আজ শনিবার, ১লা অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৬ই নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

নারায়ণগঞ্জ বন্দরে হযরত ঈসা (আঃ) এর শুভ জন্মবার্ষিকী পালিত

জন্মদিন

জন্মদিন

নিজস্ব প্রতিবেদক : গত সোমবার নারায়ণগঞ্জ  পুরাতন বন্দর রেলওয়ে স্টাফ কোয়াটার সোনামনী কিন্ডার গার্ডেন স্কুল মাঠে দ্বীনে মোহাম্মদী (সঃ) প্রচার কেন্দ্রের গুরু গোলাম মর্তুজা’র উদ্যোগে হযরত মোহাম্মদ (সঃ) এর শ্রেষ্ঠ উম্মত হযরত ঈসা (আঃ) এর শুভ জন্ম বার্ষিকী বড় দিন উপলক্ষ্যে মিলাদ ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়।

উক্ত অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন দৈনিক রুদ্রবার্তা ও রুদ্রকন্ঠ পত্রিকার সম্পাদক শাহ্-আলম তালুকদার, কিডস্ টিভির ব্যবস্থাপনা পরিচালক সেলিম আহমেদ ডালিম, রদ্রবার্তার সহ-সম্পদাক এনামুল হক দিদার, সময়ের চিন্ত ডট কমের সম্পাদক- সুলতান মাহমুদ, বিশিষ্ট সাংবাদিক এস.এম বাবুল, বিশিষ্ট ব্যবসায়ী ফয়সাল আলম রাজু চৌধুরী, বিশিষ্ট সমাজসেবক শেখ হাজী আব্দুল মজিদ, বিশিষ্ট ব্যবসায়ী আমিরুল ইসলাম, বিশিষ্ট ব্যবসায়ী বিপ্লব সাউদ, বিশিষ্ট ব্যবসায়ী মোহম্মদ আলী, দরবারের ভক্ত আশ্রাফ আলী, নুরু মাস্তান, রিপন, কবির, এনামুল, সাত্তার, আসাদুজ্জামান তালুকদার, সাজ্জাত হোসেন তালুকদার সহ অনেক ভক্তবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

হযরত ঈসা (আঃ) এর শুভ জন্ম বার্ষিকী বড় দিন সম্পর্কে দ্বীনে মোহাম্মদী (সঃ) প্রচার কেন্দ্রের সত্য গুরু গোলাম মর্তুজা নিম্ম লিখিত বক্তব্য দেন তিনি বলেন, মাগিতেছি বিক্ষা গুরু বাবার চরণ ধুলি হইতে, পাইতে মুক্তি জন্মের বন্ধন হইতে চিরতরে। নিয়েছি জন্ম প্রকৃতির জাত স্বভাবে। চলিতেছে এ পার্থিব জগত প্রকৃতির আয়ত্তে। হইতেছে জন্ম-মৃত্যু মানুষের এমনিই ভাবে। ছয় চিজে বা ছয় নূরে বা ছয় বস্তুর গুণ ক্রিয়ায়ই এই দেহ ভ্রমান্ড ও পার্থিব ভ্রমান্ড সৃষ্টি।

যেমনঃ- ১। আগুন বস্তুর গুণ ক্রিয়া, ২। বাতাস বস্তুর গুণ ক্রিয়া, ৩। শূন্য বস্তুর গুন ক্রিয়া, ৪। মাটি বস্তুর গুন ক্রিয়া, ৫। পানি বন্তুর গুন ক্রিয়া। পানি বস্তুর গুন ক্রিয়া আবার দুই ভাগে বিভক্ত। যথাঃ- ক) জাহেরে। খ) বাতেনে। ক) জাহেরেঃ আমরা যে পানি দ্বারা পার্থিব জগতের বিভিন্ন কাজে ব্যবহার করি তাহা জাহেরে। খ) বাতেনেঃ অণু হইতে পরমাণু জীবের জীবানু সৃষ্টি হইয়া সৃষ্টি এমনিই প্রকাশ হইতেছে তাহাই বাতেনে। আগুন বস্তুর উৎখাত বাকি পাঁচ বস্তুর অধিকারিত্বে সৃষ্টির সেরা মানুষ। আগুন বস্তুর গুন ক্রিয়াই রুহে হায়ানি বা জীবাত্মা বা ইব্লিশ শয়তান, যাহা আঠার হাজার সৃষ্টির মধ্যে একই ভাবে বিদ্যমান।
