সংবাদচর্চা ডেস্ক:
প্রকৃতিতে গ্রীষ্ম আসা মানে অসহ্য গরমের তাপ, ক্লান্তি আর অশান্তি। আর সেই গরম থেকে রেহাই দিতেই প্রকৃতি চমৎকার রসালো সব ফলের পসরা সাজিয়ে বসে। এই ফল আমাদের স্বাদের খোরাক তো মেটায়ই, গরম থেকে নিস্তার দেয় অনেকটাই। আজ জানবো গরমের বিভিন্ন ফল আর তাদের সব গুনাগুণ নিয়ে-
আম
ফলের রাজা আম। এর স্বাদ, পুষ্টি ও গন্ধের কোনো তুলনাই হয়না। পাকা আমে প্রচুর ক্যারোটিন থাকে। এই আম লিভার বা যকৃতের জন্য ভীষণ উপকারী। রাতকানা ও অন্ধত্ব প্রতিরোধে কাঁচা ও পাকা আম অতুলনীয়।
কাঁঠাল
আমাদের জাতীয় ফল কাঁঠালে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে শর্করা, আমিষ ও ভিটামিন-এ। কাঁচা কাঁঠাল তরকারি হিসেবে খাওয়া যায়। এর দানা ভেজে কিংবা রান্না করে খেতেও মজা। পাকা কাঁঠালে রয়েছে প্রচুর ভেষজগুণ। এর শাঁস ও দানা বলবৃদ্ধিকারক হিসেবে বিবেচিত। যাদের অনিদ্রা আর বিপাকে সমস্যা আছে, তাদের জন্য কাঁঠাল উৎকৃষ্ট খাবার।
জাম
বাংলাদেশের অত্যন্ত সুপরিচিত এবং সৃপরিচিত একটি ফল জাম। জামের কচিপাতা পেটের অসুখ কমাতে পারে। আম ও জামের রস একসঙ্গে খেলে ডায়বেটিস রোগ ভালো হয়। এছাড়াও জামের রস রক্তকণিকা পরিষ্কারে সহায়তা করে।
লিচু
লিচু গরমের অসম্ভব রসালো একটি ফল। তৃষ্ণা মেটাতে লিচু দারুণ সহায়ক। কাশি, পেটে ব্যথা ও টিউমার বৃদ্ধি রোধে লিচু অনেক উপকারী। লিচুর জ্যাম তৈরি করে সংরক্ষণ করা যায়। তবে যাদের গ্যাসট্রিকের সমস্যা রয়েছে তাঁরা সাবধান। তাদের লিচু কম খাওয়াই ভালো।
বাঙ্গি
রসালো ফল হিসেবে বাঙ্গি যথেষ্ট চাহিদাসম্পন্ন। এর পুরোটাই পানীয় জলীয় অংশে ভরপুর। এতে ভিটামিন সি, শর্করা ও সামান্য ক্যারোটিন থাকে যা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়, হজম ক্ষমতা বেড়ে যায় অনেকখানি।
পেঁপে
পাকা পেঁপে ভিটামিন ‘এ’ সমৃদ্ধ ফল। ১০০ গ্রাম পেঁপেতে ভিটামিন ‘এ’ থাকে ১১১০ ইউনিট। এছাড়া প্রচুর শর্করা, প্রোটিন, ভিটামিন বি ও সি. খনিজ লবণ এবং খাদ্যশক্তি থাকে। কাঁচা পেঁপেও বেশ পুষ্টিকর সবজি। পেঁপের সাদা আঠায় প্যাপেইন নামক এনজাইম থাকে, যা প্রোটিন পরিপাকে সহায়তা করে।
তরমুজ
গরমে ক্লান্তি দূর করতে তরমুজের কোনো তুলনা হয় না। তরমুজ তৃষ্ণা মেটায়, রক্তস্বল্পতা দূর করে। এতে রয়েছে যথেষ্ট পরিমাণে লৌহ পদার্থ। এতে শরীরে শক্তি জোগায়, ক্লান্তিবোধ দূর করে।
আনারস
আনারস খেতে দারুণ মজা। পাকা আনারস শরীরে শক্তি বাড়ায়। আনারস কফ নিরাময়ে সহায়ক, পিত্তনাশক এবং হজম বৃদ্ধি করে। এ ফলের শাঁস ও পাতার রস মধুর সঙ্গে মিশিয়ে খেলে কৃমি থেকে রক্ষা পাওয়া যায়। আনারসের জ্যাম-জেলি তৈরি করেও সংরক্ষণ করা যায়।
বেল
বেল সারা বছর পাওয়া গেলেও গরমে এর চাহিদা বেশি। কোষ্ঠকাঠিন্য ও আমাশয় সারাতে বেল অনেক উপকারী। এই ফলের পাতার রস মধুর সঙ্গে মিশিয়ে খেলে চোখের ছানি ও চোখ জ্বলা সমস্যা কমায়।
জামরুল
রসালো ও হালকা নোনা-মিষ্টি জামরুল গ্রীষ্মকালে পাওয়া যায়। ভিটামিন বি-২ সমৃদ্ধ এই ফল ডায়বেটিস রোগীর জন্য অনেক উপকারী। এটি পানির চাহিদা পূরণ করে, খাবারের রুচি বাড়ায়।