নিজস্ব প্রতিবেদক:
ফতুল্লার পাগলায় ভাসমান রেস্টুরেন্ট ও বার ‘মেরিএন্ডারসন’ এ জেলা গোয়েন্দা পুলিশ ও ফতুল্লা থানা পুলিশের যৌথ অভিযানের ঘটনায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। এই মামলায় আটককৃত ৬৮ জনকে গ্রেফতার দেখানো হয়েছে।
মঙ্গলবার (২ এপ্রিল) সকালে পুলিশ বাদী হয়ে ফতুল্লা মডেল থানায় মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলাটি দায়ের করেছেন।
মঙ্গলবার দুপুরে জেলা পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) মো. মনিরুল ইসলাম এক প্রেস ব্রিফিংয়ে গণমাধ্যমে এ তথ্য জানান। এদিকে এর আগে সোমবার (১ এপ্রিল) দিবাগত রাতে অভিযান শেষে জেলা পুলিশের পাঠানো এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে ৭০ জনকে আটকের কথা জানানো হয়।
প্রেস ব্রিফিংয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বলেন, জেলা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ, বিপিএম (বার), পিপিএম (বার) সন্ত্রাস, মাদক, ঝুট সন্ত্রাস, ভূমি দস্যুদের বিরুদ্ধে জেহাদ ঘোষণা করেছেন। এই পরিপ্রেক্ষিতে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে সোমবার রাতে ফতুল্লার পাগলা এলাকায় অবস্থিত ভাসমান রেস্টুরেন্ট ও বার মেরিএন্ডারসনে ডিবি ও ফতুল্লা থানা পুলিশ মাদক বিরোধী যৌথ অভিযান চালিয়ে মেরিএন্ডারসনের স্টাফসহ মাদক সেবনরত অবস্থায় ৬৮ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এ সময় ৪২ বোতল বিদেশী মদ, ৭৫ বোতল দেশী কেরো মদ, বিভিন্ন প্রকারের ১৯২০ ক্যান বিয়ার ও মাদক বিক্রির ৪৮ হাজার ৯৩০ টাকা উদ্ধার করা হয়। এ বিষয়ে মেরিএন্ডারসনের স্টাফরা কোন বৈধ কাগজপত্র কিংবা পারমিট দেখাতে পারেনি।
তিনি জানান, গ্রেফতার হওয়া ৬৮ জন আসামিদের মধ্যে ২৫ জন মেরিএন্ডারসনের স্টাফ এবং বাকি ৪৩ জন মাদক সেবনরত অবস্থায় গ্রেফতার হয়েছে। মাদক সেবনকারীদের লাইসেন্স থাকতে হয়। কিন্তু গ্রেফতারকৃত মাদক সেবনকারীরা কোন প্রকার লাইসেন্স কিংবা মেডিক্যাল প্রেসক্রিপশন দেখাতে পারেনি।
লিখিত প্রেস ব্রিফিংয়ে বলা হয়েছে, গ্রেফতার হওয়া মেরিন্ডারসনের স্টাফদের জিজ্ঞাসাবাদে জানা গেছে, উক্ত বারের মালিক সঞ্চয় রায় জনৈক তানভীর আহম্মেদ টিটুর সহযোগিতায় নারায়ণগঞ্জ ক্লাবসহ দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে অবৈধভাবে দীর্ঘদিন যাবৎ মাদকদ্রব্য সংগ্রহ করে জাহাজে রেখে অবৈধভাবে মাদক ব্যবসা করে আসছে। এই বারের একাধিক পার্টনার রয়েছে বলেও জানা গেছে।
তবে বারের মালিক সঞ্চয় রায় ও তানভীর আহম্মেদ টিটুর কোন পরিচয় উল্লেখ করা হয়নি। এ বিষয়ে গণমাধ্যমকর্মীদের এক প্রশ্নের জবাবে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বলেন, এ বিষয়ে তদন্ত চলছে। গ্রেফতারকৃতদের প্রথমিক জিজ্ঞাসাবাদে এই দুই জনের নাম আমরা জানতে পেরেছি। এ ঘটনায় মামলা করা হয়েছে। মামলায় গ্রেফতারকৃতদের ছাড়াও অজ্ঞাত আরো কয়েকজনকে আসামি করা হয়েছে। তদন্ত করার পর সঞ্চয় রায় ও তানভীর আহম্মেদ টিটুর পরিচয় জানা যাবে। এর নেপথ্যে কারা তাদেরও খুজে বের করা হবে।
তবে এ ঘটনায় দায়েরকৃত মামলায় বারের মালিক সঞ্চয় রায়কে এজাহারভুক্ত আসামি করা হয়েছে বলে জানান তিনি।
রাতে প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে আটক ৭০ জন জানানো হলেও গ্রেফতার ৬৮ জন দেখানো হয়েছে গণমাধ্যমকর্মীদের এ প্রশ্নের জবাবে মনিরুল ইসলাম বলেন, এটা একটা বড় অভিযান। এসব বিষয় আমরা সাথে সাথে সাংবাদিকদের জানিয়ে দেয়ার চেষ্টা করি। দ্রুততার কারণে হয়তো ওই সময় রাফলি ৭০ জন বলা হয়েছে।