আজ বৃহস্পতিবার, ৩০শে মাঘ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৩ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

ফতুল্লার নয়, শহরের চাঁদাবাজিও বন্ধের দাবী

ফতুল্লার নয়, শহরের চাঁদাবাজি

ফতুল্লার নয়, শহরের চাঁদাবাজি

 

নিজস্ব প্রতিবেদক:
সম্প্রতি নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সংসদ সদস্য একেএম শামীম ওসমান ফতুল্লায় চলাচলকারী ট্রাক ও বুড়িগঙ্গা নদীতে চাঁদাবাজি বন্ধের ঘোষণা দিয়েছেন। তার এমন ঘোষণার ফলে ট্রাক শ্রমিকদের মাঝে স্বস্তি ফিরে এসেছে। বুড়িগঙ্গা নদীতে চলাচলকারী বাল্কহেড মালিকরাও হয়েছেন আশ^স্ত। সাধারণ মানুষ সাংসদের এমন বক্তব্যকে সানন্দে গ্রহন করেছেন। তবে শুধু ফতুল্লার ট্রাকে কিংবা বুড়িগঙ্গা নদীর নৌযানের চাঁদাবাজি নয়, পুরো নারায়ণগঞ্জের পরিবহন সেক্টরের চাঁদাবাজি বন্ধের দাবী তুলেছেন মালিকরা।
নারায়ণগঞ্জ শহর থেকে ঢাকাসহ বিভিন্ন রুটে প্রায় ১৩টি কোম্পানির পরিবহন চলছে। এরমধ্যে সাতটির রুট পারমিট আছে। বাকী ৬টি পরিবহন চলছে বিনা পারমিটে। তাছাড়াও আছে ছোট বড় বেশ কয়েকটি পিকআপ ষ্ট্যান্ড, সিএনজি ষ্ট্যান্ড। যেগুলো থেকে প্রতিদিন আদায় করা হচ্ছে মোটা অংকের চাঁদা। এরআগে, ২০১৩ সালে নারায়ণগঞ্জের কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনালে এক অভিনব সংবাদ সম্মেলন ডাকা হয়েছিল। ঐ সংবাদ সম্মেলনে স্থাণীয় সাংসদ, ক্ষমতাসীন আওয়ামীলীগের প্রভাবশালী নেতা একেএম শামীম ওসমানের ঘনিষ্টজনরা চাঁদাবাজি করছে বলে অভিযোগ উঠেছিল। চাঁদাবাজির কারনে বাস ভাড়া কমানো যাচ্ছে না বলেও জানানো হয়েছিল সাংবাদিকদের। সংবাদ সম্মেলন ডেকে পরিবহন মালিকরা সেদিন নিজেদের অসহায়ত্বের কথা দেশবাসীকে জানিয়েছিলেন।
সাংসদের ঘনিষ্টজন থেকে শুরু করে সরকার দলের নাম ব্যবহার করে নেতাদের এমন চাঁদাবাজির কারনে মাশুল গুনতে হয়েছে যাত্রীসাধারণকে। সারা দেশেই পরিবহন খাতে চাঁদাবাজির কারণে বাসের ভাড়া ও পণ্যদ্রব্যের দাম বেড়ে যাচ্ছে। সম্প্রতি শামীম ওসমানের চাঁদাবাজি বন্ধের ঘোষণায় স্বস্তি ফিরে এসেছে মালিকদের মধ্যে। তবে শুধু নির্দৃষ্ট একটি এলাকায় নয়, পুরো শহরের পরিবহন চাঁদাবাজি বন্ধের দাবী তুলেছেন তারা। নাম প্রকাশ না করার শর্তে ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ রুটে চলাচলকারী বন্ধন বাসের এক মালিক বলেন, ‘গাড়ির চাকা ঘুড়লেই প্রতিদিন হাজার টাকার উপরে চাঁদা দিতে হয়। মালিক-শ্রমিক সবাই রয়েছে চাঁদার আওতায়।’ শুধু বাস মালিকদেরই নয়, চাষাঢ়া থেকে সাইনবোর্ডে চলাচলকারী লেগুনার মালিকদেরও গুনতে হয় চাঁদা। লেগুনার চালকদেরও দিতে হয় লাইনম্যানকে চাঁদা। সিএনজির চাকা ঘুড়লেও গুনতে হয় টাকা। শ্রমিক সংগঠনের ব্যানারে এসব চাঁদা তুলছেন সরকারী দলের নাম ব্যবহারকারী কিছু মানুষ। ফতুল্লায় চলাচলকারী অটোরিক্সার চাঁদা বন্ধ হলেও সাংসদ শামীম ওসমানের ঘনিষ্টজন নাজিম উদ্দিনের সমর্থিতরা সাইনবোর্ড থেকে জেলা পরিষদ পর্যন্ত চলাচলকারী অটোরিক্সা থেকে ঠিকই চাঁদা আদায় করছেন। পুরনো লক্কর-ঝক্কর মার্কা বেবী থেকে চাঁদার ভাগ যাচ্ছে নাজিম উদ্দিনের ক্যাডারদের পকেটে।’
চাষাড়া থেকে মুন্সিগঞ্জ রুটে চলাচলকারী লেগুনা, সিএনজি থেকেও প্রতিদিন নিয়ম করে গুনে গুনে টাকা আদায় করা হচ্ছে। ২নং রেল গেইট থেকে কাশীপুর, মুক্তারপুরের উদ্দেশ্যে ছেড়ে যাওয়া সিএনজি, অটোরিক্সা থেকেও সরকার সমর্থীতদের পকেটে যাচ্ছে চাঁদার ভাগ। চাষাড়া থেকে চিটাগাং রুটে চলাচলকারী বাস, লেগুনা, অটোরিক্সা, সিএনজি চালকরাও রয়েছে চাঁদার আওতায়। স্থাণীয় সংসদ সদস্য একেএম শামীম ওসমান ওসমান যদি শুধু ফতুল্লা কিংবা বুড়িগঙ্গার নয়, চাষাড়া রুটে ও শীতলক্ষা নদীর চাঁদাবাজিও বন্ধও করেন, তাহলে উপকৃত হবেন সাধারন মানুষ ও মালিক-শ্রমিকরা।