আলিফ্-লাম্-মীম্, যালিকাল কিতাবু লা রাইবা ফিহি; হুদাল্লিল মুত্তাক্বিন। (সূরা বাক্বারাহ, আয়াত- ১,২)

আল্লাহর প্রতীক আলিফ্, লাম্-এর প্রতীক লোক এবং মীম্ এর প্রতীক রাসুল। যখন লাম্-এর সাথে আলিফ এবং মীম্ সার্বক্ষনিক বিরাজমান, অর্থাৎ চিরন্তন সত্য আল্লাহ-রাসুলকে যিনি লাভ করিতে সক্ষম হন, তখন তিনি সৃষ্টির সেরা মানুষ বা আশ্রাফুল মাখলুকাত বলিয়া আখ্যায়িত। যিনি মানুষ হবেন, তাহাকে ফেরেশতারা সিজদা দিবেন। আল্লাহ-রাসুল বিহীন লোক জীবাত্মার জৌলষ ছাড়া আর কিছুই নয়। এই জীবাত্মাই মানুষের ধ্বংসের একমাত্র কারণ। পূর্বেই ব্যক্ত হয়েছে, জীবাত্মাই ইবলিশ শয়তান বা মক্কেল আজজিল। আদম (আঃ) কে সৃষ্টি করার পর আল্লাহ্ রাব্বুল আলামীন আদমকে সিজ্দা দেওয়ার আদেশ দিয়াছিলেন। কিন্তু ইবলিশ ব্যতীত অন্য সকল ফেরেস্তারা সিজ্দা দিয়েছিল। ইবলিশ তাহার অহংকারের জন্য চিরতরে ভ্রান্ত হয়ে গেল। অদ্যাবধি ইবলিশ মানুষের চির শত্রু বলিয়া আখ্যায়িত এবং মানুষের পিছনে সার্বক্ষণিক তৎপর এবং মানুষকে ভ্রান্ত পথে চালিত করিতেছে। আল্লাহ-রাসুল বিহীন জীবন-যাপন করা পার্থিব জগতের লোক দেখানো আচার অনুষ্টান, প্রার্থনা, পূজা এবং পোশাক পরিচ্ছেদ ব্যবহার, মুখ বাকাইয়া বড় বড় বুলি আওড়ানো, আল্লাহ-রাসুলকে পাওয়ার পথ নয়। আসলে তাহারা ভুয়া পথের পথিক ছাড়া আর কিছুই নয় । এখন আমরা এ্ই সিধান্তে পৌছাইতে পারিতেছি যে, আলিফ লাম মীম হলো পবিত্র ও মাহাকুরআন, ইহা ব্যঙ্গ ও নূরের কুরআন। যাহা কথা বলে- মানুষ কুরআন- এই কুরআন- এর মধ্যে কোন শোভা সন্দেহ নেই । আদম (আঃ) এর সৃষ্টির প্রাবম্ভ হইতেই এই কথা চিরাচরিত ভাবে অদ্যবধি প্রচলিত। যালিকাল কিতাবু লা রাইবা ফিহি; হুদাল্লিল মৃত্তাক্বিন আমরা আদম (আঃ) এর ঐতিহ্যবাহী সন্তান-সন্তুতি হওয়া সত্ত্বেও বৈষম্যতার আখড়ায় হৈ চৈ করিয়া বিশ্বাস বা ঈমান পবিত্রতা হারাইয়া ধ্বংসের সাগরের অতল তলে ডুবিয়া মরিতেছি। ভুল পথে চলিওনা ঈমান আন তিনটি নিয়ামত পাইবে। যথাঃ- ১। দীর্ঘায়ু, ২। আমরা যে পৃথিবীতে বাস করিতেছি- এই রূপ দশটা পৃথিবীর বাদ্শাহী, ৩। নতুন জীবন বা আবেহায়াত বা জীবনের ঝরনা।

এখন আমরা সহজ ও সরল সিদ্ধান্তে পৌছাইতে সক্ষম হইতেছি যে, যাহারা মূছা (আঃ) এর প্রতি ঈমান আনিয়া ছিলেন তাহারাই ধর্মভীরু। তাহাদের জন্য মূছা (আঃ) ই কিতাব বা পথ প্রদর্শক, এমিনভাবে- যারা হুজুর করিম (সাঃ) এর উপর ঈমান আনিয়াছিলেন তারাই ধর্মভীরু । উহুদের যদ্ধে হুজুর করিম (সাঃ) এর দন্ত মোবারকও শহীদ হইয়া ছিলেন, তখন জিব্রাঈল (আঃ) হাজির হইয়া হুজুর (সাঃ) কে আরজ করলেন- বলুন