আজ সোমবার, ২৫শে ফাল্গুন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১০ই মার্চ, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

গলাচীপায় আমজাদ-আশরাফের মাদক কারবার থেমে নেই

সংবাদচর্চা রিপোর্ট:
নারায়ণগঞ্জ সদর মডেল থানাধীন গলাচিপা ঘোড়াপাড়া এলাকায় আমজাদ ও আশরাফের নেতৃত্বে চলছে রমরমা মাদক ব্যবসা। পুলিশ মাদক ও মাদক কারবারীদের বিষয়ে জিরো ট্রলারেন্স নীতি গ্রহন করলেও এই স্পটে থেমে নেই মাদক বিক্রি। জানা যায়, নগরির চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ী আমজাদ হোসেন (৩৯) ও আশরাফ (৫০) এর নেতৃত্বে আব্দুল কাদের মিয়ার ছেলে বিল্লাল হোসেন (৩২), রহমানের ছেলে জামান (৩২), রায়হান মিয়ার ছেলে রবিউল (৩৬) গিয়াস উদ্দিনের ছেলে ফিরোজ (৪৫) এর সহযোগিতায় গলাচিপা সহ এর আশপাশ এলাকায় মাদক সরবরাহ করে আসছে।

আরো জানা যায়, বিল্লাল, দেলোয়ার, জামান, রবিউল সহ আব্দুল্লাহ, রাব্বী সহ পলাশ আমজাদের শেল্টারে এবং জাবর, ফিরোজ আশরাফের শেল্টারে অত্র এলাকায় মাদক বিক্রি করছে বলে অভিযোগ করেন এলাকাবাসী।

গলাচিপা ঘোড়াপাড়া এলাকায় ইয়াবার ডিলার হিসেবে ব্যাপক খ্যাতি রয়েছে মৃত আ. লতিবের ছেলে আমজাদের। বিগত সময় আমজাদ অবৈধ মাদক জাতীয় ইয়াবা ট্যাবলেট সহ এশাধিক বার জেলা গোয়েন্দা শাখা (ডিবি) সহ সদর মডেল থানা পুলিশের হাতে আটক হলেও আদালত থেকে জামিনে বের হয়ে পুনরায় মাদক ব্যবসা শুরু করে। পুলিশের এশটি সূত্রে জানা যায়, মাদক ব্যবসায়ী আমজাদের বিরুদ্ধে নারায়ণগঞ্জ সদর মডেল থানায় ৭টি মামল রয়েছে। যা যথাক্রমে- (১) নারায়ণগঞ্জ সদর মডেল থানার মামলা নং- ২৮/৬৬৫, তারিখ- ১৭ অক্টোবর-২০১৮, (২) মামলা নং-৪০, তারিখ- ১৪ ফেব্রুয়ারী-২০১৮, (৩) মামলা নং-১৭, তারিখ- ৬ অক্টোবর-২০১৭, (৪) মামলা নং-১০১, তারিখ- ২৬ এপ্রিল-২০১৭, (৫) মামলা নং-৮, তারিখ- ৪ ফেব্রুয়ারী-২০১৭, (৬) মামলা নং- ১৮, ১০ আগষ্ট-২০১৬, (৭) মামলা নং- ৩১, তারিখ- ২১ মার্চ-২০১৬। উল্লেখিত মামলার মধ্যে ৬টি মামলাই মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্র আইনের অধীনে এবং ১টি মামলা অন্য ধারায় রয়েছে।

