সিদ্ধিরগঞ্জের শিমরাইল মোড়ে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক দখল করে অবৈধ ভাবে গড়ে তুলা বাজারসহ বিভিন্ন স্থাপনা উচ্ছেদ করেছে সওজ কর্তৃপক্ষ। সোমবার (৯ ডিসেম্বর) সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত বুল্ডোজার দিয়ে গুড়িয়ে দিয়েছে ৫ শতাধিক দোকান পাট। ঢাকা জোন এস্টেট ও আইন কর্মকর্তা (সওজ) এবং যুগ্ন সচিব মো: মাহবুবুর রহমান ফারুকীর নেতৃত্বে বিপুল সংখ্যক আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য ও উচ্ছেদ কর্মী নিয়ে চলে এ অভিযান।
সকাল থেকে দুইটি বেকো এবং একটি পেলোডার নিয়ে বিপুল সংখ্যক উচ্ছেদ কর্মী অভিযানে নামে। ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের ঢাকাগামী লেনে সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের কার্যালয়ের আশে পাশে এবং রেন্ট-এ কার স্ট্যান্ডের আশে পাশে, চাঁনসুপারের সামনে থেকে ডাচ বাংলা ব্যাংকের মোড় এবং ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম গামী লেনের মুক্তিনগর এলাকায় বিভিন্ন বাস কাউন্টার এবং ফলের দোকানসহ নানাবিধ দোকানপাট উচ্ছেদ করা হয়। এদিকে শিমরাইল নারায়ণগঞ্জ সড়কের মাথায় সড়ক ও জনপথ কার্যালয়ের স্টাফ কোয়ার্টারের জায়গায় অবৈধভাবে গড়ে তুলা ৩টি দোকান লোক দেখানো আঁচর দেয়া হয়। এতে স্থানীয়দের মাঝে মিশ্র প্রতিক্রিয়া বিরাজ করছে।
ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক ও তার আশপাশের ফাঁকা জায়গা দখল করে অবৈধ স্থাপনা ও বাজার গড়ে তুলায় ক্ষোভ প্রকাশ করে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো: মাহবুবুর রহমান বলেন, গভর্নমেন্ট এন্ড লোকাল অথারিটি ল্যান্ড এন্ড বিল্ডিং (রিকভারি অফ পজিশান) অর্ডিনেন্স ১৯৭০ এর ধারা ২(খ) ডেপুটি কমিশনারের ক্ষমতাবলে এ উচ্ছেদ এবং মোবাইল কোর্ট অভিযান পরিচালনা করা হয়। সড়কটি যেন ফের দখল করতে না পারে সেজন্য আমি নিজে উপস্থিত থেকে গাড়ি চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করে দেব।
অভিযানে উপস্থিত ছিলেন, নারায়ণগঞ্জ সড়ক ও জনপথ বিভাগ-১ এর উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী মো: আবদুল সাত্তার শেখ, সার্ভেয়ার মো: হুমায়ূনসহ অন্যান্য কর্মকর্তা, জেলা ট্রাফিক বিভাগের টিআই মো: জিয়া, সিদ্ধিরগঞ্জ থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আজিজুল হক ও পরিদর্শক (অপারেশন) এইচ এম জসিম উদ্দিন।
জানা গেছে, নারায়ণগঞ্জ সড়ক ও জনপথ বিভাগের কার্যালয় সংলগ্ন রেন্ট-এ কার স্ট্যান্ড থেকে পশ্চিম দিকে আহসান উল্লাহ সুপার মার্কেট পর্যন্ত প্রায় পাঁচশ ফুট দোকান সড়ক দখল করে স্থানীয় একটি প্রভাবশালী মহল বাজার গড়ে তুলেছিল। ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের যানজট নিরসনের লক্ষ্যে গত বছরের প্রথম দিকে নারায়ণগঞ্জ-আদমজী শিমরাইল সড়কের যানবাহন গুলো ঢাকার দিকে যাওয়ার জন্য ১৮ ফুট প্রশস্ত প্রায় সাড়ে তিনশ ফুট দীর্ঘ বাইপাস একটি সড়ক নির্মাণ করেন সড়ক বিভাগ। চলতি বছরের প্রথম দিকে সড়কটি পাকা করা হয়। মাস দেড়েক সড়কটি দিয়ে গাড়ি চলাচল করেছিল। কিন্তু গাড়ি চলাচল বন্ধ করে একটি প্রভাবশালী মহল সড়কটি দখল করে ফুটপাত বাজার গড়ে তুলে। বাজার থেকে দৈনিক কমপক্ষে লক্ষাধিক টাকা ভাড়া ও চাঁদা আদায় করত দখলকারিরা। বাজারটি উচ্ছেদ করায় সড়কটি গাড়ি চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করা হলেও মাথায় হাত পড়েছে অন্তত পাঁচশতাধিক ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীর। আলম নামে একজন ব্যবসায়ী জানায়, এক লাখ টাকা অগ্রিম ও দৈনিক দুইশ টাকা ভাড়া দিয়ে ৪ মাস আগে পান সিগারেটের দোকান নিয়েছিল। পেটের দায়ে স্ত্রীর গহনা বিক্রি ও ঋণ নিয়ে টাকার ব্যবস্থা করে। উচ্ছেদ করায় ব্যবসা বন্ধ হয়ে পাড়ায় ঋণ পরিশোধ করাত দূরের কথা সংসার চালানোই দায় হয়ে পড়বে। শুধু আল-আমিন নয় প্রত্যেক ব্যবসায়ী আর্থিক ভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে।