নিজস্ব প্রতিবেদক:
পাকিস্তানের নাগরিক নারায়ণগঞ্জে গোপন বৈঠক করছেন অভিযোগ করে একে বড় ধরনের ষড়যন্ত্র দেখছেন নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের এমপি শামীম ওসমান যিনি ২০০১ সালের ১৬ জুন চাষাঢ়া আওয়ামী লীগ অফিসে বোমা হামলায় আহত হয়েছিলেন।
সেই ঘটনা স্মরণ করে বলেন, ‘যেহেতু আমরা ১৬ জুনে টার্গেট ছিলাম সেহেতু আমার ধারণা এবারও আমি টার্গেট।’
তিনি বলেন, আগামী ২ থেকে ৩ দিন নারায়ণগঞ্জে কিছু একটা ঘটতে পারে। কারণ ইতোমধ্যে পাকিস্তানের নাগরিক নারায়ণগঞ্জ এসে গোপন বৈঠক করে। নাম্বারবিহীন গাড়িতে করে ওই বৈঠক হচ্ছে। এটা খুব আতংকের।
২৫ ডিসেম্বর মঙ্গলবার সন্ধ্যায় নারায়ণগঞ্জ শহরের চাষাঢ়ায় রাইফেল ক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে শামীম ওসমান এসব কথা বলেন।
শামীম ওসমান বলেছেন, ‘২০০১ সালের ১৬ জুন নারায়ণগঞ্জের ইতিহাসে সবচেয়ে ঘৃণতম বোম ব্লাস্ট হয়েছে। সেদিন আমাকে হত্যার উদ্দেশ্যে বোম ব্লাস্ট করা হয়েছে। এবার বাংলাদেশ নির্বাচন বন্ধ করার জন্য আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্রের একজন অংশীদার এবং আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসী তারেক জিয়ার নেতৃত্বে সেই পাকিস্থানি আইএসআই
নেটওয়ার্ক একটি প্রক্রিয়া চালিয়ে একটি ঘটনা ঘটনানোর চেষ্টা করবে। সেটা হয়তো খুব দ্রুততার সাথে ঘটানোর চেষ্টা করা হবে। আমাদের গত কয়েকদিনের তথ্যানুসারে পাকিস্তান এম্বাসি ও পাকিস্তানি নাগরিক নারায়ণগঞ্জের বিভিন্ন এলাকায় আনাগোনা করছে। এবং বিভিন্ন স্থানে তারা গোপন বৈঠক করেছেন। সেই বৈঠকের মাধ্যমে কোমলমতী মুসলমান মাদ্রাসার ছাত্রদের ব্যবহার করে বড় ধরনের ঘটনা আরো অনেক জায়গায় ঘটানোর চেষ্টা করবে। তার মধ্যে একটি জায়গা হচ্ছে নারায়ণগঞ্জ।
ধানের শীষ প্রতীকের প্রার্থী ও প্রতিদ্বন্দ্বি মনির হোসাইন কাশেমী সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘নারায়ণগঞ্জে আমার বিরুদ্ধে ধানের শীষের যে প্রার্থী আছেন কাসেমী সাহেব তিনি বিনা করণে অভিযোগ তুলেছেন। গতকালও আমার ক্যাম্প পোড়ানো হয়েছে। এটা একটা পার্ট অফ এ কন্সপাইরেসি (ষড়যন্ত্র)। দামি দামি গাড়ির ভেতরে অনেকে মিটিং করছে। বিদেশিরা মিটিং করছে।
তিনি আরো বলেন, এ দেশের মানচিত্রে আবারো স্বাধীনতা বিরোধীরা আঘাত আনতে পারে। সেকারণে আমি লিখিতভাবে রিটার্নিং অফিসারের কাছে চিঠি পাঠাচ্ছি যাতে কাসেমীকে যেন পরিপূর্ণ নিরাপত্তা দেয়া হয়। প্রয়োজনে প্রশাসন ও নির্বাচন কমিশনের লোকজন তার সাথে থাকুক। যত নিরাপত্তা প্রয়োজন তাকে দেয়া হোক। আমাদের তরফ থেকে কোন বাধা থাকবে না। কিন্তু তারপরও একটা ক্ষেত্র তৈরি করা হবে। তাই আমি আপনাদের সাক্ষি রাখলাম।
শামীম বলেন, আমাকেই নয় আরো অনেককেই টার্গেট করা হয়েছে। ২১আগষ্ট শেখ হাসিনা সহ আরো অনেককে যারা বোম ব্লাষ্ট করে মারতে চেয়েছিল তারাই এই নায়করা লন্ডনে বসে নাটাই উড়াচ্ছে। নারায়ণগঞ্জে একটা সুন্দর পরিবেশ রয়েছে। যেখানে ধাকাধাক্কি পর্যন্ত হয়নি। সেখানে কাসেমীর মত প্রার্থী দেয়া হয়েছে একটা প্লট তৈরি করার জন্য। এতে যদি আমাদের কোন দোষ থাকে তবে যা ব্যবস্থা নেয়ার নিবেন।
তিনি বলেন, এ দেশকে আফগানিস্তানের মত একটা দেশ বানাতে চেষ্টা করা হচ্ছে। বিদেশি নাগরিক যদি পাকিস্তানি নাগরিক হয় তবে তা তদারকি ও দৃষ্টি রাখার জন্য আহবান জানাবো। দেশটা আমাদের সবার। কে নৌকা কে লাঙ্গল কে ধানের শীষ দ্যাটস নট এ বিগ ডিল। ফ্যাক্ট ইজ দেশটা আমদের সবার।
তিনি আরো বলেন, ওরা একাত্তরে মা বোনের সম্ভ্রম নিয়েছে মানুষ মেরেছে, ২০১৪ সালে মানুষ পুড়িয়ে মেরেছে, ২১ আগষ্ট বোমা মেরেছে ওরা শেখ হাসিনাকে মেরে দেশটাকে অস্থিতিশীল করতে চেয়েছিল। ওরা নির্বাচন বানচাল করতে চায়। রাজনীতির মধ্যে এসব পড়েনা। এই কাজটি পরিচালনা করছে আরেক নরঘাতক তারেক রহমান লন্ডন থেকে বসে বসে এ কাজ করছে। সে আরেকটি ঘটনা ঘটিয়ে নির্বাচন বানচালক করতে পারে। আগামী ২-৩ দিনের মধ্যে ঘটনা ঘটাতে পারে। আমি বিশ্বাস করি তারা পারবেনা। কারণ নারায়ণগঞ্জের মানুষ সচেতন আছে।
শামীম ওসমান বলেন, জঙ্গি প্রার্থী কিভাবে মনোনয়ন পায় তা আমি জানি না। এটা বিএনপি ভালো বলতে পারবে। এসময় জঙ্গি প্রার্থীর প্রার্থীতা চ্যালেঞ্জ করে আদালতে যাবেন কিনা জানতে চাইলে তিনি তাতে নারাজি জানিয়ে বলেন, চ্যালেঞ্জ করার কোন ইচ্ছা আমার নেই। বিএনপি নিজেই জঙ্গি দলে পরিণত হয়েছে। তারেক রহমান লন্ডন থেকে পাকিস্তানের সাথে সখ্যতা করে দেশে জঙ্গি তৎপরতা চালাচ্ছে।