সংবাদচর্চা রিপোর্ট
শহরে মোটরবাইকে করে ৩ জন এমনকি চারজনও চলাচল করে। মেশিন চালিত রিকশা ও ব্যাটারি চালিত রিকশায় গাদাগাদি করে আসা যাওয়া করছেন মানুষজন। বাজারে ভিড়, সড়ক-ফুটপাতেও সামাজিক দূরত্ব না মেনেই চলছে মানুষ। তাদের হাবভাবে বুঝার উপায় নেই করোনা ভাইরাস হায়েনার মতো লাল চোখে তাকিয়ে আছে। যে কেউ যে কোন সময়ে আক্রান্ত হতে পারে এমনকি মারাও যেতে পারে। গতকাল পর্যন্ত প্রাণঘাতি এ ভাইরাসে নারায়ণগঞ্জে আক্রান্ত হয়েছেন ৪ হাজার ৪ জন আর এ পর্যন্ত মারা গেছেন ৯৪ জন। সচেতন মহলের মতে, এখনও সব মানুষ স্বাস্থ্য বিধি না মানলে ভবিষ্যতে ভয়ঙ্কর হবে পরিস্থিতি।
দেশে করোনার প্রাদুর্ভাব শুরু হওয়ার পর থেকেই নারায়ণগঞ্জ এর নাম আরেকবার আলোচনায় আসে। এক পর্যায়ে আইইডিসিআর এ জেলাকে করোনা ক্লাস্টার ঘোষণা করে। পরে গোটা জেলাে লকডাউন ঘোষনা করা হয়। প্রত্যক্ষদর্শীদের মতে, লকডাউনের প্রথমদিকে মানুষ কিছুটা সচেতন হয়েছিলো। সবাই মুখে মাস্ক পরা শুরু করে, ব্যবহার করে হ্যান্ড সেনিটাইজার। এ সময় থেকে বিভিন্ন সামাজিক-রাজনীতিক সংগঠন ও ব্যক্তি উদ্যোগে সচেতনতা সৃষ্টিতে কাজ করা হয়। প্রশাসন থেকেও প্রথম সোপান ছিলো সচেতনতা। কিছু মানুষ সে সময়ে সচেতন হওয়ার অনেকে ভেবেছিলেন এই বুঝি নতুন যাত্রা শুরু হলো। এখন থেকে মানুষ নিয়ম মেনে সব সময় চলাচল করবে। তবে তাদের এ ধারণা মিথ্যা প্রমান হয় লকডাউন তুলে নেয়ার পরই। সব কিছু খুলে দেয়া ও লকডাউন তুলে নেয়ার পর মানুষ অবাধে আগের মতোই চলাচল শুরু করে। গতকাল সরেজমিনে দেখা যায়, রিকশায় করে ৩ থেকে ৪ জন যাত্রি চলাচল করছে। কারও মুখে মাস্ক আছে কারও নেই। একইভাবে শহরে প্রবেশ নিষেধ থাকলেও ব্যাটারি চালিত ইজিবাইক, মেশিন রিকশা অবাধে চলছে তাও বেশী যাত্রি নিয়ে। আশপাশের এলাকায় যাতায়াতে চলাচলকারি সিএনজিতেও যাত্রির সংখ্যা কম দেখা যায়নি।
জেলা সিভিল সার্জন অফিসের সূত্র মতে, প্রায় প্রতিদিনই শতাধিক মানুষ নতুন করে করোনায় আক্রান্ত হচ্ছেন। কোন কোন দিন শত ছুঁই ছুঁই করে। এ অবস্থায় জেলা সিভিল সার্জন ডা. ইমতিয়াজ আহমেদ মানুষকে আবারও সচেতন হওয়ার তাগিদ দিয়েছেন। নিয়মিত হাত ধোঁয়া, মাস্ক ব্যবহার, অযথা বাইরে না আসা ও সামাজিক দূরত্ব মানার উপর জোর দিয়েছেন তিনি।
তবে বাস্তব চিত্র উল্টো। চাষাঢ়ায় অবস্থিত সমবায় মার্কেট দোকান মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুর রহমান লিটন জানান, মার্কেটে বেশিরভাগ ক্রেতা আসে মাস্ক পরে। তবে কেউ কেউ মাস্ক ছাড়াই আসে।
ট্রাফিক পুলিশের এক কর্মকর্তা জানান, রিকশা আটকে মাস্ক পরার কথা বললেও অনেকেই তা শুনে না।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, এক রিকশায় ৩ থেকে ৪ জন উঠে আসা যাওয়া করে। তাদের মধ্যে সামাজিক দূরত্বের কোন বালাই নাই।
সচেতন মহলের মতে, সারা জীবন যারা অনিয়ম করে চলে আসছে তারা সহজে নিয়মের মধ্যে আসবে না। তাদেরকে নিয়মে আনতে হলে একদিকে প্রচারণা চালাতে হবে আরেক দিকে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীকে কঠোর হতে হবে।