আজ শনিবার, ১৪ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২৭শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

ঈদে ৬ প্রকার সেমাই রান্নার রেসিপি

নিজস্ব প্রতিবেদক:

ঈদ মানেই আনন্দ । ঈদ মানেই সেমাই খাওয়া । ঈদের মাঠে যাওয়ার আগে মিষ্টি খাওয়া সুন্নাত। আমাদের দেশে সেমাই দিয়ে মিষ্টি মুখ করানো হয়। ঈদের দিন খুব সহজে যে ভাবে ৬ প্রকার সেমাই রান্না করবেন তার সহজ উপায় সমূহ:-

মালাই ক্ষীর সেমাই

উপকরণ:

দুধ-দেড় লিটার, চিনি-পরিমান মতো, মালাই-আধা কাপ, কাজু, কিসমিস, পেস্তা, কাঠবাদাম-আধা কাপ, সেমাই-এক কাপ, এলাচ, দারুচিনি-৬/৭, ঘি-২ টেবিল চামচ, জাফরান- সামান্য।

প্রস্তুত প্রণালি:

প্রথমে বাদাম গুলো খোসা ছাড়িয়ে মোটা কুচি করে নিন। এরপর দের লিটার দুধ জ্বাল দিয়ে অর্ধেকের কম পরিমাণ করে রাখুন। এবার প্যানে ঘি দিয়ে গরম করুন। এরপর এলাচ দারুচিনি দিয়ে একটু ভাজুন। এবার বাদাম কুচি, কিসমিস ও সেমাই দিয়ে দিন। মৃদু আঁচে হালকা ভাজুন। ঘ্রান ছাড়লেই ঘন দুধ দিয়ে দিন। নেড়ে নেড়ে রান্না করুন। সেমাই সিদ্ধ হয়ে আসার সাথে সাথে দুধ ঘন হয়ে আসবে। সেমাই সিদ্ধ হয়ে গেলে মালাই দিয়ে দিন। জাফরান দিন। এরপর ভালো করে মিশিয়ে চুলা বন্ধ করে ফেলুন। এবার ছোট ছোট বাটিতে এই ক্ষীর সাজান। এরপর ফ্রিজে রেখে সেট হতে দিন। সেট হলে বাদাম ও কিসমিস ছিটিয়ে পরিবেশন করুন।

ডিম দিয়ে সেমাই

উপকরণ:

সেমাই-৪ কাপ, ঘি আধা কাপ, এলাচ-৩টি, পানি-২ কাপ, ডিম-২টা, ধনে পাতা-২ টেবিল চামচ, লবণ পরিমাণমতো।

প্রণালি:

প্রথমে ডিম ফেটিয়ে লবণ মিশিয়ে একটি কাপে রাখুন। সেমাই ভেজে নিয়ে অন্য একটি পাত্রে রাখুন। এরপর অন্য পাত্রে গরম পানিতে এলাচ লবণ দিয়ে ঘিয়ে ভাজা সেমাই সিদ্ধ করে পানি শুকিয়ে আসলে ডিম দিয়ে নাড়ুন। ডিম জমাট বাঁধলে সেমাইর উপর ধনে পাতা ছিটিয়ে দিয়ে গরম গরম পরিবেশন করুন। এই সেমাইটি ডায়াবেটিক রোগিদের জন্য উপযোগী সেমাই বটে।

শুকনা লাচ্ছা

উপকরণ: লাচ্ছা সেমাই ১ প্যাকেট, চিনি স্যুপের চামচের ৩ চামচ (চাহিদা মতন কম বেশী করতে পারেন), ঘি ২ চা চামচ, কিসমিস ইচ্ছে মতন৤
প্রণালী: পাত্রে ঘি গরম করে ওতে কিসমিস দিয়ে দেবেন। একটু ভাজা হলে সেমাই দিয়ে হালকা আঁচে নাড়তে থাকুন। সেমাই ভাজা হয়ে লাল হয়ে এলে তাতে চিনি দিয়ে নেড়েচেড়ে নামিয়ে ফেলুন। হয়ে গেলো শুকনা লাচ্ছা সেমাই।

 

রেশমি সেমাই
উপকরণঃ

সেমাই ২ কাপ, চিনি ২ কাপ, জর্দার রং সামান্য, ঘি আধা কাপ, এলাচ ও দারচিনি চারটি করে, গুঁড়া দুধ আধা কাপ, আনারস আধা কাপ, কিসমিস, পেস্তাবাদাম ও কাঠবাদাম ১ কাপ, লবণ এক চিমটি।

প্রণালীঃ

কিসমিস, কাঠবাদাম ও পেস্তা বাদাম অল্প ঘি দিয়ে ভেজে নিতে হবে। সেমাই বাদামি করে ভেজে ঠান্ডা করতে হবে। গরম পানিতে দিয়ে ভাপে ছেঁকে নিতে হবে। আনারস কুরিয়ে রস ছেঁকে ছোবাটা আধা কাপ মেপে নিতে হবে। এখন ভাপা সেমাই, চিনি, আনারসের ছোবা, এলাচ, দারচিনি গুঁড়া, লবণ ও জর্দার রং সামান্য গুলে দিতে হবে। তারপর একসঙ্গে মাখতে হবে। এবার পাত্রটি একটি তাওয়ায় অল্প জ্বালে দমে বসাতে হবে। আঘা ঘণ্টা পর পাত্রের ঢাকনা খুলে নেড়ে দিতে হবে।

