আজ রবিবার, ৭ই পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২২শে ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

মানবিক আচরণ ঠেকাতে পারে কুকুরের উৎপাত

সাবিত আল হাসান
নারায়ণগঞ্জ শহরের অন্যতম নাগরিক সমস্যায় রূপ নিয়েছে কুকুরের উৎপাত। রাত গভীর হতেই দলে দলে রাস্তায় নেমে আসে কুকুরের পাল। নিজ এলাকায় স্বজাতি প্রবেশ রোধে পাহারা বসায় মোড়ে মোড়ে। তবে শুধু স্বজাতি নয়, তাদের এলাকায় মানুষ প্রবেশেও থাকে অলিখিত নিষেধাজ্ঞা। প্রায়শই কুকুরের ধাওয়া খেয়ে বিপত্তির মুখে পড়তে হয় জনসাধারণের। তবে এ থেকে নিস্তার পেতে ইতোমধ্যে জলাতঙ্ক প্রতিরোধী টিকা প্রয়োগ করলেও এদের বংশবিস্তার থেকে রেহাই মিলছে না।

জানা যায়, শহরের গলাচিপা, মাসদাইর, উকিলপাড়া সহ ফতুল্লার বেশ কিছু এলাকায় কুকুরের উৎপাত নিত্যদিনের ঘটনা। রাতে বিভিন্ন গার্মেন্টস থেকে কাজ করে ফেরা নারীরা পরেন ভোগান্তিতে। এদের সামনে একা একা চলাফেরা করা ভয়ানক সাহসের ব্যাপারও বটে। আর সে কারনে পথচারীরাও দলবেঁধে চলাফেরা করেন রাতের বেলা। কুকুরের এমন যন্ত্রণায় শহরের অনেক বাসিন্দাই মেরে ফেলার সমাধান চাইলেও হাইকোর্টের নির্দেশনা থাকায় তা বাস্তবায়ন করতে পারছেন না।

তবে প্রানী প্রেমীরা বলছেন ভিন্ন সমাধানের কথা। সাধারণত পথের কুকুরের যে পরিমান খাবার প্রতিদিন প্রয়োজন সে পরিমান খাবারা তারা নিত্যদিন পায় না। কোনদিন অনেক খাবার আবার কোনদিন আধবেলা খেয়ে থাকতে হচ্ছে। রাতের বেলা বিভিন্ন বর্জ্য সড়কে পড়ে থাকলেও গৃহস্থলীর ময়লা সোজা চলে যায় ময়লার গাড়িতে। আর এতে করে তাদের সংখ্যা অনুপাতে পর্যাপ্ত খাবার পায় না। যেটুকু পায় সেটুকু নিয়েও চলে তাদের ভেতর ঝগড়াঝাঁটি, ফলে রাত হলেই এদের শোরগোলে ঘুম হারাম হয় নগরবাসীর।

তারা বলছেন, সাধারণত ক্ষুধার যন্ত্রণাতেই কুকুররা উৎপাত করে থাকে। স্থানীয়ভাবে খাবারের উচ্ছিষ্ট অংশ নিদৃষ্ট স্থানে এসকল প্রানীদের খাবারের জন্য রেখে দিলে তা তাদের স্বাভাবিকভাবে বেঁচে থাকার অবলম্বন হতে পারে। পাশাপাশি পুরুষ কুকুরদের প্রজনন ক্ষমতারোধী টিকার ব্যবস্থা করলে বছর খানেকের মধ্যেই কমে আসবে এসকল কুকুরের সংখ্যা। আর এতে করে ক্ষুধার্থ কুকুরদের জ্বালাতন থেকে নিস্তার পাবে নগরবাসী ও কমে আসবে কুকুরদের সংখ্যা।

এ ব্যাপারে পশুপ্রেমী ও সাংবাদিক রাজু আহমেদ বলেন, আমাদের পথে বিচরণ করা কুকুরের সংখ্যা একেবারে কম নয়। এরা প্রতিবছরই একাধিক কুকুরের জন্মদিয়ে যাচ্ছে। ইতোমধ্যে সিটি কর্পোরেশন ও পৌরসভা গুলো র্যা বিস প্রতিরোধী টিকা প্রয়োগ করেছে। কিন্তু এতেই সকল সমস্যার সমাধান হচ্ছে না। এসকল টিকার পাশাপাশি এদের জন্মনিয়ন্ত্রণ করাও প্রয়োজন। তবে আমাদের মনে রাখা উচিৎ। সকল কুকুরের কামড়েই জলাতঙ্ক হয় না। সুতরাং কুকুর নিয়ে আমাদের অযথা ভীতিটাও দূরীকরন প্রয়োজন।

একই ভাবে আমরা নারায়ণগঞ্জবাসীর আহবায়ক হাজী নূরউদ্দিন বলেন, নাসিক ইতিপূর্বে কুকুরদের টিকাদান কর্মসূচী হাতে নিয়েছে। আমরাও আসলে কুকুর হত্যার বিপক্ষে। তবে আশাকরছি তারা কুকুরদের জন্মনিয়ন্ত্রনের বিষয়টি মাথায় রেখে উদ্যোগ গ্রহণ করবেন।