা আমার নলেজে নেই। বিষয়টি যেহেতু জেনেছি তা ক্ষতিয়ে দেখবো। জড়িতদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।