সাফা ও মারওয়া পাহাড়কে একত্র করিয়া ফেলি, তখন হুজুর করিম (সাঃ) উত্তর দিলেন-ক্ষমা ও দয়া বড় ধর্ম। শত্রু দেরকে দয়া করিয়া ক্ষমা করিয়া দিলাম। তখন হুদায়বিয়ার সন্ধি হইল যে, হুজর করিম (সাঃ) ও সাহাবাগণকে নিয়ে প্রত্যেক বছর হজ্জ্ব করিতে আসিতে পা্িরবেন কিন্তু তিনদিনের বেশী মক্কায় অবস্থান করিতে পারিবেন না। দখ বছর পরে- হুজর করিম (সাঃ) যদি ইচ্ছা করেন, তাহা হইলে জীবন ভর মক্কায় অবস্থান করিতে পারিবেন। ইহার নামই হুদাইবিয়ার সন্ধি। যখন এই সময় পার হওয়ার পর হুজুর (সাঃ) সাহাবাগণকে নিয়া মক্কায় প্রবেশ করিলেন, তখন মক্কাবাসিগণ ভয়ে আতংকিত হইয়া গেলেন যে, হুজুর করিম (সাঃ) আমাদের উপর প্রতিশোধ নিবেন। তখন মক্কাবাসিগণ দুই দলে বিভক্ত হইল। একদল হুজুর করিম (সাঃ) এর উপর ঈমান আনিলেন, এরাই নবীর দ্বীনের আওতাভুক্ত হইলেন। আর যাহারা বলিল যে, আমরা হুজুর করিম (সাঃ) এর প্রতি মুখে মুখে ঈমান আনিব। মক্কা ত্যাগ করলে-আমরা আমাদের বাপ-দাদার ধর্ম পালন করিব। এরাই এজিদ মাওলানার দলে চিরদিনের জন্য অন্তর্ভুক্ত হইল। এরাই ইবলিশ শয়তান মক্কেলে আজাজিল ও ভ্রন্ত কাফের। নবীর দ্বীন মানে না যারা ভ্রন্ত কাফের তারা। এরাই শুধু লাম-এর প্রতীক। যে লাম এর সাথে আলিফ ও মীম নেই অর্থাৎ যে লোকের আল্লাহ ও রাসুল নাই জবাত্মাই তার মধ্যে সাদাই বিরাজমান এবং সে সৃষ্টির সেরা মানুষ নয়। আর যে লাম এর সাথে আলিফ ও মীম সার্বক্ষণিক বিরাজমান তিনিই সৃষ্টির সেরা মানুষ বা আশরাফুল মাখলুকাত উপাধিতে ভূষিত হইয়া ইহকাল ও পরকালের জন্য ধন্য । হুজুর করিম (সাঃ) যখন হজ্জ¦ সমাপন করিয়া আরাফাতের ময়দানে যে ভাষণ দিয়াছিলেন, তহা হুদয় বিদারক ইহাতে সাহাবাগন ভয়ে আতংতিকত হইয়া গেলেন যে, হুজুর করিম (সাঃ) আমাদের মাঝে আর থাকিবেন না ইহকাল ত্যাগ করিবেন। মদিনা ফিরার পর মসজিদে নববীতে সাহবাগণ একদিন আরজ করলেন যে, আপনি ইহকাল ত্যাগ করিলে কি উপায় হইবে? আপনার কাছ হইতে আমরা অনেকে বানী শুনিতে পাই এবং তাদনুযায়ী আমল করতে পারি এবং জিব্রাঈল (আঃ) তো আমাদের কাছে আসবেন না ও ভবিষ্যতে বাণীও শুনিতে পারিব না। তখন হুজুর করিম (সাঃ) বলিলেন তোমরা যাহারা আমার প্রতি ঈমান আনিয়াছ, তাহাদের কাছে জিব্রাঈল (আঃ) আসিবেন। তাহারাই নবীর দ্বীনের আওতাভুক্তা হইয়াছে। এমনি ভাবেই কিয়ামত পর্যন্ত চলিতে থাকিবে। যিনি মানুষ হবেন তাহাকে ফেরেস্তারা সিজদা করিবেন। নবীর দ্বীন বা শরা বা আহালে বাইয়াত, ইত্যকার প্রয়োজনে জীবাত্মার পরিবর্তনশীল উত্থান-পতনের জগতে চৈতন্য গুরু বা ইনসানে কামেল মানুষ দ্বারা সূচারুরূপে পরিচালিত হইয়া মানবাত্মার অপরিবর্তনশীল নতুন জীবন জাতি, ধর্ম নির্বিশেষে লাভ করাই- মানুষ আশরাফুল মাখলুকাত বা সৃষ্টির সেরা মানুষ । এখানেই জন্ম সার্থক এবং জন্ম দিবস উদযাপিত হতে থাকবেÑ ইহকাল-পরকালের তরে। আমীন॥ ২৫ শে ডিসেম্বর শেষ সপ্তাহের সাঙ্গ প্রথম খৃষ্টাব্দের আরম্ভ। চলিতেছে সারাজাহানে সমারোহ আনন্দ হইতেছে উদযাপন ঈসা (আঃ) এর জন্ম দিবন আকাশে বাতাসে ।নিতে হবে শিক্ষা কুরআন ও বাইবেল হতে। আসিবেন পুনরায় ও পৃথিবীতে হুজুর করিম (সাঃ) এর সেরা উম্মত হিসাবে করিতে উৎখাত খানে দাজজালদের চিরতরে। সহযোগীতায় দ্বীনে মোহাম্মদীর বাহক মাহ্দী (আঃ) এর কৃপাতে । মানুষ প্রকৃতি গতভাবে জন্মলগ্নেই শাহান-শাহের চিরপদে অধিষ্ঠিত হয়েছে। আমন্তিত এই ক্ষণস্থায়ী জগতের শাসন ভার পরিচালনা নিমিত্তে, রয়েছে লুকাইয়া নানাবিধ নিত্য নতুন অভিনয় এ্ই ভবের নাট্য শালার পটভূমিতে। করিতে হইবে রক্ষা এ্ই একচ্ছত্র রাজ্যের সার্বভৌমত্ব সুচারুরূপে। সর্বপ্রকার চেষ্টা প্রয়াস আত্মা বিসর্জনের মাধ্যমে থাকিতে হবে তৎপর যথাযথ আদেশ-নির্দেশ পালনে। মহপ্রভুর নির্ধারিত নাটকের, করিতে সঠিক অভিনয় নাট্যমঞ্চ্য। সাফল্য হতে হবে এড়াইয়া যতসব বাধা বিঘœকে, দিতে হবে আত্মাহুতি প্রভু প্রদত্ত কুরআনের বানী সকলকে, অনুসরন করতে হবে হুজুর (সাঃ) এর পদাঙ্কে । সময় স¤্রাজ্য তুল্য কর্ম কান্ডগুলি শাসন ভার পরিচালনার সাদৃশ্য কর্মকান্ডের নিয়ম কানুন পদ্ধতি গুলি সৈন্য রক্ষী বাহিনী তুল্য। আত্মা সমস্ত দেহের বাদশাহ হয় পরিচালিত আত্মার অধীনে সমস্ত অঙ্গ-প্রতঙ্গ। তগরূপ আল্লাহ কোন বিশেষ জায়গায় আবদ্ধ নহেন। তথাপি সমস্ত বিশ্ব চরাচর তাহার পরিচালনাধীনে। আত্মার প্রকৃত অবস্থা ও নিগূঢ় তত্ত পরিষ্কারভাবে ব্যক্ত করিলেই আল্লাহর পবিত্র সর্বময় সকল কথা প্রকাশিত হইয়া পরিবে, যাহা ব্যক্ত করার অনুমতি নাই এবং গূঢ় তত্ত্ব পরিষ্কারভাবে ব্যক্ত করিলেই, বাক্যের প্রকৃত মর্ম উদঘাটিত হইবে। উহা অবগত হয়েছেন চাক্ষুষমান সাধক, অলিগন কাশফের দ্বারা এবং যথাযথ জানেন তাহারা যে, আল্লাহ আদম (আঃ) কে নিজের অনুরূপ সৃষ্টি করেছেণ কারন পারেনা চিনতে অপর কেহই বাদশাহকে বাদাশাহ ব্যতীত। আল্লাহ মানুষকে মানষের দেহ রাজ্যের বাদশাহ করে না বানালে এবং তাহার স্বীয় মহারাজ্যের এক সংক্ষিপ্ত মানুষকে দান না করিলে মানুষ বিশ্ব জগতের প্রভু আল্লাহকে কখনোই চিনতে পারত না । অতএব যিনি মানুষকে সৃষ্টি করেছেন, মানুষকে বাদশাহের বাদশাহ মর্যাদা দান করেছেন এবং স্বীয় রাজ্যের নমুনা স্বরূপ মানুষকে একটি রাজ্য প্রদান করেছে যে, বিশ্ব প্রভু – আল্লাহর নিকট মানুষের কৃতজ্ঞ থাকা উচিত। মানুষের দেল আরশ তুল্য। দেল হতে নিঃসৃত জীবনি শক্তি ইস্রাফিল সদৃশ্য। এরূপ মস্তিস্ক কুর্শি, মস্কিস্কের খেয়াল কুঠরী লওহে মাহফুজ, চক্ষু, কর্ন ইত্যাদি ইন্দ্রিয়গুলির শক্তি ফেরেস্তা। মস্তিস্কের উপরের আবরন আকাশ, মস্তিস্ক আবরনের যে সকল বিন্দু হতে  বায়ু মন্ডলী হয়ে সর্বদেহে পরিব্যক্ত হয়েছে, যে সকল বিন্দু, গ্রহ, নক্ষত্র, অঃগুলি, কলম, কালি প্রকৃতি স্বরূপ আল্লাহ মানুষের আত্মাকে কল্পনাতীত ও নিরাকার রূপে সৃষ্টি করিয়া সমস্ত অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের উপর বাদশাহ করে দিয়াছেন এবং মানুষকে সতর্ক করে দিয়েছেন। খবরদার স্বীয় অস্তিত্ব ও স্বীয় বাদশাহী ভুলিও না, ভুলিলে স্বীয় সৃষ্টিকর্তা আল্লাহকে ভুলিবে। আদমকে (আঃ) তাহার আকৃতির অনুরূপ করেছেন সৃষ্টি। অতএব হে মানব নিজেকে চিন তাহলেই তোমার প্রভু আল্লাহকে চিনবে । স্রষ্টার সেরা মানুষ এই অত্যুক্তির উপাধিতে ভূষিত হয়ে পশুর মত দিবা-রাত্রি গলগ্রহ ও মলমূত্র রাস্তা, ঘাটে ত্যাগ করিলেই মানুষ বলা চলিবে না। প্রথমতঃ নিজেকে চিনিয়া মানুষের সংজ্ঞা ঠিক করিতে হইবে । তাহার পূনাঙ্গ রূপ ধারাবাহিকভাবে বিশ্লেষণ করিতে হইবে।

দ্বিতীয়তঃ সৃষ্ট জগত ও অদৃশ্য জগত সম্বন্ধে পুরোপুরি ভাবে জ্ঞান আহরন করিতে হইবে। এবই রূপে জীবাত্মা পরমাত্মার সম্বন্ধে জ্ঞান অর্জন করাই হবে মানুষর পূর্নাঙ্গ রূপ এবং স্রস্টার স্বরণ। সাধন, ভজন বা মানব জীবনের প্রধান কাম্য ও আরম্ভ হবে মহা প্রভুর নির্দেশিত খেলাফত ।
আধ্যাতিক সাধনায় লিপ্ত হওয়ার সাথে সাথ ভু-মন্ডল, নভোমন্ডল ও আত্মার প্রকৃত পর্যায় স্তর প্রভৃতির সম্বন্ধে পুরোপুরি জ্ঞান অর্জন করিয়া: সুক্ষ্ম দৃষ্টি, দিব্যজ্ঞান, দিব্যকর্ণ আবিষ্কারে সমর্থ হইতে হইবে। পরম করুনাময় বিশ্ব প্রতিপালক সহায় হউন । আমীন॥

১। আমরা যে জগতে বাস করি উহ: পার্থিব জগত, নশ্বর জগত, সৃষ্টি জগত। ইহার প্রতীক “ক্ষ” ক্ষণস্থায়ী ।
২। আমরা যে দেহে বাস করিতেছি তাহা: পার্থিব দেহ, নশ্বর দেহ, সৃষ্টি দেহ, ইহার প্রতীক “ক্ষ” ক্ষণস্থায়ী ।
৩। আমরা যে আত্মার প্রভাবে ক্ষনিকের জন্য বাঁচিতেছি- তাহা জীবাত্মা, নশ্বর আত্মা, পার্থিব আত্মা, ইহারও প্রতীক ‘ক্ষ’ যাহা আঠার হাজার মাখলুকাতের মধ্যে একইভাবে বিদ্যমান। তাই এই ‘ক্ষ’ প্রতীক এর আত্মা কখনোই আশরাফুর মাখলুকাত বা সৃষ্টির সেরা মানুষ বলিয়া দাবী করিতে পারি না। পক্ষান্তরেঃ
ক) আমরা যে জগত হইতে আসিয়াছি আবার চলিয়া যাইব, তাহা অবিনশ্বর জগত, অপার্থিব জগত, পরকাল, ইহার প্রতীক “হ” চিরস্থায়ী।
খ) যে আত্মার দ্বারা মানুষ আশরাফুর মাখলুকাত অর্থাৎ সৃষ্টির সেরা বলিয়া আখ্যায়িত। তাহা মানব আত্মা , অদৃশ্য পরম আত্মা, অবিন্শ্বর আত্মা। ইহার প্রতীক ‘হ’ চিরস্থায়ী। আমরা সহজ ও সরল সিদ্ধান্তে পৌছাইতে সক্ষম হইতেছি যে,
