সংবাদচর্চা রিপোর্ট:
রূপগঞ্জে ইরি ধানের এবার বাম্পার ফলন হয়েছে। উপজেলার কৃষকরা আগের সব লোকসান কাটিয়ে লাভের আশা করছেন। মাঠে মাঠে চলছে ধান কাটার উৎসব। তাইতো কৃষকের মুখের হাসির ঝিলিক। দিনভর চলছে ধানকাটা,মাড়াইও পরিবহন। রূপগঞ্জ উপজেলার ভোলাব ইউনিয়নের পূবেরগাঁও এলাকার কানিবিল কৃষক আব্দুল ছবুর মিয়া ১০ বিঘা জমিতে ইরি চাষ করেছেন। ফসলও বেশ ভালো হয়েছে। তাইতো হাসি মুখেই বলেন, কয়েক বছর ধরে ধান আবাদ করে চরম লোকসান হচ্ছিল।
এবার বাজারও ভালো, আবহাওয়াও অনুকূলে রয়েছে। সবকিছু মিলিয়ে লোকসান হবে না। এ মৌসুমে ঘরে আসবে অতিরিক্ত মুনাফা। তিনি আরো বলেন, প্রায় তিনদিন সময় লাগবে ধান কাটতে । এরপর শুরু হবে ধান মাড়াইয়ের কাজ ।
আব্দুল ছবুরের মতো এই উপজেলায় অনেক কৃষক এবার চলতি মৌসুমে লাভের আশা করছেন।একই উপজেলার রোকসানা আক্তার এক প্রশ্নের জবাবে বলেন,বীজ তলা থেকে শুরু করে ধান কাটা পর্যন্ত বিঘা প্রতি খরচ হয়েছে পাঁচ থেকে সাড়ে পাঁচ হাজার টাকা। এবার আশা করছি ধানের ফলন পাওয়া যাবে বিঘা প্রতি প্রায় ১২ মণ পর্যন্ত। এতে বর্তমান বাজার মূল্যে মণ প্রতি বিক্রি হবে এক হাজার তিনশ পঁঞ্চাশ থেকে ১৪০০ টাকা। হিসাব অনুযায়ী বিঘা প্রতি প্রায় লাভ হবে ১২ হাজার সাতশ টাকা। তিনি আরো বলেন, নতুন ধানের গন্ধে ভরে উঠবে মন। ধান বিক্রি করে ছেলে মেয়েদের নতুন জামা, জুতা, বই, খাতা, কলমসহ এবার ঈদের আনন্দে মেতে উঠবে এই গ্রামের কৃষক। উপজেলার ভোলাব ইউনিয়নের পূবেরগাঁও এলাকার কানিবিলে ঘুরে দেখা যায়, ধান কাটার এমন চিত্র। শ্রমিরা ধানের বোঝা নিয়ে দলে দলে ফিরছেন জমির মালিকের বাড়িতে বাড়িতে।
তবে ভোলাব ইউনিয়নের পূবেরগাঁও এলাকা ধান কৃষক মানিক বলেন, শ্রমিক সংকটে ধান কাটা নিয়ে বিপাকে পড়ছেন তারা। দৈনিক ৫০০টাকা মজুরিতেও মিলছে না গ্রামে লোক। অনেকে বাধ্য হয়ে ছেলে-মেয়ে ও স্ত্রী পরিবার-পরিজন নিয়ে ধান কেটে ঘরে তুলছেন। উপজেলায় গড়ে উঠা অনেক গার্মেন্টস ও শিল্প কারখানায় ও নানা রকম কাজ করছেন শ্রমিকরা। ফলে শ্রমিকের সংকট বেড়েছে। ১২জনের শ্রমিক দল করে ধান কাটছেন ভোলাব ইউনিয়নের পূবেরগাঁও এলাকার কানিবিলে। ওই দলের দলনেতা নাজমুল হক শ্রমিক সংকটের কথা স্বীকার করে বলেন, প্রতিদিন ৫০০টাকা মজুরিতে ধান কাটছি আমরা।
উপজেলায় অনেক শিল্প কারখানা হওয়ায় শ্রমিকরা সেখানে কাজ করছে আবার রিকশাও কেউ কেউ চালাচ্ছেন। তাই ধান কাটার শ্রমিকের সংখ্যা কমেছে। উপজেলার কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, কৃষকরা এবার লাভের মুখ দেখবেন এমনটাই আশা করছেন কৃষি কর্মকর্তারা। উপজেলার কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক জানান, গত দুই-তিন বছরের তুলনায় এবারে ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। তবে শ্রমিকের সংকটের কারণে কৃষকের ঘরে ধান তুলতে বেশ বেগ পেতে হবে।