আজ মঙ্গলবার, ১৬ই আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১লা অক্টোবর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

আড়াইহাজারে শরিকের আসন নিয়ে আওয়ামীলীগের কপালে ভাজ

আড়াইহাজারে শরিকের আসন

আড়াইহাজারে শরিকের আসন

নিজস্ব প্রতিবেদক:

আওয়ামী লীগের অন্যতম শরিক দল ও সংসদের বিরোধীদল জাতীয় পার্টি (জাপা)’র নেতাকর্মীদের সঙ্গে আড়াইহাজারে শুরু থেকেই ছিল টানাপোড়েন। স্থানীয় কোন অনুষ্ঠানে জাপার নেতাদের আমন্ত্রন করা হয়নি। সেফ আওয়ামী লীগের ক্ষমতায় যাওয়ার সিঁড়ি হিসেবে ব্যবহার হয়েছে এদেশে একটানা ৯ বছর রাষ্ট্রক্ষমতায় থাকা দলটি।

সরকারী দল থেকেও ছোট্রজগনার্থ হয়ে থাকা দলটি এবার গজড়ে উঠেছে বলে দাবী করছেন দলটির নেতারা। আগামী সংসদ নির্বাচনে তারা তাদের ন্যায্য হিসেব বুঝেই জোটে থাকা না থাকার কথা ভাবছেন। নিজের কানকেটে অন্যের যাত্রা শুভ করার সুযোগ আর দিচ্ছে না পল্লীবন্ধু এরশাদ। এরই মধ্যে সারাদেশের প্রার্থী নিয়ে বেশ কয়েকবার বৈঠক করেছেন তিনি। আওয়ামী লীগের জনপ্রিয়তায় যে ধস নেমেছে, সেটি তিনি পুরোপুরিই আঁচ করতে পেরেছেন। এরই ফলোশ্রুতিতে তিনি সরকারি দলের সঙ্গে আসন ভাগাভাগিতে বারবার বিগড়ে যাচ্ছেন। নানা কারণে ভোটের মাঠে আওয়ামী লীগের দুর্বলতার পুরো সুযোগটি এবার নিজের করে নিতে প্রস্তুত জাতীয় পার্টির নেতারা। ঘোলআনাই বুঝে এবার ‘পা’ দিবেন আওয়ামী লীগের ফাঁদে। জাপার নেতারা বলছেন নারায়ণগঞ্জ-২, আসনটি এবার আওয়ামী লীগকে ছাড় দিতে হচ্ছে। এতে পুরোপুরি বেকায়দা এমপি বাবু। প্রার্থী চূড়ান্ত হচ্ছে এমন খবরে আড়াইহাজারে জাতীয় পার্টির নেতাকর্মীদের মধ্যে কোন কোন এলাকায় মিষ্টিও বিতরণ করা হয়েছে বলে জানা গেছে। এরই মধ্যে চাঙ্গা হয়ে উঠেছে দলটি

অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা। অপরদিকে কপালে চিন্তারভাজ পড়েছে বাবু শিবিরে। থানা আওয়ামী লীগের শীর্ষনেতারাও এবার চাচ্ছেন এমপি বাবুর পরিবর্তন। নানা গুনজনে সরগম হয়ে উঠেছে আড়াইহাজারের রাজনীতিক পরিবেশ। তবে আগামী এক সপ্তাহের মধ্যেই দুই প্রার্থীর বিষয়টি পরিস্কার হয়ে যেতে পারে বলে জানা গেছে। তবে দলীয় মনোনয়ন নিয়ে ফেসবুকে নানা গুজব ছড়ানো হচ্ছে। জোটের মনোনয়ন নিয়ে তিক্ষèদৃষ্টি রাখছেন মমতাজ, ইকবাল ও এমদাদুল হক ভূঁইয়া।
আড়াইহাজার থানা জাতীয় পার্টির সভাপতি এম এ হান্নান মোল্লা বলেন, গেল ৯ সেপ্টেম্বর জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে

