স্টাফ রিপোর্টার :
নির্বাচন কবে হবে তা নিয়ে প্রশ্ন দীর্ঘ হচ্ছে রাজনীতিকাঙ্গণে। এরই মধ্যে আলোচনা চলছে নির্বাচনের ক্ষেত্র নিয়ে। অর্থাৎ কোনটি আগে হবে, জাতীয় সংসদ নাকি স্থানীয় সরকার নির্বাচন? এমন প্রশ্ন উঠলেও অন্তর্বর্তীকালিন সরকারের পক্ষ থেকে এখনো সুনির্দিষ্ট ভাবে কোনো সিদ্ধান্ত জানানো হয়নি। তবে উভয় নির্বাচনেরই প্রস্তুতি নিয়ে রাখছেন সম্ভাব্য প্রার্থীরা। বিশেষ করে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন, নারায়ণগঞ্জ-৪ আসন ও নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনের ক্ষেত্রে এমনটাই লক্ষ্য করা গেছে।
নারায়ণগঞ্জে বিএনপির সম্ভাব্য প্রার্থীদের কয়েক জনের সাথে কথা বলে জানা গেছে, নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন এবং জাতীয় সংসদ নির্বাচন; উভয়ের জন্যই তারা প্রস্তুত রয়েছেন। এর মধ্যে সিটি করপোরেশনের নির্বাচন যদি জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে অনুষ্ঠিত হয়, তাহলে মেয়র প্রার্থী হবেন তারা। আর যদি স্থানীয় সরকার নির্বাচনের আগে জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়, তাহলে নিজ নিজ আসন থেকে দলীয় মনোনয়ন চাইবেন তারা।
জানতে চাইলে নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির আহবায়ক অ্যাডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন খান দৈনিক সংবাদচর্চাকে বলেন, ‘নির্বাচন করাটা যেমন নাগরিক অধিকার, তেমনই দলীয় মনোনয়ন চাওয়াটাও কর্মী হিসেবে অধিকার রয়েছে। সেই হিসেবে আমার প্রত্যাশা রয়েছে, বিএনপির দলীয় প্রার্থী হিসেবে ধানের শীষ প্রতিক নিয়ে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবো। তবে কোন নির্বাচন আগে অনুষ্ঠিত হবে তা এখনো চূড়ান্ত হয়নি। কখনো শোনা যাচ্ছে যে, স্থানীয় সরকার নির্বাচন আগে অনুষ্ঠিত হবে, আবার কখনো শোনা যাচ্ছে যে, জাতীয় সংসদ নির্বাচন আগে হবে। এক্ষেত্রে যদি জাতীয় নির্বাচন আগে হয়, তাহলে আমি সদর-বন্দর মিলিয়ে গঠিত নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনে এমপি প্রার্থী হবো, আর যদি স্থানীয় সরকার বা সিটি করপোরেশনের নির্বাচন আগে অনুষ্ঠিত হয়, তাহলে মেয়র প্রার্থী হবো ইনশাআল্লাহ।’
এদিকে, নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির সভাপতি ও সাবেক এমপি বীরমুক্তিযোদ্ধা মুহাম্মদ গিয়াস উদ্দিনও সিটি করপোরেশনের মেয়র প্রার্থী আবার নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের এমপি প্রার্থী হিসেবে কর্মী সমর্থকদের মাঝে আলোচনায় রয়েছেন।
ফতুল্লা-সিদ্ধিরগঞ্জ নিয়ে গঠিত নারায়ণগঞ্জ-৪ আসন ঘিরে গিয়াস উদ্দিন সবচেয়ে বেশি সরব হলেও ফতুল্লাকে সিটি করপোরেশনের অন্তর্ভুক্ত করার জোরালো দাবি উত্থাপনের পর থেকেই মেয়র প্রার্থী হিসেবেও গিয়াস উদ্দিন এক পা দিয়ে রেখেছেন বলে গুঞ্জন শুরু হয়।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, গিয়াস উদ্দিন সংসদ নির্বাচন ঘিরে নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনে বেশি সরব থাকলে কোনো কারণে যদি তিনি মনোনয়ন জটিলতায় পরেন, তাহলে সিটি করপোরেশনের মেয়র প্রার্থীতার মাধ্যমে সেই জটিলতার অবসানও ঘটতে পারে। তবে গিয়াস উদ্দিন মেয়র বা এমপি প্রার্থী- এই দুটোর কোন একটির বিষয়ে এখনো চূড়ান্ত কোনো সিদ্ধান্ত নিয়েছেন কিনা, সেই বিষয়ে তার কাছ থেকে বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।
যদিও গেল কয়েক দিনের সভা সমাবেশ ঘিরে পরিলক্ষিত হয়েছে, নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের আওতায় থাকা ফতুল্লা এবং সিদ্ধিরগঞ্জ থানা এলাকায় তার নিয়মিত জন সমাবেশ অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এর মধ্যে এনায়েতনগর, বক্তাবলী, কাশিপুর, ফতুল্লা ও কুতুবপুরেও জনসমাবেশ করেছেন গিয়াস উদ্দিন। এসকল সমাবেশ তার অনুসারী বিএনপি নেতারা তাকে আগামী দিনের এমপি হিসেবে দেখতে চেয়ে বক্তব্য রেখেছেন। শেষ পর্যন্ত তাকে কোথায় দেখা যাবে, মেয়র নাকি এমপি প্রার্থী; তা নিয়ে আলোচনা চলছে রাজনীতিকাঙ্গণে।