দ্বিতীয় ধাপের উপকরণঃ

জাফরান অল্প, ডিম ২টা, গুঁড়া দুধ আধা কাপ, ডিমের জন্য চিনি সিকি কাপ, পানি ১ কাপ (ডিমের জন্য), ঘি সিকি কাপ (ডিমের জন্য)।
প্রণালীঃ

পরের সব উপকরণ একসঙ্গে ব্লেন্ড করে ঘি দিয়ে চুলায় দিতে হবে। ঘন ঘন নাড়তে হবে। একসময় এটি ছানার মতো হয়ে ঝরঝরে হবে; তখন আগে দমে দেওয়া সেমাইয়ের সঙ্গে ভালোভাবে মেশাতে হবে। বাকি ঘি ও বাদাম ভাজাগুলো মেশাতে হবে। পাঁচ মিনিট অল্প জ্বালে ঢেকে দমে রেখে বাটিতে সাজিয়ে পরিবেশন করুন।

কুনাফা

উপকরণ : লাচ্ছা সেমাই ১ প্যাকেট, মাখন সিকি কাপ (গলানো), তরল দুধ সিকি কাপ, ছানা দেড় কাপ, কনডেন্সড মিল্ক ৩ টেবিল চামচ, ক্রিম ১ টেবিল চামচ, চিনি ১ কাপ, পানি ১ কাপের ৩ ভাগের ২ ভাগ, কমলার রস ১ টেবিল চামচ, লেবুর রস ১ চা-চামচ, চেরি বা বাদাম কুচি সাজানোর জন্য, ফুড কালার ১ ফোঁটা (কমলা বা যেকোনো)।
প্রণালি : চিনি পানি দিয়ে জ্বাল দিয়ে হালকা আঠালো হলে কমলা ও লেবুর রস দিয়ে শিরা তৈরি করে রাখুন। অন্যদিকে, সেমাইতে মাখন ও ধাপে ধাপে দুধ মিশিয়ে নিন যেন সেমাই দলা না পাকিয়ে যায়। হাত দিয়ে সেমাই ঝুরি ঝুরি করে নিন। এবার ছানা ভালোমতো ময়ান দিয়ে মিহি করে তাতে কনডেন্সড মিল্ক ও ক্রিম মিশিয়ে নিন। একটি প্যানে কিছু মাখন ও ফুড কালার ব্রাশ করুন চারপাশে। এবার প্রথমে সেমাইয়ের ১ ইঞ্চি পুরু একটা স্তর করুন। এ সময় প্যানের ভেতরে ধারগুলোতেও সেমাইয়ের স্তর দিন। এবার ছানার পুর দিন। ভালোমতো চেপে চেপে বসিয়ে দিন। সবশেষে আবার সেমাইয়ের স্তর দিয়ে চেপে চেপে ওভেনে ১৭০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপে বেক করুন ৩০ মিনিট। নামিয়ে পরিবেশনের প্লেটে নিয়ে ওপরে শিরা ঢেলে দিন। এবার সাজিয়ে পরিবেশন করুন কুনাফা।

ভিনদেশী শির খুরমা

উপকরণ:

২০০ গ্রাম কন্ডেন্সড মিল্ক, আধা কাপ ঘি, ৫ কাপ দুধ, ইচ্ছে মতো পেস্তা বাদাম, কাঠবাদাম, কাজু (আপনি আপনার ইচ্ছে মতো যে কোনো বাদাম নিতে পারেন বা বাদ দিতে পারেন), ২ টেবিল চামচ কিশমিশ, ৫০ গ্রাম বাদামী সেমাই, ৫ টি বড় খেজুর বিচি ছাড়িয়ে কুচি করে কেটে নেয়া

পদ্ধতি:

প্রথমে প্যান গরম করে এতে ঘি দিয়ে গরম করে সেমাই দিয়ে ভালো করে ভাজা ভাজা করে নিন। তবে লক্ষ্য রাখবেন সেমাই পুড়িয়ে ফেলবেন না। বাদামী রঙ একটু গাঢ় হলেই নামিয়ে নেবেন। এরপর একটি সসপ্যানে দুধ ও কন্ডেন্সড মিল্ক একসাথে ভালো করে মিশিয়ে জ্বাল করতে থাকুন। কয়েক দানা এলাচ ফেলে দিন খোসা ছাড়িয়ে। এবং ফুটে উঠলে এতে ভেজে রাখা সেমাই দিয়ে দিন। এরপর ভালো করে জ্বাল করে নিয়ে যখন হালকা ঘন হয়ে আসবে তখন এতে স্বাদ মতো চিনি দিয়ে ভালো করে নেড়ে দিন এবং সাথে দিন খেজুর কুচি। এরপর খানিকটা ঘন হওয়ার জন্য অপেক্ষা করুন। এরমাঝে সেমাই ভাজার পর বেঁচে যাওয়া ঘিয়ে নিজের পছন্দমতো বাদামকুচি ও কিশমিশ দিয়ে একটু লালচে করে ভেজে নিন। যখন খুবই ক্রিমই ধরণের হয়ে আসবে তবে থকথকে নয় তখন নামিয়ে নিন চুলা থেকে। এরপর উপরে ভেজে রাখা বাদাম কুচি ও কিশমিশ ছড়িয়ে একটু ঠাণ্ডা হতে দিন। যদিও এই খাবারটি গরম খাওয়া হয় তবে ঠাণ্ডা হলে স্বাদ আরও ভালো লাগে। তাই ফ্রিজে রেখে ঠাণ্ডা করে নিয়ে, এরপর ঠাণ্ডা ঠাণ্ডা পরিবেশন করুন অসাধারণ স্বাদের এই ভিনদেশী সেমাই ‘শির-খুরমা’।

 

স্পন্সরেড আর্টিকেলঃ