আজ শনিবার, ১লা অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৬ই নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

নাচে-গানে আনন্দ শোভাযাত্রায় সরস্বতী পূজার সমাপনী

সরস্বতী পূজা

সরস্বতী পূজা
শহিদুল ইসলাম লিখন, মাদারীপুর:
নানা আয়োজনে মধ্যে দিয়ে শেষ হলো তিনদিন ব্যাপী সরস্বতী পূজা। বুধবার পূজার শেষের দিনে নাচে-গানে আনন্দ উল্লাস আর শোভাযাত্রার মধ্য দিয়ে শেষ হয়েছে পূজার আনুষ্ঠানিকতা। পরে বুধবার রাত সাড়ে ১২টার দিকে শোভাযাত্রায় অংশগ্রহণকারী আয়োজকদের দেয়া হয় পুরস্কার।
এবার প্রতিমা তৈরিতে প্রথম স্থান হয়েছে উত্তরণ ক্লাব, দ্বিতীয় শিশু জাগরণ ক্লাব ও তৃতীয় হয়েছে সুকুমার সংঘ। আলোকসজ্জায় প্রথম হয়েছে রশিদ ঘোষ স্মৃতি সংঘ, দ্বিতীয় স্বর্ণ শিল্পী সমিতি ও তৃতীয় হয়েছে নিউ নবারণ ক্লাব। পুরস্কার হিসেবে দেয়া হয় রেফ্রিজারেটর ও টেলিভিশন। এছাড়াও সরস্বতী পূজা উপলক্ষে সবার জন্য ছিল বিশেষ পুরস্কার।
আয়োজকরা জানায়, ২২ জানুয়ারী সোমবার শিক্ষার্থীদের অঞ্জলীর মধ্য দিয়ে এই পূজার সূচনা হয়। এবার জেলায় ৩০০ টিরও বেশি অস্থায়ী মন্ডপে সরস্বতীর পূজা হলেও শহরের ৭০টিরও বেশি অস্থায়ী মন্ডপে বড় আকারে সরস্বতী পূজার আয়োজন করা হয়। মাদারীপুর পৌর শহরে শত বছর ধরে এ পূজার ঐতিহ্য ধরে রাখতে ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে সব বর্ণের মানুষের অংশগ্রহণে এই উৎসব জমকালো আয়োজনে পালন করা হয়। পূজার আনুষ্ঠানিকতা থাকে দুই দিন। আর একদিন থাকে শোভাযাত্রা। শেষ দিনে শোভাযাত্রা দেখতে আসা দর্শনার্থীদের সুবিধার্থে মাদারীপুর-শরিয়াতপুর-চাঁদপুর আঞ্চলিক সড়কটি রাত ৮টা থেকে ১২টা পর্যন্ত বন্ধ করে রাখা হয়।
সরেজমিনে দেখা যায়, একটি পিকআপ ভ্যানে দেবীর প্রতিমা বসিয়ে নানা রঙ্গে সাজিয়ে অস্থায়ী মন্ডপ তৈরি করা হয় ও অন্য আরো একটি ট্রাকে মধ্যে জেনারেটর বসিয়ে সাউন্ড সিস্টেম ও আলোকসজ্জার ব্যবস্থা করে পূজার আয়োজকরা। এরপরেই শোভাযাত্রার জন্য বুধবার রাত ৮টা থেকে মাদারীপুর-শরিয়াতপুর-চাঁদপুর আঞ্চলিক সড়কের একে একে জড়ো হয় ৭০টিরও বেশি মন্ডপ। আর মন্ডপগুলোকে ঘিরে নাচে-গানে আনন্দ উল্লাসে মেতে ওঠে কয়েক হাজার মানুষ।
ফরিদপুরের ভাঙ্গা থেকে আসা দর্শনার্থী সাগর কর্মকার বলেন, সরস্বতী পূজা দেখতে তিন আগে থেকেই মাদারীপুরে আসি। পূজার আনন্দ আড্ডা ছাড়াও শোভাযাত্রা অংশগ্রহণের মজাই আলাদা। শোভাযাত্রায় আমাদের সবচেয়ে বেশি আনন্দ হয়। তাই বার বার এই দিনে মাদারীপুর আসি।
যশোর থেকে আসা দর্শনার্থী রাইমা তিথি বলেন, প্রতি বছর সরস্বতী পূজার প্রথম দিন দেশের বাড়িতে কাটাই। আর বাকি দুই দিন মাদারীপুর বেড়াতে আসি। কারণ মাদারীপুরের মতো এই পূজার আয়োজন আর কোথাও নেই। এখানে পুলিশের নিরাপত্তা ব্যবসাও ভালো। তাই নাচ-গান আনন্দ উল্লাস করতে নেই কোন বাধা। সবকিছু মিলিয়ে এবারো পূজায় অংশ নিতে পরে খুব ভালো লেগেছে।
সরস্বতী পূজা উদযাপন কমিটির আহবায়ক বাবুল মহাদেব বর্মণ বলেন, মাদারীপুর বড় আয়োজনে শত বছরের ধরে এই পূজা হয়ে আসছে। তাই পূজাকে শান্তি পূর্ণ করতে আমরা সব ধরণের পদক্ষেপ গ্রহন করি। আর পূজার আয়োজকদের উৎসাহিত করার জন্য আমরা তাদের পুরস্কার দিয়ে থাকি।