আজ শুক্রবার, ৭ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২২শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

সামান্য বৃষ্টিতেই হাটু পানি

পানি নিস্কাশনের ব্যবস্থা না থাকায় সামান্য বৃষ্টিতেই তলিয়ে যায় রূপগঞ্জ উপজেলার গঙ্গানগর সরকারি প্রাথমিক ব্যিালয়ের মাঠ। গত দু’দিনের বৃষ্টিতে বিদ্যালয়ের মাঠটি এখণ জলাশয়ে পরিণত হয়েছে এবং অসহনীয় দূর্ভোগে পড়েছে বিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীরা। অভিভাবকরা বলছেন সামান্য বৃষ্টিতেই যদি এই অবস্থা হয়, তাহলে ভরা বর্ষায় পরিনতি ভয়াবহ হবে।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, বিদ্যালয় মাঠে পানি থৈ থৈ করছে। শিক্ষার্থীরা প্যান্ট হাঁটু পর্যন্ত গুটিয়ে শ্রেণিকক্ষে যাওয়া আসা করছে। কারো কারো কাপড় ভিজে গেছে। বিদ্যালয়ের তিন দিকে বহুতল ভবন। পশ্চিম দিকে রূপসী-মুড়াপাড়া-কাঞ্চন সড়ক। তাতে পানি বের হওয়ার ব্যবস্থা নেই। নিস্কাশনের ব্যবস্থা না থাকায় সারা বছরই মাঠে পানি জমে থাকে। মাঝে মধ্যেই মাঠে হাঁস সাঁতার কাটে।

বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নাসিমা সুলতানা বলেন, ১৯৭৩ সালে গঙ্গানগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় স্থাপিত হয়। বর্তমানে এখানে ২৭৪ জন শিক্ষার্থী লেখাপাড়া করছে। পাঠদানের জন্য রয়েছে ৬ জন শিক্ষক-শিক্ষিকা। ফলাফলও ভালো। জলাবদ্ধতা দূর করতে মাঠে মাটি ভরাট করা হলেও পানি নিস্কাশনের ব্যবস্থা না থাকায় জলাবদ্ধতা স্থায়ী রূপ নিচ্ছে। তাতে বিদ্যালয়ের নিয়মিত শিক্ষার্থীদের সমাবেশ কিংবা অ্যাসেম্বলি হয় না । খেলাধুলাসহ স্বাভাবিক হাঁটা চলা করতে পারে না তারা। স্কুলের শ্রেণিকক্ষে প্রবেশ করে শিক্ষার্থীদের বন্দি হয়ে থাকতে হয়। জলাবদ্ধতার কারণে শিক্ষার্থীরা খেলাধুলা ও অ্যাসেম্বলী থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। এছাড়া বিদ্যালয়ের ভবন অত্যান্ত ঝুঁকিপূর্ণ। ভবনের দেয়াল ও ছাদ থেকে পলেস্তেরা খসে পড়ছে। দুর্ঘটনার ভয়েও শিক্ষার্থীদের বিদ্যালয়ে উপস্থিতি দিনদিন কমে যাচ্ছে।

বিদ্যালয়ের ২৩ শতাংশ জমির অধিকাংশই এখন বেদখল হয়ে গেছে। বিদ্যালয়ের নামে নামজারি করা ১২ শতাংশ জমিই এখন দখলে রয়েছে। এ বিদ্যালয়টি স্থানীয় ও সংসদ নির্বাচনী ভোট কেন্দ্র। সেই হিসেবে আগামী নির্বাচনের আগেই নতুন ভবন নির্মাণ করার প্রয়োজন বলে এলাকাবাসী মনে করছে। রূপগঞ্জ উপজেলা শিক্ষা অফিসারকে ম্যানেজ করতে না পারায় দীর্ঘ দিনেও গঙ্গানগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নতুন ভবন নির্মাণে বরাদ্দ পাওয়া যাচ্ছে না। অগ্রিম অর্থ নিয়ে নতুন ভবন নির্মাণের তালিকা করা হয় বলে অভিযোগ রয়েছে।

রূপগঞ্জ উপজেলা শিক্ষা অফিসার জায়েদা আখতার তাঁর বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, বিদ্যালয় ভবনটি পুরাতন এবং জরাজীর্ণ হওয়ায় কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে। শিগগিরই নতুন ভবন নির্মাণ ও জলাবদ্ধতা নিরসনের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার অহীন্দ্র কুমার মন্ডল বলেন, সরেজমিন পরিদর্শন করে কর্তৃপক্ষকে লিখিতভাবে জানানো হয়েছে। অগ্রাধীকার ভিত্তিতে গঙ্গানগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভবন নির্মাণ করা হবে।