আজ শুক্রবার, ১৫ই চৈত্র, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ, ২৯শে মার্চ, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

অভিমান ভুলে সবাইকে এক হওয়ার আহবান তৈমূরের

সংবাদচর্চা রিপোর্ট
এক যুগেরও বেশি সময় ধরে ক্ষমতার বাইরে থাকা বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি’র বেশিরভাগ নেতাকর্মীরাই রাজপথ থেকে হারিয়ে গেছে। দল ও দলের নেতাকর্মীদের মধ্যে পড়েছে ভাটা! নারায়ণগঞ্জ বিএনপি’র অধিকাংশ নেতাকর্মীরাই ঝিমিয়ে পরেছেন। আর তাদের ঘুম ভাঙাতে আবারো মাথাচাড়া দিয়ে উদয় হয়েছেন বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা ও নারায়ণগঞ্জ বিএনপি’র অবিভাবক এডভোকেট তৈমূর আলম খন্দকার। কোর্টে আইজীবিদের নিয়ে অনশন, জেলার বিভিন্ন জায়গায় নেতাকর্মীদের নিয়ে সভা ও বৈঠক করে যাচ্ছেন তিনি। তার পরিকল্পনা অনুযায়ী আগামী পহেলা মে’র দিন ১০ হাজার লোক নিয়ে দলীয় নেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবী জানাবেন তিনি। নারায়ণগঞ্জের সিনিয়র নেতাকর্মীরা সহ সর্ব স্তরের জণসাধারনকে নেত্রীর মুক্তির দাবীতে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহবান জানিয়েছেন। শুধু নারায়ণগঞ্জ নয় পুরো বাংলাদেশকে জাগাতে উঠে পরে লেগেছেন তিনি। এমনটাই জানা যায় তৈমূর আলম খন্দকারের কাছ থেকে।

তৈমূর আলমের এমন উদ্যোগকে আশার আলো হিসেবে দেখছেন বিএনপির তৃণমূলের নেতাকর্মীরা। তাদের মতে, নেত্রীর মুক্তির দাবীতে অনেক পূর্বেই এমসন উদ্যোগের প্রয়োজন ছিলো। কিন্তু দেরিতে হলেও তার এই উদ্যোগকে সাধুবাদ। তার নেত্বতেৃ যদি জেলা ও মহানগর বিএনপির নেতাকর্মীরা ঐক্যবদ্ধ হয় তাহলে নারায়ণগঞ্জ থেকেই পুরো বাংলাদেশ থেকে একটি বার্তা পাঠানো সম্ভব। বিএনপির বর্তমান অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে ঐক্যবদ্ধ হওয়া ছাড়া আর কোন উপায় নেই।

দৈনিক সংবাদচর্চার পত্রিকার প্রতিবেদককে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে তৈমূর আলম খন্দকার সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহবান জানান। আমার বিরুদ্ধে অনেকেই থাকতে পারে কিন্তু আমি তো পত্রিকাতেই ঘোষণা দেই। যারা খালেদা জিয়াকে যারা ভালোবাসে তাদের মনে রাখতে হবে যে তিনি জেলখানায়। আমি যেই প্রোগামগুলো করি তা খালেদা জিয়ার জন্যই করি। যারা দলকে ভালোবাসে তাদের খালেদা জিয়া জেলখানায় এটা মনে রেখে স্বতঃস্ফুর্তভাবে এগিয়ে আসতে হবে। এটা আমার ব্যক্তিগত কোন দাওয়াত না, যে বাড়ি বাড়ি গিয়ে দিয়ে আসতে হবে। আমি এখন আইনজীবিদের নিয়ে নেমেছি। আমি এখন শুরু করেছি। আগামী শনিবার কেন্দ্রীয় পার্টি অফিসে একটা প্রোগাম করবো। নারায়ণগঞ্জের সকল আইনজীবিদের লিফলেট দেয়া হয়েছে, ঢাকা বারে লিফলেট দেয়া হয়েছে সেই সাথে সারা বাংলাদেশে লিফলেট পাঠানো হয়েছে। আমাদের কেন্দ্রীয় পার্টি অফিসে অনশন করার পর আমি বিভিন্ন জেলায় যাবো সেখানে অনশন করবো। প্রত্যেকটা জেলায় জেলায় যাওয়ার বিষয়ে আমি কর্মসূচী নিয়েছি। খালেদা জিয়া জেলে সেক্ষেত্রে তাকে বের করার কোন উদ্যোগ কিংবা সম্ভবনা আমি দেখতে পাচ্ছি না। আমি আগেই বলেছি যে, কোন দয়া বা করুণা করে খালেদা জিয়া মুক্ত হবে না। কোন প্রেরণা আমরা চাইনা, নিঃশর্ত মুক্তি চাই। সারা বাংলাদেশকে জাগানোর কর্মসূচী আমরা নিয়েছি। আমি নারায়ণগঞ্জ জেলা ও মহানগরের কোন পদ-পদবী চাইনা। আমি চাই যে সবাই যেনো নিজ দায়িত্বে এসে অংশগ্রহণ করে।

