সংবাদচর্চা রিপোর্ট : নারায়নগঞ্জ সিদ্ধিরগঞ্জ মিজমিজি আলআমিন নগর এলাকায় ছেলে ধরা সন্দেহে গণপিটুনিতে বাকপ্রতিবন্ধি সিরাজ নিহতের ঘটনায় ৮ আসামীর বিরুদ্ধে ১ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছে আদালত। সোমবার (২২ জুলাই) সকালে সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট নুরুন্নাহার ইয়াসমিনের আদালতে এ রিমান্ড মঞ্জুর করেন। এর আগে সিদ্ধিরগঞ্জ থানা পুলিশ ১০ দিনের রিমান্ড চেয়ে আদালতে আবেদন করেন। পরে আদালত মামলার তদন্ত সাপেক্ষে প্রত্যেক আসামীর বিরুদ্ধে ১ দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন। সিদ্ধিরগঞ্জ থানা মামলা নং ৫৪/৭।
রিমান্ড প্রাপ্ত আসামীরা হলেন, দেলোয়ার হোসেন (৩৫), সোহেল (২৪) হাজী মো. মোশারক মাতবর (৪২), জোনায়েত হোসেন শান্ত (২১), হাফিজুল (২৮),মজনু (২৮), আলামিন (১৯) ও আবুল কালাম আজাদ (২২)।
প্রসঙ্গত, দশ বছর পূর্বে বাকপ্রতিবন্ধি সিরাজের সাথে বিয়ে হয় শামসুন্নাহারের। বিয়ের পর তাদের ঘরে একজন কন্যা সন্তানের জন্ম হয়। এরই মধ্যে মিজমিজি পূর্ব পাড়া এলাকার বিদ্যু মিস্ত্রি আব্দুল মান্নান ওরফে সোহেলের সাথে সিরাজের স্ত্রী পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়েন। একপর্যায়ে সিরাজের কন্যা সাদিয়াকে নিয়ে তারা উভয়ে পালিয়ে যায়। অনেক খুঁজাখুঁজির পরও তাদের পাওয়া যায়নি। পরে গত ৫ মাস আগে সিরাজের কাছে তার স্ত্রী একটি ডির্ভোসের কাগজ পাঠায়। আর সেই থেকে হতাশা গ্রস্থ হয়ে যায় সিরাজ।
কিন্তু নিজের কন্যা সন্তানের সন্ধান পেতে সিরাজ অনেক জায়গায় ঘুরেন। এরই মধ্যে সিরাজ কিছুদিন পূর্বে মিজমিজি আলআমিন নগর এলাকায় নিজের কন্যা সন্তানের সন্ধান পান। কন্যা সন্তানকে দেখতে গত ২০ জুলাই সিরাজ সেখানে দেখতে যান। এসময় তার স্ত্রীর বর্তমান স্বামী আব্দুল মান্নান ওরফে সোহেল সিরাজকে দেখে বলে এই লোকটি ছেলে ধরা ও গলাকাটা। এক পর্যায়ে এলাকাবাসির গণদোলাইয়ের শিকার হয় হতভাগা বাক প্রতিবন্ধি এই সিরাজ। এতে নেতৃত্ব দেন মান্নান ওরফে সোহেল। পরে সিরাজকে ৩০০ শষ্যা বিশিষ্ট হাসপাতালে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক সিরাজকে মৃত ঘোষনা করেন। পরে ২১ জুলাই এলাকাবাসি সিরাজের মৃত্যুকে একটি পরিকল্পিত হত্যা বলে বিচারের দাবীতে বিক্ষোভ করেন।
পরে এ ঘটনায় নিহতের পক্ষ থেকে ৭৬ জনের নাম উল্লেখ্য করে ৪০০ জনকে অজ্ঞত ব্যক্তিকে আসামী করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। সেই মামলায় ২১ জুলাই রাতেই সিদ্ধিরগঞ্জ থানা পুলিশ ৮ জনকে গ্রেফতার করে।