আজ সোমবার, ৩০শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৩ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

ইচ্ছে করে চ্যানেল রাখা হয় ডিস্টার্ব ডিজিটালের অজুহাতে জিম্মি নারায়ণগঞ্জবাসী

নিজস্ব প্রতিনিধি: রাজস্ব বৃদ্ধি ও ডিজিটাল বাংলাদেশে গড়ার স্বপ্ন দেখিয়ে সেটটপ বক্স বিক্রির পায়তারা করে নারায়ণগঞ্জ স্যাটেলাইট ক্যাবলের নিয়ন্ত্রক কাউন্সিলর আব্দুল করিম বাবু গ্রাহকদের জিম্মি করে পকেট কাটার চেষ্টা করছে অভিযোগ করেছেন গ্রাহকেরা। স্যাটেলাইট চ্যানেল স্টার জলসা ও জি বাংলা বন্ধ করে এবং বাকি চ্যানেলগুলো অস্পষ্ট করে দিয়ে গ্রাহকদের সেটটপ বক্স কিনতে বাধ্য করছে বলে অনেক আগে থেকে অভিযোগ করে আসলেও ডিশ নিয়ন্ত্রক বাবু যিনি সবার কাছে ডিশ বাবু হিসেবে পরিচিত তার সংবাদ সম্মেলনে ভুল ও মনগড়া তথ্যের জন্য গ্রাহকেরা আবারো ক্ষোভে ফুঁসে উঠতে শুরু করেছে।

২৭ অক্টোবর শুক্রবার সকালে শহরের বিভিন্ন স্থানে এখনো ডিশের প্রিয় চ্যানেলগুলো না পেয়ে এবং অস্পষ্ট চ্যানেলের জন্য ডিশ বাবুর দিকে একের পর এক মন্তব্যের তীর ছুড়তে শুরু করেছেন গ্রাহকেরা বিশেষ করে নারীরা।

প্রসঙ্গত গত বুধবার বিকেলে শহরের পাইকপাড়া এলাকায় নিজ ব্যবসায়ীক কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলন করে সেটটপ বক্স ব্যবহারের পক্ষে নানা যক্তি দিয়ে কেনার জন্য সবাইকে আহবান জানিয়েছেন ডিশ বাবু। এসময় তিনি ডিশের চ্যানেল নিয়ে সমস্যার দায় এলাকার স্থানীয় ক্যাবল অপারেটরদের ঘারে চাপালেও পরবর্তীতে ক্যাবল অপারেটররা সেই দায় অস্বীকার করে উল্টো ডিশ বাবুর দিকে সেই নল ঘুরিয়ে দেন।

ডিশ বাবু সংবাদ সম্মেলনে বলেছিলেন, ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়তে সেটটপ বক্স লাগানোর তাগিদ সবাইকে দিয়েছি কিন্তু এটা কাউকে বাধ্যতামূলক করিনি। কেউ যদি সেটটপ বক্স না লাগায় সেকারণে তার লাইনে সমস্যা করা হবে তা কিন্তু নয়। আমি ডিশ ডিস্টিবিউট করি আর এলাকার স্থানীয় ক্যাবল অপারেটররা সাপ্লাই দেয়। এটা আসলে আমার কোন দোষ না। যারা স্থানীয় ডিশ ব্যবসা করে তারা এই সমস্যা করছে। এ জন্য স্থানীয় ক্যাবল অপারেটররা দায়ী। আর সেটটপ বক্স ৩ হাজার টাকা করে সরবরাহ করা হচ্ছে।’

গ্রাহকরা ফের অভিযোগ করে বলছেন, ‘মূল কথা হল তিনি যখন সেটটপ বক্স কেনার জন্য কয়েকটি চ্যানেল বন্ধ করে দেন তখন তিনি উপায় না পেয়ে ভ্যাট ও ডিজিটাল বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখিয়ে সবাইকে বোকা বানিয়ে গ্রাহকদের পকেট কেটে আঙুল ফুলে কলাগাছ হতে চাইছেন। তিনি কোন উপায় না পেয়ে সর্বশেষে দেশ নেত্রী শেখ হাসিনার স্বপ্ন ও সরকারের নাম ব্যবহার করে গ্রাহকদের সেটটপ বক্স কিনতে বাধ্য করছেন।

একদিকে তিনি বলছেন, ‘সেটটপ বক্স কিনলে ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়তে উপকারে আসবে তবে এটা কারো জন্য বাধ্যতামূলক নয়। কিন্তু আসলে তিনি চ্যানেলগুলো বন্ধ করে ও অনেকগুলো চ্যানেল অস্পষ্ট করে রেখে গ্রাহকদের জন্য সেটটপ বক্স বাধ্যতামূলক করে রেখেছেন। যদিও তিনি এই দায়ভার স্থানীয় ক্যাবল অপারেটরদের ঘাড়ে চাপিয়েছেন। আর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সাধারণ মানুষের পকেট কেটে ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার কথা নিশ্চয়ই বলেনি। তাহলে ডিশ বাবু কি দেশের রাজস্ব রাড়াতে নাকি নিজের রাজস্ব রাড়াতে এই কাজ শুরু করেছে সেটা সবাই ভাল করেই বুঝে।

এ বিষয়ে নাম না প্রকাশের শর্তে স্থানীয় ক্যাবল অপারেটররা বলছেন,‘ নারায়ণগঞ্জ শহরে কে (ডিশ বাবু) ডিশ চ্যানেল নিয়ন্ত্রণ করে সেটা সবাই জানে। চ্যানেল নিয়ন্ত্রণের দায়িত্ব বা অধিকার কোনটাই স্থানীয় ক্যাবল অপরেটরদের নেই। যদি কেউ এটা বলে থাকে তাহলে সে নিতান্তই তার দোষ আমাদের ধারে চাপাতে চাইছে।

তবে একাধিক সূত্রে জানা যায়, ‘ডিশ বাবু চায়না (চীনা) সেটটপ বক্স নিয়ে ব্যবসার প্লান পেয়ে যায়। তাই আর সেই প্লানের ভিত্তিতে তিনি সেটটপ বক্স বিক্রির জন্য ডিশ গ্রাহকদের জিম্মি করে আসছেন। তবে সেটটপ বক্সের দাম নিয়ে রয়েছে বিতর্ক। কেননা সেটটপ বক্স বাজারে ১৪-১৫ টাকায় পাওয়া যাচ্ছে। এটা অবশ্য ডিশ বাবুও স্বীকার করছেন। তবে এ ব্যাপারে তিনি বলেছেন, ‘আমাদের সেটটপ বক্সের দাম বেশি হওয়ার কারণ হয় এগুলোর মান ভাল।’ আসলেই কি ডিশ বাবু বেশি দামে সেটটপ বক্স বিক্রি করছে নাকি সেটার রহস্য এখনো উন্মোচিত হয়নি। তবে চায়নাতে বিভিন্ন দামে সেটটপ বক্স বিক্রি হয় সেটা  চায়না মোবাইল ফোন দেখলেই বোঝা যায়। কিন্তু ডিশ বাবুর সেটটপ বক্স বিক্রি নিয়ে তোড়জোড়ের কারণে তো ইঙ্গিত অন্য দিকে যাাচ্ছে। অন্য দিকে পরিস্থিতি আরো ঘোলাটে হচ্ছে।

স্পন্সরেড আর্টিকেলঃ