আজ সোমবার, ১০ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২৫শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

আসছে ঝড়ের মৌসুম, আতঙ্কে ভোলার চরাঞ্চলের সাধারন জনগন

আসছে ঝড়ের মৌসুম

আসছে ঝড়ের মৌসুম

জুবায়ের চৌধুরী পার্থ, ভোলা প্রতিনিধিঃ

সামনেই আসছে ঝড়-বৃষ্টির মৌসুম। মৌসুমি ঘুর্নঝড়, অতিরিক্ত বৃষ্টিপাত, বন্যা হওয়া ঘটনায় উপকূলীয় জেলা ভোলার চরাঞ্চলের সাধারন মানুষ রয়েছে আতঙ্কে। কারন পর্যাপ্ত সাইক্লোন সেল্টার না থাকায় দুর্যোগ ঝুঁকি মাথায় নিয়েই বসবাস করে যাচ্ছে তারা। অন্যদিকে যে সাইক্লোন সেল্টার গুলো রয়েছে সেগুলো আবার পরিত্যাক্ত হয়ে আছে।

সরেজমিনে গিয়ে ঘুড়ে জানা যায়, নদী ভাঙ্গনের কারনে ভোলার বিছিন্ন চরাঞ্চগুলোতে জনবসতির সংখ্যা দিন দিন বেড়ই চলেছে। ফলে দূচিন্তা ছাড়া কিছুই করার থাকে না সাধারন মানুষ গুলোর। এদিকে ভোলায় ৫০টি সাইক্লোন সেল্টার ইতিমধ্যে পরিত্যাক্ত ঘোষনা করা হয়েছে। গত কয়েক বছরের বিভিন্ন ঘূর্নিঝঁড়, বন্যায় হাজার হাজার ঘড়বাড়ীসহ শতাধিক মানুষের প্রানহানির ঘটনা ঘটেছে।

এদিকে রামদাসপুর, মাঝের চর, চর নিজাম, মদনপুর, নেয়ামতপুর, হাজিপুর, চর মোজাম্মলসহ জনবসতি আছে এমন ২০টি চরে প্রায় ২ লাখ মানুষের বসবাস থাকলেও নেই কোন আশ্রয়কেন্দ্র। চর গুলোতে লক্ষাদিক মানুষ যুগ যুগ ধরে ঝুঁকির মধ্যে বসবাস করছে।

উপকূলের বাসিন্দারা জানান, গত কয়েক বছরে সিডর, আইলা, নারগিছ, রোয়ানু, মহাসেনসহ ছোট বড় দুর্যোগে কোন সতর্কবার্তা পাচ্ছেনা উপকুল বাসী। দুর্যোগ কাটিয়ে ঘুরে দাড়ানোর চেষ্টা করলেও ফের দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে তারা। পাচ্ছেনা কোন সাহায্যে সহযোগিতা।

রামদাসপুর গ্রামের বাসিন্দা খোকন মাষ্টার বলেন, আমাদের রামদাসপুর গ্রামে কোন সাইক্লোন সেল্টার নেই। বড় ধরনের কোন বন্যা হলে কিভাবে আমরা বাচঁবো তা নিয়ে আমরা আছি ঘোড়ের মধ্যে। তাই আমাদের সবার অনুরোদ যত দ্রুত সম্ভব রামদাসপুর গ্রামে একটি সাইক্লোল সেল্টার নির্মান করা হয়।

মাঝের চর নিবাসী কবির ফরাজী জানান, জনসংখ্যা অনুযায়ী পর্যাপ্ত সাইক্লোন সেল্টার নির্মান হয়নি। আর যেগুলো আছে সেগুলো পরিত্যক্ত হয়ে আছে। সেগুলো সংরক্ষনের জন্য প্রশাসনের দ্রুত হস্ত ক্ষেপ কামনা করি। কিন্তু ঘূর্নিঝড়ের সতর্ক সংকেত ঘোষনা হলে এক এক কেন্দ্র প্রায় হাজার হাজার মানুষ এসে জমা হয় তখন গাদাগাদি করে থাকতে হয় । আবার অনেক ঝুঁকিপূর্ন এলাকায় নেই সাইক্লোন সেল্টার। অনেকগুলো আবার রক্ষনা-বেক্ষনের অভাবে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।

ঘূর্নিঝঁড় প্রস্তুতি কর্মসূচী এর উপ পরিচালক মো: সাহাবুদ্দিন জানান, অনেক এলাকায় সাইক্লোন সেল্টারে যাওয়ার রাস্তা খুবই খারাপ। সাইক্লোন সেল্টারের অভাবে মোঠ জনসংখ্যার অর্ধেকেরই বেশী থাকতে হয় সাইক্লোন সেল্টারের বাহিরে। চরাঞ্চলে যে পরিমান সেল্টার রয়েছে জনসংখ্যা অনুয়ায়ী তা পর্যাপ্ত নয়। তাই ভোলায় আরোও প্রায় ২০০ সাইক্লোন সেল্টার নির্মান কার প্রয়োজন।

ভোলা রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির যুব প্রধান আদিল হোসেন তপু জানান, বিভিন্ন চরাঞ্চলের মানুষগুলোকে উদ্ধার করতে আমাদের রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির কর্মীরা নিরলস ভাবে কাজ করে থাকে। বিগত বছরের ন্যায়ে আমরা এ বছরেও ব্যাপক প্রস্তুতি নিচ্ছি।

জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মাসুদ আলম সিদ্দিক জানান, চরাঞ্চলের বিপদগ্রস্ত মানুষদের নিরাপত্তা দেওয়ার জন্য আমাদের প্রায় ছয় শতাদিক সাইক্লোন সেল্টার প্রস্তুত রয়েছে। পাশাপাশি বিভিন্ন চরে মুজিব কেল্লা তৈরি করার প্রক্রিয়া চলছে। জনসংখ্যার অনুপাতে আরো ২১ টি সাইক্লোন সেল্টার তৈরি করা হবে।

গত কয়েক বছরের ছোট-বড় বন্যায় উপকূল লন্ডবন্ড হয়ে ধ্বংসলীলায় পরিনত হলেও আজো অনিরাপদ ভোলার চরাঞ্চলের মানুষ। তাই পর্যাপ্ত সাইক্লোন সেল্টার তৈরি করার দাবি উপকুল বাসীর।