আজ বুধবার, ২৪শে আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ৯ই অক্টোবর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

আজাদের পাল্লা ভারী

সংবাদচর্চা রিপোর্ট :

“কেবল আড়াইহাজার কেন্দ্রীক সীমাবদ্ধ থাকেনি আজাদ,
তার নেতৃত্বেই কঠিন ও কার্যকরি আন্দোলন গড়ে তুলেছিল
নেতাকর্মীরা, তাকে দমানোই প্রধান লক্ষ্য ছিলো বাবুর”
স্টাফ রিপোর্টার : নারায়ণগঞ্জে বিএনপির রাজনীতিতে অবধারিত এক নাম নজরুল ইসলাম আজাদ। কেন্দ্রীয় বিএনপির গুরুত্বপূর্ন পদে থাকা এই নেতা নারায়ণগঞ্জের স্থানীয় রাজনীতিতেও বিশেষ গুরুত্ব বহন করে চলেছেন। নেতৃত্বগুণের কারণে নারায়ণগঞ্জের বিএনপি, যুবদল, ছাত্রদল, স্বেচ্ছাসেবকদল সহ অন্যান্য অঙ্গ-সংগঠনের নেতাকর্মীরাও এখন আজাদ মুখি। নারায়ণগঞ্জে বিএনপির রাজনীতিতে একাধিক বলয় থাকলেও আজাদের পাল্লা ক্রমশই ভারী হয়ে উঠছে। বিশেষ করে, আড়াইহাজার বিএনপি তিন ধারায় বিভক্ত থাকলেও সাম্প্রতিক সময়ে একে একে নেতাকর্মীরা আজাদের বলয়ে ভিরতে শুরু করেছেন। নজরুল ইসলাম আজাদও স্থানীয় বিএনপিকে ঐক্যবদ্ধ করতে কাজ করে যাচ্ছেন বলে জানিয়েছেন বিএনপি এবং অঙ্গ-সংগঠনের একাধিক নেতৃবৃন্দ।
জানা গেছে, বিএনপির চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের আস্থাভাজনদের মধ্যে অন্যতম নজরুল ইসলাম আজাদ। তিনি বেগম খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের ঘরের লোক হিসেবে অনেকের কাছেই পরিচিত। মাস কয়েক আগে নজরুল ইসলাম আজাদ লন্ডনে অবস্থানরত তারেক রহমানের সাথে একান্তে সাক্ষাৎ করেছেন। সেই সময়ের ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে আজাদ বেশ আলোচনায় আসেন।
এছাড়াও গত ৫ আগস্টের পর বিএনপির চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া সকল রাজনৈতিক মামলা থেকে মুক্তি পেলে নজরুল ইসলাম আজাদ তার সাথে স্বশরীরে সাক্ষাৎ করেন এবং তার শারীরিক অবস্থার খোঁজ খবর নেন।
এদিকে, বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে নজরুল ইসলাম আজাদ আওয়ামী লীগ নেতাদের চক্ষুশূলে পরিণত হয়েছিলেন। বিশেষ করে, নারায়ণগঞ্জ-২ আসন তথা আড়াইহাজারের সাবেক এমপি নজরুল ইসলাম বাবুর দ্বারা পদে পদে হয়েছেন নির্যাতিত ও নিষ্পেষিত। আড়াইহাজারে আজাদকে দমিয়ে রাখাই যেন প্রধান লক্ষ্য হয়ে দাঁড়িয়েছিল বাবুর। ফলে রাজনৈতিক মামলা তো বটেই, আজাদকে দমিয়ে রাখতে তৎকালিন পুলিশের কিছু অতিউৎসাহি কর্মকর্তা-কর্মচারিদের মাধ্যমে নাজেহাল করা হয়েছিল আজাদকে। তাছাড়া, বাবুর সন্ত্রাসী বাহিনী দ্বারাও আজাদের উপর একের পর এক হামলা চালানো হয়েছিল।
