রূপগঞ্জে হামলার ঘটনায় মামলা করায় ব্যবসায়ীর পায়ের নখ উপড়ে শরীর থেতলে দিলো সন্ত্রাসীরা
রূপগঞ্জ (নারায়ণগঞ্জ) প্রতিনিধি : নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে প্রতিপক্ষের সন্ত্রাসীরা সোহরাব মোল্লা নামে এক পোল্ট্রি ব্যবসায়ীর উপর হামলা চালিয়ে শ^াসরোধে হত্যার চেষ্টা, লাঠিপেটা ও নগদ টাকাসহ মটরসাইকেল ছিনতাইয়ের ঘটনায় মামলা করার জের ধরেই ওই ব্যবসায়ীকে তার শশুর বাড়ি থেকে তুলে এনে লোহার প্লাস দিয়ে পায়ের নখ উপড়ে ফেলে পিটিয়ে পুরো শরীর থেতলে দিয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
শুধু তাই নয়, সন্ত্রাসীরা ব্যবসায়ী সোহরাব হোসেনের শাশুরী শাহিনুর বেগমকে পিটিয়ে আহত করে। খবর পেয়ে পুলিশ ব্যবসায়ী দম্পত্তিকে উদ্ধার করেন। বুধবার রাত ১টার দিকে উপজেলার মুড়াপাড়া ইউনিয়নের মঙ্গলখালী এলাকায় ঘটে এ ঘটনা। এ ঘটনার পর থেকেই এলাকায় চরম আতঙ্ক বিরাজ করছে। ব্যবসায়ী পরিবারের সদস্যরা চরম নিরাপত্তাহীনতা ভুগছেন। এখন পর্যন্ত পুলিশ কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি। ব্যবসায়ী সোহরাব মোল্লা উপজেলার মাহমুদাবাদ (টঙ্গীরঘাট) এলাকার মৃত নাসির মোল্লার ছেলে।
আহত ব্যবসায়ী সোহরাব মোল্লা জানান, তিনি দীর্ঘ দিন ধরে ভুলতা গাউছিয়া এলাকায় পোল্ট্রি ফার্মের ব্যবসা দিয়ে জীবিকা নির্বাহ করে আসছেন। উপজেলার হাউলিপাড়া এলাকার আলাউদ্দিন মোল্লার ছেলে সেলিম মোল্লা প্রায় সময়ই তার ফার্ম থেকে মুরগি বাকিতে নিতো। বাকি টাকা চাইতে গেলেই দেই দিচ্ছি করে ঘুরাতো। এ কারনে সেলিমকে আর বাকিতে মুরগি দেয়নি সোহরাব মোল্লা। সেই থেকেই সোহরাব মোল্লার সঙ্গে সেলিম মোল্লার বিরোধ চলে আসছিলো।
গত সোমবার (১২ ফেব্রুয়ারী) বিকেলে ভুলতা গাউছিয়ার ব্যবসা প্রতিষ্ঠান থেকে নিজ বাড়িতে ফেরার পথে হাউলিপাড়া এলাকায় আসামাত্র সেলিম মোল্লাসহ তার লোকজন অস্ত্রেশস্ত্রে সজ্জিত হয়ে সোহরাব মোল্লার পথগতিরোধ করে। এসময় হাং নামে মটরসাইকেলটি ছিনিয়ে নিয়ে সোহরাবকে গলাটিপে শ^াসরোধে হত্যার চেষ্টা চালানো হয়। এক পর্যায়ে সঙ্গে থাকা নগদ ৪ লাখ ৭৫ হাজার টাকা ও একটি মোবাইল সেট লুট করে। পরে তাকে রড ও লাঠি দিয়ে পিটিয়ে আহত করা হয়। এ ঘটনায় বুধবার রাতে সোহরাব মোল্লা বাদী হয়ে রূপগঞ্জ থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।
এদিকে, মামলা দায়েরের পর থেকেই বিভিন্ন ভাবে প্রাণ নাশের হুমকি দিয়ে আসছে আসামীপক্ষ। হুমকির কারনে রাতেই ব্যবসায়ী সোহরাব মোল্লা তার শশুরবাড়ি মঙ্গলখালীতে চলে যান। রাত ১টার দিকে সন্ত্রাসী সেলিম মোল্লা, সুরুজ, নয়ন, আকাশ, সিপলু, নয়ন, সাইফুল, পিয়াল, মাসুদাসহ তাদের লোকজন শশুর বাড়ি থেকে সোহরাব মোল্লাকে টেনে হেচরে বের করেন। এসময় শাশুরী শাহিনুর বেগম প্রতিবাদ করলে তাকে পিটিয়ে গুরুতর আহত করে।
পরে সোহরাব মোল্লাকে জোরপুর্বক তুলে নিয়ে সুরুজের ঘরে আটকে রেখে এসময় তাকে পুরো শরীর পিটিয়ে থেতলে দেয়। এক পর্যায়ে বাম পায়ের আঙ্গুল লোহার প্লাস দিয়ে উপড়ে ফেলে। খবর পেয়ে রূপগঞ্জ থানার একদল পুলিশ সোহরাব মোল্লাকে উদ্ধার করে।
রূপগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইসমাইল হোসেন বলেন, ফের মামলার প্রস্তুতি চলছে। হামলাকারীদের যেকোন মুল্যে গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনা হবে।