সাইফুল সুমন
মদ, গাঁজা, হেরোইন, ইয়াবা, ফেন্সিডিল সহ বিভিন্ন অবৈধ মাদকের ব্যাপকতা বৃদ্ধি পাচ্ছে জেলার সর্বত্র। পুলিশের অভিযানেও কমছে না মাদক ব্যবসা। মাদকের মত ভয়ংকর মরন নেশায় ভাসছে যুবসমাজ। এসব মাদক ব্যবসা করে একপক্ষ অল্প দিনে পকেট ভরছে। অন্যদিকে আরেক পক্ষ মাদকাসক্ত নিরাময় কেন্দ্রগুলো চিকিৎসার নামে পকেট ভরছে ।
হাতের কাছে মাদক পেয়ে অল্প সময়ের মধ্যে নেশায় আসক্ত হয়ে পরছে বিভিন্ন পেশার বিভিন্ন শ্রেনীর মানুষ। আর এসব মাদকাসক্তদের জন্য শহরের অনেক জায়গায় খোলা হয়েছে মাদকাসক্ত নিরাময় কেন্দ্র। তবে কথা হচ্ছে এসব নিরাময় কেন্দ্র থেকে ফিরে কি পুনরায় মাদক সেবন করছে না মাদকাসক্তরা? তথ্য বলছে মাদক নিরাময় কেন্দ্র থেকে ফেরার পর মাদকাসক্তরা আরো বেশি জড়িয়ে পরছে মাদক সাথে। গত বছরের মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের তথ্য মতে বিভিন্ন মাদকাসক্ত নিরাময় কেন্দ্রগুলোতে মাত্র ৫’শ জনকে চিকিৎসার মাধ্যমে ভাল করা সম্ভব হয়েছে। তবে বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়, শহরের আশপাশেই প্রায় ১ থেকে দেড়লক্ষ মাদকসেবী বয়েছে। যারা সবসময় মাদক সেবন ও মাদক বানিজ্য করে বেড়াচ্ছে।
জানা যায়, এসব মাদকের কালো থাবায় কিশোর-কিশোরি, তরুন-তরুণী, যুবক-যুবতীসহ স্কুল-কলেজগামী হাজার হাজার ভবিষ্যৎ প্রজন্ম ধ্বংসের দিকে যাচ্ছে। নারায়ণগঞ্জ শহর ও আশপাশের এলাকা গুলোতেই প্রায় তিন শতাধিক মাদক স্পট রয়েছে। শহরের খানপুর, নগর খানপুর, নন্দীপাড়া, জামতলা, ধোপাপট্টি, পালপাড়া, ৫নং ঘাট, টানবাজার থানা পুকুরপাড়, বৌ-বাজার, বাবুরাইল, নয়াপাড়া, জল¬ারপাড়া, জিমখানা, নতুন জিমখানা, হাজীগঞ্জ, তল্লা, ব্যাংক কলোনী, মাছুয়াপাড়া, আমলাপাড়া, সূতারপাড়া, নিতাইগঞ্জ, নয়ামাটি, বালুরমাঠ, শহরের শহীদ মিনার এলাকা, ফতুল্লার কুতুবপুর, রেললাইন, কাঠেরপুল, পৌষার পুকুরপাড়, দেওভোগ, শিবু মার্কেট, নতুন ষ্টেডিয়াম এলাকা, বাড়ৈভোগ, মাসদাইর, ইসদাইর, সস্তাপুর, পুলিশ লাইন, গাবতলীসহ আরো বিভিন্ন স্পটে এখন হাত বাড়ালেই পাওয়া যাচ্ছে মাদক ।
এ বিষয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক-সার্কেল) মেহেদী ইমরান সিদ্দিকী বলেন, শহরে ৩শ’র বেশি মাদক স্পট আছে এমন কোনো তথ্য আমাদের কাছে নেই। তবে কিছু জায়গায় এখনো মাদক বিক্রি চলছে। আমরা জানা মাত্রই সে সব স্পটে অভিযান চালাই। তিনি আরো বলেন, মাদক সমাজ থেকে দূর করতে হলে আগে আমাদের ঠিক হতে হবে। আজকে যদি আমরা মাদক সেবন না করতাম তবে মাদক ব্যবসায়ীরা কখনোই মাদক বিক্রি করতে পরতো না। সমাজ ও সমাজের মানুষকে আরো সচেতন হতে হবে। মাদকের বিরুদ্ধে আমাদের সব রকম অভিযান চলমান আছে। যদি কোনো মাদক বিক্রেতার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হয় আমরা তাই নেবো।
সচেতন নাগরিকদের মতে, সমাজ থেকে মাদক মুক্ত করতে পুলিশের পাশাপাশি সাধারন মানুষকেও সচেতন হতে হবে। কোনো নিরাময় কেন্দ্র না নিজেদের সন্তানকে নিজেরাই ভাল করা সম্ভব। আর মাদক বিক্রির পেছনে যারা আছে তাদেরকে আইনের আওতায় আনা প্রয়োজন।