১। ‘ক্ষ’ এই প্রতীকের উদাহরণঃ আলমে খালক বা সৃষ্টি জগত। ইহা ক্ষণস্থায়ী ধ্বংস প্রাপ্তশীল, ইহার দৈর্ঘ্য-প্রস্থ, আয়তন ও ব্যাস চর্ম চোখে দেখা যায়।
২। “হ” এই প্রতীকের উদাহরণঃ আলমে আমর বা অবিনশ্বর জগত, ইহাতে দিব্য জগত, ইহাতে চিরস্থায়ী দিব্যজ্ঞান বিশিষ্ট মানবরে জন্য ইহা মহোসাপান। এই পার্থিব জগত ক্ষণস্থায়ী, অবাস্তব, অপ্রকৃতি, ভঙ্গুর, ছলনাময়ী, মায়বিনী, মাকঙসা বুনা গৃহ স্বরূপ, কৃত্রিম পচা গান্ধার উপাদানে আবৃত। আমরা অজ্ঞতার ঘোর নিদ্রায় আচ্ছন্নতায় পড়িয়া, এই নশ্বর জগতের চাকচিক্য, জাকজমকপূর্ন, প্রাকৃতির প্রচার-প্ররোচনায়, আরাম-আয়েশ, ভোগ-বিলাসে, মাতাল ও উদগ্রীব। ইত্যকার প্রয়োজনে ভাবনা চিন্তা আমাদের স্বভাব। চোখ শীতল করার জন্য সরম্য প্রসাদ সাহা-যাহা শীততাপ নিয়ন্ত্রন গঠিত, মন ভুলানো নারী, গাড়ী, উদ্যান, বড়-ব্যাবসা বাণিজ্য, ক্ষেত-খামার, উন্নত মানের কলকজা, কারখানা, চাকুরীর জন্য উচ্চ শিক্ষা প্রভৃতি পার্থিব জগতের বাধ্যতামূলক সমস্যা সমাধানে সারাটি জীবনের প্রতিটি মুহূর্তেই পশুর মত, বেখেয়াল হইয়া দিবা-রাত্রি গলগ্রহ, মলমূত্র ত্যাগ করিতেছি। অত্যাধুনিক যুগে: সমাজ, মসজিদ, মকতব- মাদ্রাাস, স্কুল-কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়, প্রভৃতি সমস্যার সমাধান বাধ্যতামূলকভাবে দ্রত আগাইয়া চলিতেছে। আমরা সমাজের দৃষ্টি আকর্ষনের জন্য ভরাট দেখাইয়া সখের আলেম, ইমাম, শিক্ষক, অধ্যক্ষ, অধ্যাপক-নামের পূর্বে মোহাম্মদ বসাইয়া সখের ইসলাম, মোট কথাঃ স্ব-স্ব আত্মা গৌরবের তথা- পার্থিব জগতের আপন আপন চাহিদা মিটানোর জন্য সরল মনা মানষদের ভাল ভিড়াইয়া লোভে ব্রত করিয়া, ধন-সম্পদ-লুপ-পাট ক্িরতেÑ দ্বিধা রোধ করিতেছি না। মানুষের আসল রূপ মানুষের পূর্ণাঙ্গ রূপ মূল্যায়ন করাই এই সৃষ্ট জগতের গুরু দায়িত্ব। তাই মানুষের আসল রূপ ঃ আলমে খালক+আলমে আমর= এই দুইয়েল সমন্বয়ে ভারসাম্যের মিলনে গঠিত মানুষ। ইহাতে মানুষের পুনাঙ্গ জগত। পার্থিকব জগতের মোহে যাহাদের হৃদয় সম্পূর্ন শিলাবৎ হইয়া গিয়াছে এবং ষড় রিপুর প্রভাবে প্রভবান্বিত হইয়াছে জীবাত্মা শুধু তাহাদের মধ্যে বিদ্যমান, তাহারা মানুষ তো দুরের কথা, পশু- বলিলেও অত্যুক্তি হয় না । এই পরিপ্রেক্ষিতে আমরা এই সিধান্তে পৌছাইতে পারি যে;
ক) জীবাত্মা + মানবাত্মা= মানুষ।
