আজ মঙ্গলবার, ১৬ই পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ৩১শে ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

মন্ত্রীর ঘোষণায় মজুরি পাচ্ছে পাটকল শ্রমিক

নারায়ণগঞ্জ ১ আসনের সংসদ সদস্য বস্ত্র ও পাট মন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী বীরপ্রতীকের ঘোষণার পর পাটকল শ্রমিকরা জুন মাসের মজুরি পাচ্ছে। গত শুক্রবার সাংবাদিক সম্মেলনে মন্ত্রী জানিয়েছিলেন ‘মজুরি কমিশন-২০১৫’ অনুযায়ী পাটকল শ্রমিকদের জুন মাসের মজুরি আগামী সপ্তাহে তাদের ব্যাংক হিসাবে পরিশোধ করা হবে। সে প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী  বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের অওতাধীন বাংলাদেশ পাটকল কর্পোরেশন (বিজেএমসি) এর নিয়ন্ত্রণাধীন আলিম জুট মিল বাদে  অন্যান্য পাটকলসমূহের শ্রমিকদের ‘জাতীয় মজুরি স্কেল,২০১৫’ অনুযায়ী জুন, ২০২০  মাসের ৪ (চার) সপ্তাহের বকেয়া মজুরি পরিশোধের নিমিত্ত ৫৮.০০ (আটান্ন) কোটি  টাকার  বরাদ্দ দিয়েছে সরকার। রবিবার ( ৫ জুলাই) অর্থমন্ত্রণালয় এ অর্থ বরাদ্দ প্রদান করেন। বরাদ্দকৃত এ অর্থ শ্রমিকদের নিজ নিজ অ্যাকাউন্টে চেকের মাধ্যমে দেওয়া হবে।

অর্থ মন্ত্রণালয়ের চিঠিতে জানানো হয়,‘অর্থ মন্ত্রণালয় ‘পরিচালন ঋণ’ বা ‘অপারেশন লোন’ হিসেবে এ টাকা বরাদ্দ প্রদান করে । বরাদ্দকৃত অর্থ  ২০১৯-২০ অর্থবছরের বিজেএমসি’র মিলগুলোর জন্য বর্ণিত খাত ব্যতীত অন্য কোন খাতে ব্যয় করা যাবে না । বিজেএমসি শ্রমিকদের প্রত্যেকে সুনির্দিষ্ট ব্যাংকে এ্যাকাউন্ট পেয়ি (Account Payee Cheque) এর মাধ্যমে টাকা পরিশোষধ করতে হবে।

 বরাদ্দকৃত অর্থ বিজেএমসি’র অনুকূলে ‘পরিচালন ঋণ’ বা ‘অপারেশন লোন’ হিসেবে গণ্য হবে, যা আগামী ২০ বছরে (৫ বছরের গ্রেস পিরিয়ডসহ)  ৫ শতাংশ সুদে ষান্মাসিক কিস্তিতে এ অর্থ পরিশোধ করতে হবে। আর এ জন্য অর্থ বিভাগের সঙ্গে বিজেএমসিকে একটি ঋণ চুক্তি সম্পাদন করতে হবে। চিঠিতে বিশেষভাবে বলা হয়েছে, বরাদ্দ দেওয়া অর্থ কেবলমাত্র শ্রমিকদের বকেয়া মজুরি খাত ব্যতিত অন্য কোন খাতে ব্যয় করা যাবে না। বরাদ্দকৃত অর্থ ব্যয়ে সরকারের বিদ্যমান বিধি – বিধান অনুসরণ করতে হবে। বিধি বহির্ভূতভাবে কোন অর্থ পরিশোধ করা হলে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা দায়ী থাকবেন।

উল্লেখ্য, পাটকল শ্রমীকগণ নোটিশ মেয়াদের অর্থাৎ জুলাই-আগস্টের ৬০ দিনের মজুরিও উভয় মাসে যথারীতি পরিশোধ করা হবে। পিএফ, গ্র্যাচুইটি ও গোল্ডেন হ্যান্ডশেক সুবিধাসহ অবশিষ্ট সকল পাওনার ৫০% স্ব স্ব ব্যাংক হিসাবে এবং বাকী ৫০% স্ব স্ব নামে সঞ্চয়পত্র আকারে সেপ্টেম্বর মাসের মধ্যে পরিশোধ করা হবে। সব ক্ষেত্রেই মজুরি কমিশন-২০১৫ এর ভিত্তিতেই পাওনা হিসাব করা হবে। ২০১৪ সাল হতে অবসরপ্রাপ্ত শ্রমিকদের (৮,৯৫৪ জন) প্রাপ্য সকল বকেয়া, বর্তমানে কর্মরত শ্রমিকদের (২৪,৮৮৬ জন) প্রাপ্য বকেয়া মজুরি, শ্রমিকদের পিএফ জমা, গ্র্যাচুইটি এবং সে সাথে গ্র্যাচুইটির সর্বোচ্চ ২৭% হারে অবসায়ন সুবিধা একসাথে শতভাগ পরিশোধ করা হবে। এজন্য সরকারি বাজেট হতে প্রায় ৫,০০০ কোটি টাকা প্রদান করা হবে। অবসায়নের পর মিলগুলি সরকারি নিয়ন্ত্রণে পিপিপি/যৌথ উদ্যোগ/জি টু জি/ লীজ মডেলে পরিচালনার উদ্যোগ নেয়া হবে। নতুন মডেলে পুন:চালুকৃত মিলে অবসায়নকৃত বর্তমান শ্রমিকেরা অগ্রাধিকার ভিত্তিতে কাজের সুযোগ পাবে। একই সাথে এসব মিলে নতুন কর্মসংস্থানেরও সৃষ্টি হবে। সকল শ্রমীককে অবশ্যই পুনর্বাসন করা হবে।