আজ শনিবার, ২৯শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৪ই ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

ট্রাম্প কার্ড হবেন আইভী

স্টাফ রিপোর্টার:

খাদের কিনারায় থাকা আওয়ামী লীগকে পূনরায় সাজিয়ে তোলার প্রচেষ্টা চলছে বলে গুঞ্জন চলছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও নেটিজেনদের মধ্যে চলছে আলোচনা। অনেকে পক্ষে-বিপক্ষে নানা যুক্তি দাঁড় করাচ্ছেন। কেউ বলছেন, আওয়ামী লীগের সভাপতি সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যেই স্বৈরাচারির চরম দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন, সেখান থেকে এই দলকে পূনঃপ্রতিষ্ঠা করা আদৌ সম্ভব নয়।
আবার কেউ বলছেন, আওয়ামী লীগের বিতর্কিতদের পাশ কাটিয়ে ক্লিন ইমেজ ধারিদের সামনের সারিতে রেখে দলকে পূর্নগঠন করা হবে। এক্ষেত্রে আলোচনায় এসেছেন নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের সদ্য সাবেক মেয়র ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভী। তিনি নারায়ণগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সিনিয়র সহ-সভাপতি। রাজনীতিতে ক্লিন ইমেজের হওয়ায় দল গোছানোর ক্ষেত্রে অনেকেই আইভীকে আওয়ামী লীগের ট্রাম্প কার্ড হিসেবে দেখছেন।

গত ৩০ আগস্ট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে একটি টকশো বেশ আলোচনার জন্ম দেয়। ফেস দ্যা পিপলস্ নামের জনপ্রিয় ওই টকশোতে এক রাজনৈতিক বিশ্লেষক বলেন, ‘আওয়ামী লীগকে পূনরায় প্রতিষ্ঠিত করার প্রক্রিয়া চলছে। সাবেক রাষ্ট্রপতি আব্দুল হামিদ ও নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভীকে দিয়ে আওয়ামী লীগকে পূনরায় গঠনের চেষ্টা চালানো হচ্ছে।’

ওই টকশোর ভিডিও ক্লিপটি বেশ আলোচনার জন্ম দিয়েছে রাজনৈতিক মহলে। অনেকেই আওয়ামী লীগকে পূনরায় প্রতিষ্ঠিত করতে দেয়ার বিপক্ষে অবস্থান নিচ্ছেন, আবার কেউ কেউ বলছেন, যেহেতু আওয়ামী লীগ রাজনৈতিক ভাবে নিবন্ধিত দল এবং তাদের নিবন্ধন বাতিল হয়নি, সেহেতু তারা সাংগঠনিক কার্যক্রম পরিচালনা করতে পারে।
জানা গেছে, বিগত প্রায় ১৬ বছর একটানা ক্ষমতায় ছিলো আওয়ামী লীগ। দীর্ঘ এই সময়ে আওয়ামী লীগের অনেকেই মন্ত্রী ও এমপি হয়েছেন। অনেকেই হয়েছেন মেয়র সহ বিভিন্ন পর্যায়ের জনপ্রতিনিধি। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই তারা বিতর্কিত কর্মকাণ্ডের সাথে সম্পৃক্ত হয়েছেন। রয়েছে দুর্নীতিসহ নানা অনিয়মের অভিযোগ। স্বৈরাচারিতার বিষে তারাও যেন বিষাক্ত হয়ে উঠেছিলেন- এমন অভিযোগ সাধারণ মানুষেরও।
ছাত্র-জনতার আন্দোলনে সেই আওয়ামী লীগ সরকারের দীর্ঘ ১৬ বছরের স্বৈরশাসনের অবসান ঘটে। বর্তমানে দলটির বিতর্কিত নেতাদের কেউ আত্মগোপনে আছেন, আবার কেউ গ্রেফতার হয়ে কারাবন্দি রয়েছেন। তবে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের মেয়র ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভী প্রকাশ্যেই রয়েছেন নিজ এলাকায়। তিনিই এক মাত্র ব্যক্তি যিনি গত ১৫ই আগস্ট শোক দিসব পালন করেছেন এবং শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে পুষ্পার্ঘ্য অপর্ণ করেছেন। বিতর্ক না থাকা এবং সৎ সাহসের কারণে আইভী ছিলেন নির্ভার।
এদিকে, নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সংসদ সদস্য শামীম ওসমান বিগত সময়ে মেয়র আইভীকে কোণঠাসা করার চেষ্টা করে গেছেন। শামীম ওসমানের কাছের কর্মীদের অনেকেই আইভীকে নিয়ে বিষোদগার করেছেন। আইভী আওয়ামী লীগ করে না বলেও তাকে নিয়ে কটাক্ষ করেছিলেন শামীম ওসমান। তবে দলের দুঃসময়ে সেই শামীম ওসমান পালিয়ে বেড়ালেও দান্ডায়মান রয়েছেন আইভী। তাকে নিয়ে এখন দল গোছানোর পরিকল্পনা এবং নানা গুঞ্জনও চলছে। ক্লিন ইমেজের হওয়ায় আইভী হতে পারেন আওয়ামী লীগের ট্রাম্প কার্ড। যদিও এই বিষয়ে আইভীর পক্ষ থেকে কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।