খ) সৃষ্টিজগত + অদৃশ্যজগত= পূর্নাঙ্গজগত। তাই: নফস বা জীবাত্মার সকল প্রকার কু-প্রবৃত্তির মূল উচ্ছেদ আত্ম বিসর্জন ও আত্মা কুরবানের সহিত মানবাত্মাকে অভিনন্দন জ্ঞাপন করিয়া সুদৃঢ় ভাবে ফটক তৈয়ার করি, যেন তওবার মালা জীবনের শেষ নিঃশ্বাস পর্যন্ত বিজরিত থাকে। অশ্রুর নিঝর ধারায় বুক ভাসাইয়া অতীতের মুর্খত্যা ও পশুত্বের অনুশোচনা করিয়া সকল প্রকার দুরারোগ্য রোগের ঔষধ এবং প্রতিষেধক একমাত্র আল্লাহ্ রাহ্মানির রাহমকে মানিয়া লইতে পারি। জীবনের শপথ করিয়া ইনছানে কামেল মুরশিদের দ্বারস্থ হই এবং নবী করিম (সাঃ) এর দ্বীনে আসি। হুজুর করিম (সাঃ) বরিয়াছেন- ইনছানে কামেলের হাতে যাহারা ছবক করিবে, তাহারাই দ্বীনে পুরাপুরিভাবে সাড়া দিবে। পক্ষান্তরে: নবীর দ্বীন মানিল না যারা ভ্রান্ত কাফের তারা । মোট কথা: সখের ইসলামের আলেম, হাফেজ, ক্বারী, দরবেশ, পীর, ফকির, পার্থিব, সম্মানার্থে যদি বিলাত ফেরত ডিগ্রী ধারীও হয়, তবুও সে এই পর্যায়ের দ্বারস্থ হইবে। তাই আমরা সাবধান হই, নবীর দ্বীনে আসি এবং নবীর দ্বীন মানি। অজ্ঞাতাই মারেফাত, আল্লাহর জ্ঞানের নিকট নিজের অজ্ঞাতাই পূর্ন হেদায়ত । তাই , জীবাত্মার জৌলষে, ভোগবিলাসে আত্মগর্বের পার্থিব হিত সাধনে , কোন আবিষ্কার , উচ্চ মর্যাদা, বড় আলেম, বড় ক্বারী, হাফেজ, দরবেশ, পীর হওয়ার নিমিত্তে উচ্চ শিক্ষায় জীবনের একটি নিঃশ্বাসও বৃথা যাইতে দিও না। নীরব থাক, অল্প খাও, অল্প নিদ্রা যাও, কেননা বেশীর সব কিছুই খারাপ। যেহেতু যে বিদ্যার দ্বারা আল্লাহকে লাভ করা যায় তাহা অল্প হইলেও যথেষ্ট। পক্ষান্তরে: যে বিদ্যা, বুদ্ধি, বেশী অর্জিত হওয়ায় আল্লাহকে পাওয়ার পথে অন্তরায় থাকে, তাহা বেশী হইলেও তচ্ছ। এই প্রসঙ্গে মরহুম লালন ফকীরের উক্তি: কয়েকটি লাইন স্মরণ করিতেছি। কুরআন পড়, তৌহিদ ধর, দাউন ধর মুরশিদের, মিছামিছি দাম দিচ্ছ, নৌকা বোঝাই কিতাবের। নিজেকে এবাদতে পূর্নমগ্ন হেদায়তের জন্য বিস্তারিত স্মরণের পরও নফসের বিভিন্ন সমস্যা দেখা দিতে পারে। যেমন: দোযখের ভীতি, বেহেস্তের লোভ এবং পার্থিব ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার, বৈজ্ঞানিক, অধ্যক্ষ, পাইলট, মন্ত্রি, আলেম, হাফেজ, ক্বারী, দরবেশ, পীর ইত্যাদি সমস্যা। কারণ: ভয় ও আশা বর্তমান থাকে। ভয় ও আশা এই দুইটি মানসিক রোগ। আস্থাভেদে উভয়টি উপকারী। সুতরাং ঔষধের শ্রেষ্ঠত্ব নাই। সাময়িক উপকরিতা আছে মাত্র। তাই ভয় ও আশা পুর্ণ জ্ঞান নহে। মানুষ যদি আল্লাহর ধ্যানে তাহাকে একেবারে বেষ্টন করিয়া লয়। আর সে যদি আদি অন্ত সমস্ত ভুলিয়া গিয়া, সময়ের সৃষ্টিকর্তা আল্লাহকে নিয়া ব্যাপৃত থাকে তবেই সে পরম উৎকর্ষ লাভ করে। ইহাই তাহার পুর্ন জ্ঞান। ভয় ও আশার দিকে মনোনিবেশ করিলে, ইহাই আল্লাহকে পাওয়ার পথের অন্তরায় হয়ে দাড়ায়। কিন্তু আল্লাহর প্রেমে বিভোর তদ্রুপ ব্যক্তি নিতান্তই বিরল। যতসব উন্নতি