আজ শনিবার, ২৬শে শ্রাবণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১০ই আগস্ট, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

কে হবেন জাপার কাণ্ডারি

সংবাদচর্চা রিপোর্ট :

নারায়ণগঞ্জের ঐতিহ্যবাহী ওসমান পরিবারের পুত্রবধূ পারভীন ওসমান। তিনি এই পরিবারের বড় সন্তান তিন বারের সংসদ সদস্য প্রয়াত নাসিম ওসমানের স্ত্রী। জাতীয় পার্টির রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন নাসিম ওসমান। তিনি এই দলটির ছিলেন প্রেসিডিয়াম সদস্য। তার সূত্র ধরে পারভীন ওসমানও এই দলের কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য হয়েছেন।
সূত্র বলছে, নাসিম ওসমান যতদিন বেঁচে ছিলেন নারায়ণগঞ্জের জাতীয় পার্টির নাম-ডাক ছিল আওয়ামী লীগ ও বিএনপির মতই। তার হাত ধরে অনেকেই জাতীয় পার্টির রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত হয়েছিলেন। বর্তমানে যাদের অনেকে বিএনপি কিংবা আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে পদার্পণ করেন। আবার প্রয়াত এই সাংসদের শিষ্য হিসেবে পরিচিত লিয়াকত হোসেন খোকা দুই দুবার সংসদ সদস্য হয়েছেন। বর্তমানে তিনি জাতীয় পার্টির যুগ্ম মহাসচিব এবং মনোনয়ন বোর্ডের একজন সদস্য।
তবে, নাসিম ওসমানের মৃত্যুর পর নারায়ণগঞ্জে জাতীয় পার্টির সাংগঠনিক অবস্থা একেবারেই দুর্বল হয়ে পড়ে। বর্তমানে এখানে এই দলটি অনেকটা কিতাবে আছে গোয়ালে নেই অবস্থায় রয়েছে। যোগ্য নেতৃত্ব এবং অভিভাক না থাকায় এখানে এই দলটি ঘুরে দাঁড়াতে পারছে না। নারায়ণগঞ্জে জাতীয় পার্টির একজন সংসদ সদস্য থাকলেও তিনি সাংগঠনিকভাবে দলের হয়ে সেভাবে কাজ করছেন না বলেই অভিযোগ শোনা যায় প্রায়সময়।
অভিযোগ, এখানে জাতীয় পার্টির একমাত্র এমপি ওসমান পরিবারের মেজ ছেলে সেলিম ওসমান। তিনি আপাদমস্তক একজন ব্যবসায়ী। তিনি রাজনীতির থেকে ব্যবসা বুঝেন অনেক ভালো। ফলশ্রুতিতে তৃতীয় বারের মতো তিনি সংসদ সদস্য হিসেবে নির্বাচিত হলেও এখানে জাতীয় পার্টিকে সাংগঠনিকভাবে শক্তিশালী করতে পারেননি। এ নিয়ে জাতীয় পার্টির বহু নেতাকর্মীর মধ্যেই রয়েছে ক্ষোভ।
তারা মনে করেন, সংসদ সদস্য সেলিম ওসমান তার বড় ভাই নাসিম ওসমানের মৃত্যুতে নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনে উপনির্বাচনের মাধ্যমে সংসদ সদস্য হিসেবে প্রথম নির্বাচিত হোন। পরে তিনি আরও দুইবার জাতীয় পার্টির মনোনয়নে এমপি নির্বাচিত হয়েছেন। যে দলের মনোনয়নে তিনি এমপি সেই দলের জন্য তার তেমন কোনো অবদান এখানে নেই। বরং তার স্থলে যদি নাসিম ওসমানের সহধর্মীনি পারভীন ওসমান এমপি হতেন তাহলে অন্তত এখানকার জাতীয় পার্টি পূর্বের ন্যায় না হলেও সাংগঠনিক তৎপরতা থাকতো এই দলটির।
নাসিম ওসমানের সঙ্গে রাজনীতি করা অনেক নেতাকর্মীই এখন অনেকটা আড়ালে চলে গেছেন। তাদের অনেকে আক্ষেপ নিয়ে বলেন, পারিবারিক বৈষম্যের শিকার হয়েছেন নাসিম ওসমান পরিবার। নয়তো এই পরিবার থেকে কেউ একজন হতেন নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনের এমপি। বিশেষ করে পারভীন ওসমানের প্রাপ্য ছিল নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনের মনোনয়ন। কিন্তু রাজনীতির ভেতরের রাজনীতির কারণে সেটি আর হয়ে উঠেনি। ফলে জাতীয় পার্টির নেতাকর্মীদের ভাগ্যও সুপ্রসন্ন হয়নি।
তারা মনে করেন, বিগত দিনে যা হয়েছে তো হয়েছে। এবার অন্তত জাতীয় পার্টিকে সুসংগঠিত করা প্রয়োজন। এখানে নাসিম ওসমান যেভাবে দলকে সুসংগঠিত করে রেখেছেন, সেভাবে সাংগঠনকে এগিয়ে নিতে হলে পারভীন ওসমানকেই এগিয়ে আসতে হবে। তাকেই এই দলটির হাল ধরতে হবে। আড়ালে চলে যাওয়া নেতাকর্মীদেরকে পুনরায় সামনের দিকে নিয়ে আসার অগ্রণী ভূমিকা তাকেই পালন করতে হবে। তার দ্বারাই সম্ভব নারায়ণগঞ্জে জাতীয় পার্টিকে ফের জাগিয়ে তোলা। তিনিই হতে পারবেন এখানে জাতীয় পার্টির যোগ্য নেতা ও অভিভাবক। একইসঙ্গে আগামী সংসদ নির্বাচনে তাকে প্রার্থী করা হলে এবং তিনি যদি এমপি নির্বাচিত হোন তাহলে নারায়ণগঞ্জে জাতীয় পার্টির গণজাগরণ সৃষ্টি হবে বলে মনে করেন রাজনীতির অভিজ্ঞজনরা। এখন দেখার পালা পারভীন ওসমান তার প্রয়াত স্বামীর মতো নারায়ণগঞ্জে জাতীয় পার্টির হাল ধরেন কিনা।

স্পন্সরেড আর্টিকেলঃ