স্থানীয় নেতাকর্মীরা বলছেন, বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের শাসনামলে আড়াইহাজারে বিএনপি নেতাদের মধ্যে নজরুল ইসলাম আজাদ তৎকালিন এমপি বাবুর দ্বারা যতটা নির্যাতনের শিকার হয়েছিল, অন্য কেউ ততটা নির্যাতনের শিকার হয়নি। আওয়ামী লীগের এমপি বাবু বিএনপির অনেককেই সুরক্ষিত রেখেছিলেন কেবল নজরুল ইসলাম আজাদ ছাড়া।
তবে, এত জুলুম নির্যাতনের পরও নজরুল ইসলাম আজাদ দমে যাননি। তিনি এক দিকে যেমন আড়াইহাজারে বিএনপি নেতাকর্মীদের সক্রিয় ও সরব রেখেছেন, অন্যদিকে দলের আন্দোলন সংগ্রামসহ অন্যান্য কর্মসূচি পালনেও সরব ছিলেন। বিগত দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রাক্কালে আড়াইহাজারে নজরুল ইসলাম আজাদের নেতৃত্বেই সবচেয়ে কঠিন ও কার্যকরি আন্দোলন গড়ে তুলেছিলেন নেতাকর্মীরা। গত ৫ আগস্টের আগেও নজরুল ইসলাম আজাদের দিক নির্দেশনায় আড়াইহাজার থেকে ছাত্রদল নেতাকর্মীসহ সাধারণ ছাত্ররা আন্দোলণে কার্যকরি ভূমিকা রেখেছিলেন।
জানা গেছে, নজরুল ইসলাম আজাদ বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক পদে আছেন। পাশাপাশি তার সাংগঠনিক দক্ষতার কারণে সম্প্রতি তাকে ঢাকা বিভাগীয় বিএনপির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক করা হয়েছে।
নজরুল ইসলাম আজাদের রাজনীতি তাই আড়াইহাজার কেন্দ্রীক সীমাবদ্ধ থাকেনি। তিনি ঢাকা বিভাগের মধ্যে থাকা প্রতিটি জেলার রাজনৈতিক এবং সাংগঠনিক বিষয়ে মনোনিবেশ করেছেন। বিশেষ করে, নারায়ণগঞ্জ মহানগর সহ প্রায় প্রতিটি থানা বিএনপির নেতারা আজাদের দিক নির্দেশনায় রাজনীতিতে সক্রিয় রয়েছেন। এছাড়াও নারায়ণগঞ্জ জেলা, মহানগর ও থানা কেন্দ্রীক যুবদল, ছাত্রদল ও স্বেচ্ছাসেবক দল সহ অন্যান্য অঙ্গ-সংগঠনের নেতাকর্মীরা আজাদের মাধ্যমে ঐক্যবদ্ধ ভাবে রাজপথে সরব রয়েছেন।
সবশেষ গত ১৭ সেপ্টেম্বর ঢাকায় অনুষ্ঠিত আন্তর্জাতিক গণতন্ত্র দিবসের মহাসমাবেশে নজরুল ইসলাম আজাদের নেতৃত্বে অন্তত ২০ হাজার নেতাকর্মী মিছিল নিয়ে যোগদান করেন। আজাদের নেতৃত্বে এই বিশাল মিছিলটি সমাবেশে সকলের নজরকাড়ে। ওই সমাবেশে ভার্চুয়ালি প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।
বিএনপি নেতা নজরুল ইসলাম আজাদ বলেন, ‘দীর্ঘদিন পর স্বৈরাচার শেখ হাসিনামুক্ত হয়েছে বাংলাদেশ। দেশের মানুষ মুক্তভাবে নিঃশ্বাস নিতে পারছে। সেজন্য তারা স্বতঃস্ফূর্তভাবে বিএনপির সমাবেশে যোগ দিয়েছে। ইনশআল্লাহ আগামীতে জনগণের ম্যান্ডেট নিয়ে বিএনপি রাষ্ট্র গঠন করবে এবং আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নেতুত্বে বাংলাদেশ হবে একটি অত্যাধুনিক ও স্বনির্ভর এবং বৈষম্যহীন।’