নিজস্ব প্রতিবেদক:
নারায়ণগঞ্জ মহানগরের সিদ্ধিরগঞ্জে থানা পুলিশের বাঁধায় চিহ্নিত প্রতারক ও ভূমিদস্যু মনির হোসেনের জমি দখল পন্ড হয়ে গেছে। রবিবার (৭ এপ্রিল) দুপুর সোয়া ১টায় মহানগরের সিদ্ধিরগঞ্জের পাইনাদী নতুন মহল্লা পিএমের মোড় এলাকায় আদালতে বিচারধীন একটি জমি দখল করতে গেলে সিদ্ধিরগঞ্জ থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মাহবুবের নেতৃত্বে পুলিশ দখল কাজ বন্ধ করে দিয়েছে। জমি দখলকে কেন্দ্র করে বিরোধ নিষ্পত্তির জন্য উভয় পক্ষকে কাগজপত্র নিয়ে থানায় বসার নির্দেশ দিয়েছে।
পুলিশ জানায়, পাইনাদী নতুন মহল্লা এলাকার ছমির উদ্দিন নামে এক ব্যক্তি বাদী হয়ে একই এলাকার মৃত সাইজ উদ্দিনের ছেলে মনির হোসেনকে বিবাদী করে জোর পূর্বক জমি দখলের অভিযোগে থানায় একটি সাধারন ডায়েরী করলে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে কাজ বন্ধ করে দেয়।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, মনির হোসেন পাইনাদী এলাকার আব্দুল হামিদের ছেলে মনিরুল ইসলাম খোকনের কাছ থেকে গত ২০১৭ সালের ১৭ মার্চ সিদ্ধিরগঞ্জ মৌজার সিএস ও এসএ ২৯৬ নং দাগে আড়াই শতাংশ জমি রেজিষ্ট্রি বায়না করে। পরবর্তীতে মনির হোসেন যাচাই-বাছাই করে দেখে বায়নাকৃত জমিটি অনেক আগেই বিক্রি হয়ে গেছে। পরে সে দলিল দাতার বিরুদ্ধে নারায়ণগঞ্জ চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে একটি মামলা করে (সিআর নং-৫৭৮/১৭, টিআর নং-১৭৮/১৭, ধারা: ৪৬৭/৪৬৮/৪৭১/৪০৬/৪২০/৫০৬ দ: বি:)। মামলার অভিযোগে বলা হয় বিবাদীগনের দাদা বিগত ১৯৪১ সালে সিদ্ধিরগঞ্জ মৌজার ২৯৬ নং দাগে ৪৪ শতাংশ সম্পত্তি নেওয়াজ ভানুর নিকট সাফ কবলায় দলিল মূলে বিক্রি করিয়া দখল বুঝাইয়া দিয়া নি:স্বত্যবান হয়। এ সংক্রন্ত মামলা আদালতে বিচারাধীন থাকা সত্ত্বেও প্রতারক মনির হোসেন উক্ত নালিশা জমিতে ঘর তুলে দখল করতে গেলে পুলিশ তা বন্ধ করে দেয়।
এ ব্যাপারে মনির হোসেনের সাথে কথা বলে জানা যায় সে আব্দুল হামিদের ওয়ারিশগনের কাছ থেকে ৫ শতাংশ জমি ক্রয় করেছে। তবে এ নিয়ে মামলা চলছে সে বিষয়টি জানায়নি।
এদিকে ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, মনির হোসেন এলাকার একজন চিহ্নিত প্রতারক। বিভিন্ন মানুষের সম্পত্তিতে জাল দলিল তৈরী করে ঝামেলা সৃষ্টি করাই তার মূল পেশা। তার এহেন অপকর্ম থেকে তার আপন ভাই, চাচা, দাতা এমনকি তার বাবাও রেহাই পায়নি।
উল্লেখ্য,
গত ২০১৫ সালের ১৩ ডিসেম্বর নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাবের হামিদুর রহমান সিনহা মিলনায়তনে এই মহা প্রতারক মনির হোসেনের বিরুদ্ধে সরকারের সচিব, ম্যাজিস্ট্রেট, সেনা কর্মকর্তা সহ বিভিন্ন কর্মকর্তার নাম ব্যবহার করে সাধারণ মানুষের লাখ লাখ টাকা ও জায়গা সম্পত্তি জোরপূর্বক দখল করে নেয়ার অভিযোগ সংবাদ সম্মেলন করেছিল তার আপন ছোটভাই মাহবুব হোসেন মনিকসহ স্থানীয় এলাকাবাসী। এছাড়াও তার বিরুদ্ধে মন্ত্রীদের জাল স্বাক্ষর, জাল সার্টিফিকেট, ভুয়া দলিল তৈরির অভিযোগও করেন তারা। শুধু তাই নয় মনির হোসেনের প্রতারণার শিকার সাধারণ জনগণকে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করার অভিযোগও করেন তারা। সচেতন নাগরিক সমাজ সিদ্ধিরগঞ্জের ব্যানারে মনির হোসেনের অত্যাচার থেকে স্বস্থি ও জালিয়াতি রোধের দাবিতে সাংবাদ সম্মেলনে ভুক্তভোগীরা এসব কথা বলেন।
এসময় উপস্থিত ছিলেন, সিদ্ধিরগঞ্জ পাইনাদী পূর্বপাড়া (হিরাঝিল) এলাকার মনির হোসেনের প্রতারণায় ভুক্তভোগী তারই আপন ছোট ভাই মাহবুব হোসেন মানিক, রকিবুল ইসলাম রাজীব, পাইন মিয়া, আনোয়ার হোসেন, করিমউল্লাহ, শামসুল হক প্রমুখ। তাদের প্রত্যেকের কাছ থেকে টাকা, তাদের জমি অবৈধ ভাবে দখল করতে বিভিন্ন মামলা ও হুমকির অভিযোগ করেন।
লিখিত বক্তব্যে, আনোয়ার হোসেন বলেন, মনির হোসেন ৫ম শ্রেণী পাশ কিন্তু তারপরও সাধারণ মানুষকে বোকা বানিয়ে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। মনির বর্তমানে ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট এলাকার রোড নং ৬, সিভিল সুলতানার বাড়ির ৭২ নং বাসায় থেকে নিজেকে সেনা কর্মকর্তা পরিচয় দেয়। তারা বিরুদ্ধে মতিঝিল থানায়, সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় একাদিক জমি, নগদ টাকা আত্মসাত করার সহ বিভিন্ন প্রত্যারণার মামলা আছে। এছাড়াও এর প্রতিবাদ করতে যাওয়া সকলকে বিভিন্ন নারী সংগঠিত মামলা দিয়ে কাবু করার চেষ্টা করে থাকে।