রূপগঞ্জ প্রতিনিধি: রূপগঞ্জের তারাব থেকে নিষিদ্ধঘোষিত জেএমবির সারোয়ার-তামীম গ্রুপের দুই সক্রিয় সদস্যকে গ্রেফতার করেছে র্যাব। র্যাব-১১ এর একটি দল বুধবার (১১ অক্টোবর) রাতে ওই এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের আটক করে। এসময় তাদের কাছ থেকে জঙ্গীবাদী নোট উদ্ধার করা হয়। উভয়ে নারায়ণগঞ্জের বন্দর থানার একটি মামলার পলাতক আসামী। গ্রেফতারকৃতরা হচ্ছেন-মামুনুর রশি ওরফে মামুন(৩৪) ও ইসমাইল হোসেন(২৯)।
গণমাধ্যমে পাঠানো র্যাবের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শাকিল আহমেদ স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়-প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে উভয়ে জঙ্গী কার্যক্রমে তাদের সম্পৃক্ততার কথা স্বীকার করেছে। র্যাবের কাছে তারা এ সংগঠনের সম্পৃক্ততার বিস্তারিতও তুলে ধরেছেন।
র্যাব জানায়-মামুনুর রশিদ ওরফে মামুন ১৯৯৬ সালে নোয়াখালীর একটি মাদ্রাসা থেকে হাফেজিয়া পাশ করে ঢাকা ও নারায়ণগঞ্জের বিভিন্ন স্থানে চাকুরী করেছে। ২০১৬ সালের মে মাস থেকে সে নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে একটি প্লাইউড ফ্যাক্টরীতে কাজ করছিল। ২০১৩ সালে সে জনৈক তাসনিমের সাথে উগ্রবাদী অডিও আদান প্রদানের মাধ্যমে জিহাদে উদ্বুদ্ধ হয়। ধীরে ধীরে হানাফি থেকে সে সালাফি মতাদর্শে প্রবেশ করে। পরে তার সাথে ইতিপূর্বে র্যাবের হাতে গ্রেফতার হওয়া সারোয়ার-তামীম গ্রুপের সদস্য আনোয়ার হোসেন, আবু ইউশা মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ, মাসুদ আলম ওরফে রানা, নাঈম এবং তারেক এর পরিচয় হয়। আর্থিকভাবে স্বচ্ছল হওয়ায় সংগঠনে তার গুরুত্ব বাড়তে থাকে। একপর্যায়ে তার বাসায় জেএমবির বিভিন্ন কার্যক্রম ও গোপন বৈঠক চলতে থাকে। সে সংগঠনে পর্যাপ্ত অর্থ সহায়তাও প্রদান করত। সে সময় জেএমবির শীর্ষ স্থানীয় জঙ্গী সারোয়ার জাহান, ডাঃ নজরুল, তাসলিম ও নাঈম একাধিকবার তার বাসায় সংগঠনের গোপন বৈঠকে মিলিত হয়েছে। ২০১৫ সালের শেষ দিকে জেএমবির সারোয়ার-তামীম গ্রুপ সক্রিয় হওয়ার পর থেকে সে এই দলে যোগ দেয়। আব্দুল্লাহপুর এলাকায় সংগঠনের দাওয়াতী কার্যক্রম পরিচালনা করা ছাড়াও তার বাসায় প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হত। আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর ক্রমাগত অভিযানের কারনে সে অনেকটা আড়ালে চলে যায়। তথাপিও সতর্কতার সাথে দাওয়াতী ও আর্থিক সহায়তার কাজ চালিয়ে যাচ্ছিল।
অন্যদিকে ইসমাইল হোসেন ২০০৫ সালে রাজধানীর তুরাগ এলাকার দারুল ফালাহ ছালেহিয়া সাহেব আলী আলিয়া মাদ্রাসা থেকে ৮ম শ্রেণী পাশ করে। সে ২০১২ সালে ঢাকায় একটি কোম্পানীতে ও পরে তার ভাইয়ের স্টেশনারী দোকানে কাজ শুরু করে। ২০১৪ সালে জেএমবি সদস্য এবং গ্রেফতারকৃত মামুনুর রশিদ ওরফে মামুন এর মাধ্যমে সে সংগঠনে প্রবেশ করে। সে মুলতঃ আব্দুল্লাহপুর এলাকায় দাওয়াতী কাজ করত। ধীরে ধীরে সংগঠনের অনেক সদস্যের সান্নিধ্যে এসে তার কার্যক্রম বৃদ্ধি পায়। ইতিপূর্বে র্যাবের হাতে গ্রেফতার হওয়া সারোয়ার-তামীম গ্রুপের সদস্য আনোয়ার হোসেন ও মাসুদ আলম ওরফে রানাসহ আরো অনেক সদস্যের সাথে সে ঢাকার বিভিন্ন স্থানসহ গাজীপুরের টঙ্গী এলাকায় জেএমবির সদস্য সংগ্রহে কাজ করেছে। তার দোকানেই সে জঙ্গীবাদী নোটশীট ফটোকপি করে দাওয়াতী কাজে ব্যবহার করত।