আপনি নারায়ণগঞ্জ বিএনপির অবিভাবক হিসেবে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ করার চেষ্টা করছেন। সেক্ষেত্রে নারায়ণগঞ্জ জেলা ও মহানগর বিএনপি’র নেতাকর্মীদের কাছ থেকে ঐক্যবদ্ধতার বিষয়ে কোন আভাস পাচ্ছেন কিনা? এমন প্রশ্ন জানতে চাইলে তিনি আরও বলেন, অনেকেই আসে। ২৬ই মার্চ তো বহু লোক এসেছিলো। আগামী পহেলা মে’র দিন আমি আশা করছি যে, ১০ হাজার লোক সমাবেতো করবো। আমি তো চেষ্টার কোন ত্রুটি রাখছি না সব জায়গাতেই কথা বলছি। এখন খালেদা জিয়া জেলে, এখানে গোসা কিংবা গাল ফুলানোর কিছু নেই। রাগ করে বসে থাকার কিছু নেই। যেখানে প্রোগাম দেয়া হবে খালেদা জিয়াকে ভালোবাসলে সবাইকে সেখানে উপস্থিত থাকতে হবে। দাওয়াতের কিছুই নেই। ওয়ান ইলেভেনের সময় খালেদা জিয়াকে জেলে নেওয়ার পরে তো আমরা বসে থাকি নাই। ইচ্ছাকৃতভাবে আমরা আটক হয়েছি। তারেক জিয়ার জন্য ফাইট (যুদ্ধ) করতে গিয়ে আমরা আটক হয়েছি। আমার বিরুদ্ধে সমালোচনা করার অনেক লোক থাকতে পারে। এখন সময় হলো দলের পাশে থাকার। অনেকেই বলে যে লোক কম হয়েছে কেনো? যারা অনশন করে তারাই তো প্রকৃত দেশপ্রেমিক। যেখানে আমরা অনশন করবো সেখানে ডিবি’র গাড়ী উপস্থিত থাকে। কিছুদিন আগেও পুলিশ আমাকে রাস্তার মধ্যে গরুর মতো পিটিয়েছে। পূর্বেও রাস্তার মাধ্যে আমদের গুলি করা হয়েছে কিন্তু আমরা দৌড় দেই নাই।

বিলম্ব না করে নারায়ণগঞ্জ বিএনপি’র সকল স্তরের নেতাকর্মীদের ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহবান জানিয়ে তিনি বলেন, সকলেই ঐক্যবদ্ধ হন। আর থেমে থাকলে চলবে না। নেত্রীর মুক্তি না হওয়া পর্যন্ত আমরা আন্দোলন চালিয়ে যাবো।
তৈমূর আলম খন্দকারের এমন মন্তব্যর প্রতিক্রিয়া জানতে নারায়ণগঞ্জ বিএনপির বেশ কিছু নেতাকর্মীদের সাথে কথা হয় দৈনিক সংবাদচর্চার প্রতিবেদকের। তারা বলেন, নারায়ণগঞ্জ বিএনপি’র নেতাকর্মীরা যদি ঐক্যবদ্ধ থাকতো তাহলে অনেক আগেই এই সরকারের পতন হতো। নারায়ণগঞ্জ বিএনপি’র নেতাকর্মীদের মধ্যে কোন ঐক্য নাই যার ফলে তাদের এই বেহাল অবস্থা। আজকে ১৪ মাস যাবৎ নেত্রী জেলে যিনি কিনা দেশের তিন বারের প্রধানমন্ত্রী ছিলেন। আজকে তিনি জেলে মৃত্যু শয্যায়। অথচ এতো নেতাকর্মী থাকা সত্ত্বেও নেত্রী জেলে পচেঁ মরছেন। কেউ কোন প্রতিবাদ জানাচ্ছে না। নারায়ণগঞ্জ সকল স্তরের নেতাকর্মীরা যদি একত্রে রাজপথে নামতো তাহলে নারায়নগঞ্জ স্তব্ধ করে দেয়া কোন ঘটনা না। শুধুমাত্র নারায়ণগঞ্জ না বিএনপি’র নেতাকর্মীরা যদি ঐক্যবদ্ধ হয় তাহলে নেত্রীর মুক্তির দাবীতে পুরো দেশ অচল করে দেয়া সম্ভব।

তৈমূর আলম খন্দকারের এমন উদ্যোগ স্বাগত জানিয়ে তারা বলেন, আমরা আছি, থাকবো। আমরা তার প্রতিটি প্রোগামে উপস্থিত থাকবো। খালেদা জিয়ার মুক্তি না হওয়া পর্যন্ত তৈমূরের প্রতি পিছপা না হওয়ার আহবান জানান তারা।

সচেতন মহলের মতে, তারা চাইলেই ঐক্যবদ্ধ হতে পারে এবং তাদের নেত্রীর মুক্তির দাবী জানাতে পারে। তাদের নেত্রী খালেদা জিয়া জেলে এটা তাদের ব্যর্থতা। আর তাদের ব্যর্থতার ফল পাচ্ছেন বেগম খালেদা জিয়া। তবে তৈমূর আলম খন্দকারের উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়ে তারা যদি ঐক্যবদ্ধ হতে পারে তাহলে তাদের নেত্রীর মুক্তির দাবী সেই সাথে পরিবর্তন আনা সম্ভব।

স্পন্সরেড আর্টিকেলঃ