দলটির গুরুত্বপূর্ণ নেতাদের নিয়ে একটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। ওই বৈঠকে নারায়ণগঞ্জের দু’টি আসনের প্রার্থী চূড়ান্ত হয়। এর মধ্যে নারায়ণগঞ্জ-৫, আসন থেকে পারভীন ওসমান ও আড়াইহাজার থেকে আলমলগীর সিকার লোটন। দুই প্রার্থীর নামসহ প্রার্থীদের নামের তালিকা দিয়ে জাতীয় পার্টির পক্ষ থেকে জোটের কাছে আসনের জন্য আবেদন করা হয়েছে। তিনি বলেন, এবার নারায়ণগঞ্জ-২, আসনটি ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগকে ছাড় দিতে হচ্ছে এতে কোন সন্দেহ নেই। জাতীয় পার্টিকে জোটে রাখতে হলে এ আসনটি ছেড়ে দিতেই হবে। জাতীয় পার্টির যুবসংহতির কেন্দ্রীয় কমিটি থেকে সকল নেতাকর্মীরা একত্রিত হয়ে আলমগীর সিকদার লোটনের নাম প্রস্তাব করা হয়েছে।

হান্নান আরও বলেন, এ সরকারের দশ বছরে স্থানীয় কালাপাহাড়িয়ায় লাশের রাজনীতি হয়েছে। বর্তমানে দেশে ব্যবসা-বাণিজ্যের বারোটা ভেজে গেছে। বিদ্যুৎ ও গ্যাসের অভাবে স্থানীয় অনেক শিল্পপ্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে গেছে। মানুষের ভোটের অধীকার পুরোপুরি অহরণ করা হয়েছে। মৃত ব্যাক্তিরা ভোট দিচ্ছে। মৃত ব্যাক্তিদের নামে মামলা হচ্ছে। দেশের মানুষকে নিয়ে হাঁসিঠাট্রা করা হচ্ছে। সর্বত্রই এক অরাজক পরিস্থিতি বিরাজ করছে। অতীতে জাতীয় পার্টির শাসনআমল ছিল শান্তিপূর্ণ। জাতীয় পার্টি ছিল জনবান্ধব সরকার। আওয়ামী লীগ বিএনপির প্রতি মানুষের অস্থা উঠে গেছে।

থানা যুবসংহতির একনেতা বলেন, দলীয় মনোনয়ন নিয়ে কিছু পত্রিকা কল্পনিক ও ভুয়া সংবাদ প্রকাশ করে জনমনে প্রতিনিয়তই বিভ্রান্তির ছড়াচ্ছেন। এসব পত্রিকাগুলো কিছু ব্যাক্তির আগ্রাবহ হয়ে কাজ করছেন। অক্টোবর মাসে দেশের রাজনৈতিক দলের প্রার্থীদের মনোনয়ন চূড়ান্ত হবে। এর আগে নয়।

এদিকে জাতীয় পার্টির সাধারণ সম্পাদক তাজুল ইসলাম বলেন, জাতীয় পার্টির প্রার্থী নিয়ে আড়াইহাজারবাসীর মধ্যে ব্যাপক উৎসাহ রয়েছে। আলমগীর সিকদার লোটন একটি ঐতিহ্যবাহি পরিবারের সদস্য। তিনি কোন দলছুট নেতা নয়। সারাজীবন হুসাইন মুহাম্মদ এরশাদ-এর সঙ্গে থেকে রাজনীতি করেছেন। তার কোন লোভ লালসা নেই। তিনি আড়াইহাজারবাসীর জন্য কিছু করতে চান। রাজনীতিতে একটি রুদ্ধশ্বাস পরিবেশ সৃষ্টি করা হয়েছে। মানুষের কথা বলার কোন অধীকার নেই। জিম্মি হয়ে পড়েছে পুরো মানুষ। কেউ প্রাণভরে নিঃশ্বাস নিতে পারছে না। মানুষের মধ্যে কোন উৎসাহ-উদ্দীপনা নেই। সবার মধ্যে এক ধরনের ভয়ভীতি কাজ করছে। কিছু সাংবাদিক সরকারের সুবিধা পেলের অনেকেই বঞ্চিত। আড়াইহাজারে জাতীয় পার্টির এমপি হলে মানুষকে বুকে টেনে নেওয়া হবে। শ্বাসরুদ্ধকর পরিবেশ থেকে মানুষকে মুক্তি দেওয়া হবে। হানাহানি ও হিংসা-বিদ্বেষের রাজনীতি এখানে চলবে না।