আজ বুধবার, ১১ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২৪শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

খোকা-শামসুলের এতো মিল

নিজস্ব প্রতিবেদক

শামসুল ইসলাম ভূঁইয়া অনেক দিন ধরে রাজনীতির সাথে জড়িত । এ আওয়ামী লীগ নেতা দলের কমিটিতে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন পদ পেলেও জনপ্রতিনিধি হননি অতীতে। এবার তার ভাগ্য খুলেছে। তিনি দলের মনোনয়ন পেয়ে সোনারগাঁ উপজেলা চেয়ারম্যান হয়েছেন। অনেকে বলছেন, এমনটা তার অনেক আগেই পাওনা ছিলো। আবার কারও কারও মতে, তিনি তার কারনেই এতদিন পাননি।

এক সময়ে নারায়ণগঞ্জ জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি ছিলেন শামসুল ইসলাম ভূঁইয়া। যুব লীগের কেন্দ্রীয় কমিটিতেও তার পদ ছিলো। সোনারগাঁ থানা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ সভাপতি থাকাকালে সভাপতি মারা গেলে তিনি হন ভারপ্রাপ্ত সভাপতি। বর্তমানে আহ্বায়কের দায়িত্ব পালন করছেন তিনি। এছাড়া জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য পদে রয়েছেন এ সিনিয়র আইনজীবী। তার আরও একটি পরিচয় রয়েছে। একেএম শামসুজ্জোহা মারা যাওয়ার আগ পর্যন্ত তিনি তার পিএস ছিলেন। যে কারনে ওসমান পরিবারের সাথে তার সুসম্পর্ক বহু আগে থেকেই।
দলের নেতাকর্মীদের মতে, এত যার অর্জন তার এমন পদ কিংবা আরও বড় জনপ্রতিনিধি হওয়ার কথা ছিলো অনেক আগেই। কেন তা হয়নি এ নিয়ে দুইরকম কথা রয়েছে। কারও কারও মতে, তিনি বড় কিছুর দিকে ছুটে যাননি। চাওয়া পাওয়া কম। আবার কারও কারও মতে, তিনি ধরি মাছ না ছুঁই পানির মতো রাজনীতিতে ছিলেন। আর আদালতপাড়ায় তার একটা সুক্ষè বদনাম রয়েছে। তিনি কিছুটা রাগী! তবে তার ঘনিষ্ঠজনরা মনে করেন, রাগ তার বাইরের রূপ । ভিতরে তিনি নরম মনের মানুষ।

এদিকে গত ২২ জুলাই উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মোশারফ হোসেন মৃত্যুবরণ করায় নির্বাচন কমিশন এ উপজেলার চেয়ারম্যান পদ শূন্য ঘোষণা করে নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করে। নির্বাচন কমিশনের তফসিল অনুযায়ী, ১৩ সেপ্টেম্বর মনোনয়ন দাখিলের শেষ তারিখ এবং আগামী ৭ অক্টোবর এ উপজেলায় ভোট নেওয়ার কথা রয়েছে। নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে মনোনয়ন পেতে উপজেলা আওয়ামী লীগের ৮ জন দলীয় মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেছিলেন।
১১ সেপ্টেম্বর সকালে গণভবনে অনুষ্ঠিত আওয়ামী লীগের সংসদীয় ও স্থানীয় সরকার জনপ্রতিনিধি মনোনয়ন বোর্ডের যৌথ সভায় এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে বৈঠকে দলের সংসদীয় ও স্থানীয় সরকার জনপ্রতিনিধি মনোনয়ন বোর্ডের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন। এ সভায় সোনাগাঁয়ে প্রবীণ রাজনীতিক শামসুল ইসলাম ভূঁইয়াকে মনোনয়ন দেয়। নির্বাচনে আর কোন প্রার্থী না থাকায় ২০ সেপ্টেম্বর নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ উপজেলা পরিষদের উপনির্বাচনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগের প্রার্থী শামসুল ইসলাম ভূঁইয়াকে নির্বাচিত ঘোষণা করা হয়। জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ও রিটার্নিং কর্মকর্তা মোহাম্মদ মতিয়ুর রহমান স্বাক্ষরিত এক পত্রে এই ঘোষণা দেয়া হয়। এ ঘোষণার পর দুপুরে উপজেলা পরিষদ কার্যালয়ে এমপি খোকার অফিসে গিয়ে দুজন দুজনকে অভিনন্দন জানিয়ে মুখে মিষ্টি তুলে দেন। এসময় উপজেলা আওয়ামীলীগের আহবায়ক কমিটির সদস্য, জাতীয়পার্টির নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
এমন একটা ছবি গণমাধ্যমে প্রকাশ হলে আওয়ামী লীগের অনেক নেতাকর্মী মিশ্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে। কেউ কেউ মন্তব্য করেছে, শামসুল ইসলাম ভূঁইয়ার রাজনৈতিক বয়স হিসেবে তার থাকার কথা ছিলো আরও বড় জনপ্রতিনিধির পদে। এতদিনে তিনি এমপি হলে অবাক হতো না কেউ। লিয়াকত হোসেন খোকাকে নিয়ে যেমনটা হয়। তবে ভূঁইয়া উপজেলা চেয়ারম্যান হয়েই খুশিতে আটখানা হয়েছেন। তাই প্রথমেই কোন আওয়ামী লীগের জনপ্রতিনিধি কিংবা জেলার শীর্ষ নেতাদের মিষ্টি মুখ না করিয়ে জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য এমপি খোকাকে বেছে নিয়েছেন। এ অবস্থায় কেউ কেউ সেই পুরনো প্রশ্ন তুলেছেন, ডিম আগে না মুরগি আগে।

স্পন্সরেড আর্টিকেলঃ