আবিষ্কার ভাবনা চিন্তা ইত্যাদির সমস্যার সমাধান একমাত্র চৈতন্য গুরু বা ইনছানে কামেল মুরশিদের প্রতি নিরিখ, ইহাই হইল, পরকালের বীরত্বের অমরত্ব। ¯্রষ্টাতে সহজ আত্মসমর্পন সাধন, ভজন মিলিয়া হইতেছে ত্রিবেনীর তীর্থ। ইহাই সহজ তীর্থ। নিরাকারে সাঁই নিরঞ্জন, সাধন, ভজন পথে মুরশিদ রূপ ধারন করেন। এই প্রসেঙ্গে কুরআন এর একটি আয়াত উল্লেখ করিতেছি: বালামান আছলামা ওয়াজহাহু লিল্লাহে ওয়াহুয়া মুহছিনুন ফালাহ আপরুহু ইন্দা রাব্বিহি ওয়ালা খাওকুন আলাইহিম ওয়ালা হুম ইয়াহ্ জানুন। (সূরা বাক্বারাহ ১২২ আয়াত) অর্থাৎ হ্যা, যে আত্মসমর্পণ করে আল্লাহর উদ্দেশ্যে ও পুর্ন কর্মশীল তাহার পূর্ন কর্মফল রবের নিকট গচ্ছিত। তাদের কোন ভয় নাই এবং তাহারা চিন্তান্বিত হইবে না। ধর্ম বাস্তব নিরেপেক্ষ আত্মসমর্পন, ভজন, সাধন , প্রেম , দয়া, ক্ষমা, প্রীতি, ¯েœহ ইত্যকার প্রয়োজনে কঠোর শ্রম, পরম সহিঞ্চুতা, অপরিসীম ধৈর্য, অশেষ ভক্তি, অকৃতিম ভালবাসা, একত্ববাদ, জাতি, ধর্ম নির্বিশেষে এবং প্রভু প্রেমে বিভোর, সার্বক্ষনিক প্রভৃতির সাধনালদ্ধ গুন বা ফল যথা আত্মশুদ্ধিত্ত্ব, পবিত্র আত্মার অধিকার, রুহে ইনছান বা মানবাত্মার অধিকারেই ধর্ম। ধর্মই জ্ঞান, প্রভু প্রদত্ত নূরের আলোকে যাহার অন্তর পপিূর্ন ও পবিত্র আত্মার ভাবনা চিন্তায় মনে যে, অভ্যন্তরীন সিদ্ধোন্তের সঞ্চার হইয়া নিজেকে সঠিক পথে চালিত করে তাহাই বাস্তব নিরপেক্ষ ধর্ম। নহে আভিজাত্য, যাহার আছে শুধু বংশের পরিচয়, সেই আভিজাত্য-যার জীবন পূর্ন কর্মময়। মানুষ তার কর্মের প্রতি সম্পৃক্ত, তার কর্মে সে ধৃত। জন্ম হউক যথাতথা কর্ম হউক ভাল। হইতেছে জিয়ারত প্রতি মুহুর্তে আসল হুজুরী মক্কা ও মদিনা সহজ আত্মসমর্পন, সাধন, ভজনের মাধ্যমে। জিয়ারত মক্কা ও মদিনা হাজার কাবা লক্ষ, লক্ষ হাজীদের দেখা যাবে করিতেছে জিযারত সর্বক্ষণই তৎক্ষণাতেই। এক দিল যার জিয়ারত হয় হাজার, হাজার হাজী তার তুল্য নয়, এক দিল হাজার কাবা অপেক্ষাও শ্রেষ্ঠ। ইহাই সহজ তীর্থ। পক্ষান্তরে: হাজীরা বিপুল ধনরতœ ব্যয়ে বৎসরে একবার হজ্জ¦ নয়, হিল্লা দিতে যান ইটের কারা ঘরে। অবুঝরে মক্কা হিল্লা, নিরাকারে সাঁই নিরঞ্জন ভজন, সাধন পথে মুরশিদ রূপ ধারণ করেন। জন্ম সার্থক হয়না পার্থিব যশ: খ্যাতিতে যদিও হয় পার্থিব মাপিকাঠির বাহিরে, সহায় থাকেন যদি গুরুগ বাব ও জগত মা মোদের শেষ নিঃশ্বাস পর্যন্ত, ইহ ও পরকালের তরে। সার্থক হবে মোদের জন্ম বাবার পদ দ্বয়ের এক কনা ধলা বালুর বদৌলতেÑ সহায় হইন বাব ও জগত মা অদ্য ২৫ শে ডিসেম্বর ঈসা (আঃ) এর জন্মদিনের উছিলাতে । আমীন॥ মিলাদ ও দোয়া শেষে ভক্তদের মাঝে তবারক বিতরন করা হয় ।