অপর দিকে গলাচিপা এলাকায় হেরোইন ব্যবসায়ী সু পরিচিত রয়েছে মৃত আলী হোসেনের ছেলে আশরাফের। আশরাফও বেশ কয়েকবার থানা পুলিশের হাতে মাদক সহ আটক হয়েছে। সে দীর্ঘ দিন ধরে অত্র এলাকায় হেরোইন সহ অন্যান্য অবৈধ মাদক ব্যবসা করে আসছে। পুলিশ আটক করলেও জ্ঞি আদলত থেকে জামিনে বের হয়ে আবার মাদক ব্যবসা শুরু করেন বলে এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়। চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ী আশরাফের বিরুদ্ধে সদর মডেল থানায় মামলা রয়েছে বলে পুলিশের এশটি সুত্র নিশ্চিত করেছে। যার মামলা নং-৬৯/২৭৯, তারিখ- ২৫ এপ্রিল-২০১৯। মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রন আইনের মামলা এটি।

এলাকাবাসীর সূত্রে জানা যায়, অত্র এলাকায় কথিত হলুদ সাংবাদিকদের ছত্র ছাঁয়ায় আমজাদ ও আশরাফ মাদক ব্যবসা করে আসছে। ওই সাংবাদিকদের নাম ঠিকানা জানতে চাইলে এলাকাবাসী এই বিষয়ে মুখ খুলতে নারাজ। তবে এশটি সূত্রে জানা যায়, মাদক ব্যবসায়ী আমজাদের এশটি বিশাল নেটওয়ার্ক রয়েছে। তার এই মাদক ব্যবসায়ের নেটওয়ার্কে তার দুই ছেলে আব্দুল্লাহ ও রাব্বী ব্যাপক সহযোগিতা করছে। এরা মোবাইল ফোনের মাধ্যমে বিভিন্ন এলাকায় ইয়বা ট্যাবলেট সাপ্লাই করে বলে জানা যায়। আমজাদের রমরমা মাদক ব্যবসার অঢেল টাকার হিসাব রয়েছে চা বিক্রেতা পলাশের কাছে। পলাশ সম্পর্কে আমজাদের শ্যালক হন। আমজাদের মাদক বিক্রির টাকা পলাশ সংগ্রহ করে থাকে। পলাশ গলাচিপা রেল লাইন এলাকায় সাধারণ একজন চা বিক্রেতা সেজে থাকলেও চা বিক্রির অগচরে সে আমজাদের মাদক বিক্রিতে সহযোগিতা করছে বলে এশটি সূত্র নিশ্চিত করে।
স্থানীয়রা অভিযোগ করে বলেন, পুলিশ চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ীদের তালিকা করেছে এবং অনেক সময় দেখা যায় যার বিরুদেধ দুই এর অধীক মাদক মামলা রয়েছে তাদের ক্রস ফাঁয়ারে মার হচ্ছে। অথচ গলাচিপা এলাকার চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ী আমজাদের বিরুদ্ধে ছয় এর অধিক মামলা থাকলেও অপ্সাত কারণ বশত পুলিশ তার বিরুদ্ধে তেমন কোন ব্যবস্থা গস্খহণ করছে না। পুলিশ আটক করলেও সে বার বার জামিনে বের হয়ে মাদক ব্যবসা করছে। এলাকাবাসী আরো অভিযোগ করে বলেন, আমজাদ ও আশরাফের নেতৃত্বে তরুন প্রজন্ম আজ মাদক ব্যবসায় সম্পৃক্ত হচ্ছে। এদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গস্খহণ করা উচিত পুলিশের।

গলাচিপা ঘোড়াপাড়া এলাকায় মাদক বিক্রির বিষয়ে নারায়ণগঞ্জ সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কামরুল হাসান জানান, মাদকের বিরুদ্ধে আমারা জিরো ট্রলারেন্স নীতি গস্খহণ করেছি। চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ী আমজাদের বিরুদ্ধে ৬টির অধিক মাদক মামলা থাকার পরও কি করে সে মাদক ব্যবসা করছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, যে ৬টি মামলা রয়েছে প্রত্যেকটি মামলাতে আজমাদকে গেস্খফতার করা হয়েছিলো। আমজাদ সহ আশরাফের বিরুদ্ধে যথাযথ আইনানুগ ব্যবস্থা গস্খহণ করা হবে বলে তিনি এই প্রতিবেদককে নিশ্চিত করেন।