আজ বুধবার, ১৩ই ফাল্গুন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২৬শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

না.গঞ্জ মহানগর আওয়ামী লীগে শীতের প্রভাব!

নিজস্ব প্রতিবেদক:

ভাষা আন্দোলনের সময় থেকে দেশের স্বাধীনতা আন্দোলনসহ যে কোন আন্দোলন সংগ্রামে নারায়ণগঞ্জবাসীর অবস্থান ও যোগদান ছিল তাক লাগানোর মতো। এ আলোচনা সর্বত্র থাকলেও বর্তমানে আওয়ামী লীগ সরকার টানা তৃতীয়বার রাষ্ট্রিয় ক্ষমতায় থাকা দলের অনেক নেতা-নেত্রী নারায়ণগঞ্জ মহানগর আওয়ামী লীগের কমিটিতে স্থান পেয়েও ঝিমিয়ে পড়েছেন দলীয় কর্মকান্ড থেকে। মহানগর আওয়ামী লীগের নেতা-নেত্রীদের কর্মকান্ড নিয়ে শহর জুড়ে বেশ আলোচনা সমালোচনার ঝড় বইতে শুরু করেছে। অনেকেরই বলছেন, নারায়ণগঞ্জ মহানগর আওয়ামী লীগ গত ৩০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তেমন ভূমিকা রাখেন নি।

এমন কথা বলতে বলতে অনেকেই আবার বলছেন, মহানগর আওয়ামী লীগের অধিকাংশ নেতা-নেত্রীতের গায়ে শীতের প্রভাব পড়েছে! সরকার দলের কয়েকজন নেতাদের সাথে আলাপ করে জানা গেছে, নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সাংসদ একেএম শামীম ওসমান ও নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ডা. সেলিনা হায়াত আইভী তাদের অনুসারী অনেকেই আছেন যারা মহানগর আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে রয়েছেন। অনেকেই বলছেন, মহানগর আওয়ামী লীগের নেতাদের জিমিয়ে পড়ার এবং তাদের গায়ে শীতের প্রভাব পড়ার কারণ হিসেবে বলছেন, আইভীর সাথে কোন মিটিং মিছিল ও সমাবেশে যোগদান করলে তাদের অনেককেই পড়তে হয় বিভিন্ন ধরনের জবাবদিহিতার মধ্যে এবং বঞ্চিত হতে থাকেন দলীয় সুযোগ সুবিধা থেকে। আবার একেএম শামীম ওসমানের সাথে অনেকেই মিটিং মিছিলে যোগদান করলে তাদের মধ্যে অনেকেই আবার বিভিন্ন ধরনের জবাবদিহিতাসহ সুযোগ সুবিধা বঞ্চিত হতে হয়। তবে অনেকেই বলছেন, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের জন্মলগ্ন থেকে নারায়ণগঞ্জবাসীসহ দেশবাসীর কাছে সুপরিচিত দুইটি পরিবার গড়ে উঠেছে আলী আহাম্মদ চুনকা ও একেএম সামসুজোহার রাজনৈতিক অবস্থানের কারনে। তবে আলী আহাম্মদ চুনকা ও একেএম সামসুজোহা নারায়ণগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের প্রান পুরুষ বলে খ্যাত। তাদের হাত ধরে ও তাদের আশপাশে থেকে অনেকেই আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে এসেছেন। দলকে ভারী করার জন্য তাদের সীমাহীন ভূমিকা থাকলেও বর্তমানে তাদের বংশধররাও সেই নীতির হাত ধরে হাঁটছেন। দলকে ভারী করার জন্য কাজ করছেন যে যার মতো। তবে আইভী ও শামীম ওসমানের মধ্যে মতবিরোধ থাকার কারন হিসেবে এর প্রভাব বিস্তার করছে। মহানগর আওয়ামী লীগের বলয়ে। মহানগর আওয়ামী লীগের অনেক নেতাই প্রভাবশালী আইভী ও শামীম ওসমানের পকেট নেতা হিসেবে পরিচিত বলে মন্তব্য করছেন শহরের প্রবীণ আওয়ামী লীগের নেতারা। মহানগর আওয়ামী লীগ সাধারণ ভোটারদের ও এলাকাবাসীদের নিয়ে সভা সমাবেশে যোগদানসহ স্থানীয়ভাবে দলীয় অনুষ্ঠান করতেও ব্যর্থতার প্রমান দেখছেন শহরবাসী এমনটাই বলছেন অনেকে। তারা আরও বলছেন, মহানগর আওয়ামী লীগ এখন নিজেদের নিয়ে ভাবছেন। কিভাবে নিজেদের আয় বাড়ানো যায় ও নিজেরা বিলাসী জীবনযাপন করতে পারেন। তবে মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারন সম্পাদকসহ একাধিক নেতারা বলছেন ভিন্ন কথা। গত ১৯ জানুয়ারী ঢাকা সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আওয়ামী লীগের বিজয় উৎসব সমাবেশে জেলার মহানগর আওয়ামী লীগের নেতাদের উপস্থিতি ও তাদের সমর্থকদের না দেখতে পেয়ে তাদের নেতৃত্ব শীতের প্রভাব পড়েছে বলে মন্তব্য জানিয়েছেন দৈনিক সংবাদচর্চাকে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে তারা বলেন, সভাপতি সাধারন সম্পাদক ও সাংগঠনিক সম্পাদকসহ অনেকেই এখন আর দলের জন্য কাজ করেন না।

তারা নিজেদের নিয়ে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন। এ বিষয়ে মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি আনোয়ার হোসেনের সাথে কথা বলার জন্য তার মুঠোফোনে যোগাােগ করা হলে ফোন না উঠানোর কারনে তার মন্তব্য দেয়া যায় নি। সাধারন সম্পাদক খোকন সাহা বলছেন, আমি দলের স্বার্থে কাজ করি। দলের জন্য কাজ করি বলেই যেকোন আন্দোলন সংগ্রামে নেতা-কর্মীদের নিয়ে রাজনৈতিক মাঠে থাকি।

স্থানীয় কয়েকজনের সাথে কথা বলে জানা যায়, মহানগর আওয়ামী লীগের রাজনীতি ঝিমিয়ে পড়েছে। তার বড় কারণ প্রভাবশালী নেতাদের প্রভাব এ কমিটির নেতাদের প্রভাবিত করছেন। এর থেকে বেরিয়ে না আসতে পারলে মহানগর আওয়ামী লীগ তাদের নিজ গতিতে এগোতে পারবেন না। মহানগর আওয়ামী লীগসহ জেলা আওয়ামী লীগকে দলীয় কর্মকান্ডের সাথে জড়িত রাখতে নতুন ধারায় কাজ করছেন, পাট ও বস্ত্রমন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী (বীর প্রতীক) এমনটাই বলছেন শহরের কয়েকজন প্রবীণ আওয়ামী লীগ নেতারা। তারা বলছেন, তিনি কাজ হাতে নিলে সফল হবেন। তার সফলতার দিক বেশি।