নিজস্ব প্রতিবেদক:
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বলেছেন, আর কয়টা দিন আন্দোলন করব। অপেক্ষা করুন। সরকারকে জায়গা মতো পাঠিয়ে দিব। সময় আমাদেরও নাই, সরকারেরও নাই।
আজ মঙ্গলবার রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আয়োজিত জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের জনসভায় এ কথা বলেন মির্জা আব্বাস।
মির্জা আব্বাস বলেন, দেশে অত্যাচার, অনাচার, খুন, গুম, ডাকাতি সব পরিপূর্ণ করেছে সরকার। এসব থামাতে হবে। অন্ধকার রাতে আর কোনো গ্রেপ্তার হতে দেওয়া হবে না।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য বলেন, আমরা ক্ষমতা চাই না। ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য আন্দোলন করছি না। আন্দোলন করছি মানুষের ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে।
সরকারের পদত্যাগ, নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন, বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াসহ সব রাজবন্দির নিঃশর্ত মুক্তিসহ সাত দফা দাবিতে ওই জনসভার আয়োজন করা হয়।
জনসভায় সভাপতিত্ব করছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। সঞ্চালনা করছেন প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দীন চৌধুরীর এ্যানী। জনসভার প্রধান অতিথি জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের আহ্বায়ক ও গণফোরামের সভাপতি ড. কামাল হোসেন ও প্রধান বক্তা জেএসডির সভাপতি আ স ম আবদুর রব উপস্থিত আছেন। এ ছাড়া কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি বঙ্গবীর আবদুল কাদের সিদ্দিকী, নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না, জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়ার সদস্য সুলতান মোহাম্মদ মুনসুর আহমেদ, গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী, বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম, গণফোরামের নির্বাহী সভাপতি সুব্রত চৌধুরী ও সাধারণ সম্পাদক মোস্তাফা মোহসীন মন্টু, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায় ও ড. আবদুল মঈন খান, ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল নোমান, আলতাফ হোসেন, সেলিমা রহমান, বরকত উল্লাহ বুলু, মো. শাজাহান, শামসুজ্জামান দুদু, ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন, অ্যাডভোকেট আহমেদ আযম খান, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আমানউল্লাহ আমান, জয়নুল আবদীন ফারুক, হাবিবুর রহমান হাবিব, ড. সুকোমল বড়ুয়া, আবদুস সালাম, আতাউর রহমান ঢালী, যুগ্ম মহাসচিব ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন, সাংগঠনিক সম্পাদক ফজলুল হক মিলন, এমরান সালেহ প্রিন্স ও শামা ওবায়েদ প্রমুখ উপস্থিত হয়েছেন।
এ ছাড়া বিএনপির সহপ্রচার সম্পাদক কৃষিবিদ শামিমুর রহমান, নির্বাহী কমিটির সদস্য নাজিম উদ্দীন আলম, তকদির হোসেন মো. জসিম, আবু নাসের মোহাম্মাদ রহমাতুল্লাহ, কামরুদ্দিন এহিয়া খান মজলিস, যুবদলের সভাপতি সাইফুল আলম নিরব, স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি শফিউল বারী বাবু, সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম ফিরোজ, মহিলা দলের সভাপতি আফরোজা আব্বাস, সাধারণ সম্পাদক সুলতানা আহমেদ, সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হেলেন জেরিন খান, ছাত্রদলের সভাপতি রাজিব আহসান, সহসভাপতি আলমগীর হাসান সোহান, নাজমুল হাসান, জহুরুল ইসলাম বিপ্লব, সহসাধারণ সম্পাদক আরিফা সুলতানা রুমা প্রমুখ জনসভায় উপস্থিত রয়েছেন।
এর আগে আজ দুপুর দেড়টায় পবিত্র কোরআন তিলাওয়াতের মধ্য দিয়ে জনসভার আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়। এই সভা চলবে বিকেল ৫টা পর্যন্ত। কোরআন তিলাওয়াত করেন হাফেজ মাওলানা নেসার উদ্দিন। এর পর সদ্য প্রয়াত বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য তরিকুল ইসলামের রুহের মাগফিরাত কামনা করে দোয়া করা হয়।
এদিকে সকাল থেকেই সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের সামনে জড়ো হতে থাকেন জোটের নেতাকর্মীরা। রাজধানীসহ ঢাকার আশপাশের জেলা থেকে আসা নেতাকর্মীরা স্লোগানে স্লোগানে সমাবেশস্থল মুখর করে রাখেন। তারা বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবি জানান।
এ ছাড়া গণসংগীতও পরিবেশন করা হয়। নেতাকর্মীরা ‘বন্দি আছে আমার মা, ঘরে ফিরে যাবে না’, ‘হামলা করে আন্দোলন, বন্ধ করা যাবে না’ ইত্যাদি স্লোগান দেন। তাঁদের হাতে বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া, ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ছবিসংবলিত ফেস্টুনও দেখা যায়। দেখা যায়, খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে বিভিন্ন স্লোগানযুক্ত ব্যানারও।
জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও খালেদা জিয়ার মুক্তিসহ একাধিক দাবিতে আগামীকাল বুধবার দ্বিতীয় দফায় প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সংলাপে বসতে যাচ্ছে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট।
এর আগে গত ১ নভেম্বর প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে গণভবনে প্রথম দফার বৈঠক শেষ হলেও সংলাপ অব্যাহত রাখার আহ্বান জানিয়ে গত ৩ নভেম্বর ফের প্রধানমন্ত্রী বরাবর চিঠি দেয় ঐক্যফ্রন্ট।