‘বিদেশি সংস্থার উপর নয়, নিজের চোখ দিয়ে দেশকে মূল্যায়ন করতে হবে’
সজিব খান: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার তথ্য বিষয়ক উপদেষ্টা ও ইংরেজি দৈনিক অবজারভার এর সম্পাদক ইকবাল সোবহান চৌধুরী বলেছেন, কোনো বিদেশি সংস্থার দেওয়া রিপোর্ট বা জরিপের উপর নির্ভর করে আমাদের দেশকে মূল্যায়ন করা যাবে না। নিজের দেশকে মূল্যায়ন করতে এবং উপলদ্ধি করতে হলে নিজের চোখও বিবেক দিয়েই তা করতে হবে।
বৃহস্পতিবার ‘বিশ্ব মুক্ত গণমাধ্যম দিবস ২০১৮’ উপলক্ষে বেলা ১১টায় রাজধানীর উত্তরার লা বামবা রেস্টুরেন্টে উত্তরা মিডিয়া ক্লাব কর্তৃক আয়োজিত ‘ক্ষমতার ভারসাম্য রক্ষা, গণমাধ্যমে ন্যায় বিচার ও আইনের শাসন’ শীর্ষক এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
ইকবাল সোবহান চৌধুরী বলেন, আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠন অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল তাদের রিপোর্টে বলছে বাংলাদেশে মতপ্রকাশের স্বাধীনতার পুরোপুরি কন্ঠরোধ করা হয়েছে অথচ আমি মনে করি বর্তমানে দেশে গণমাধ্যমের বসন্ত চলছে। দেশে বর্তমানে ৪৪টি টেলিভিশন চ্যানেল, ৫০টির মতো রেডিও এবং দুই হাজারের বেশি পত্রিকা রয়েছে। বসন্তকালে অনেক অনেক কোকিল যেমন কুহু কুহু সুরে ডাকে, তেমনি এসব গণমাধ্যমগুলো সব একত্রে তাদের স্বাধীন মত প্রকাশ করছে, এতে কোনো বাধা নেই।
তিনি আরও বলেন, বিদেশিরা বলছে আমাদের দেশে সাংবাদিকতা সংকুচিত হচ্ছে। অথচ এ দেশে টক শোতে দেখুন সাবলিলভাবে সবাই নিজেদের কথা বলছে, সরকারের সমালোচনা করছে। আবার নির্বিঘেœ বাড়িতেও যাচ্ছে। তাই বিদেশিদের কথা কতটা সত্য তা আপনারাই বলতে পারবেন।
‘বিশ্ব ব্যাংক যখন দুর্নীতির অভিযোগে পদ্মা সেতু প্রকল্পে ঋণ সহায়তা স্থগিত করে তখন প্রধানমন্ত্রী বলেছিলেন- নিজস্ব অর্থায়নেই পদ্মা সেতু করব এবং এখন সেই পদ্মা সেতু তৈরি হচ্ছে। তার এই বক্তব্যে প্রমাণিত হয় বাংলাদেশ বিদেশিদের নিয়ন্ত্রণে চলে না।
ইকবাল সোবহান বলেন, গণতন্ত্র ও সাংবাদিকতা একে অপরের পরিপূরক। একটি ছাড়া আরেকটি চলতে পারে না। গণতন্ত্র প্রাতিষ্ঠানিক রুপ না পেলে গণমাধ্যম স্বাধীনতা লাভ করতে পারে না।
তিনি আরও বলেন, ইলেকট্রনিক্স মিডিয়ার মাধ্যমে মানুষ আজ মূহুর্তেই দেশের সকল প্রান্তের খবরাখবর জানতে পারছে। এই সুযোগ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাই সৃষ্টি করেছেন। ১৯৯৬ সালে তিনি ক্ষমতায় এসে গণমাধ্যমের গুরুত্ব বুঝতে পেরে অনেকগুলো টেলিভিশন চ্যানেলের অনুমোদন দেন। তখন দেশে শুধু সরকারি টেলিভিশন বিটিভি ছাড়া আর কোনো চ্যানেল ছিল না। আর এখন অনলাইন সংবাদমাধ্যম তো খবর প্রচারে আরো বেশি এগিয়ে রয়েছে।
ইকবাল সোবহান বলেন, অনেক সংবাদ পত্র বা এর সাংবাদিকরা গণমাধ্যমের স্বাধীনতার অপব্যবহার করছে, মিথ্যা সংবাদ প্রকাশ করছে, পরে আবার আইনি জটিলতায় পড়ছে, এসব লোকদের পাশে আমরা কেনো থাকবো। সৎ সাংবাদিকদের পাশে আমরা সবসময়ে ছিলাম এবং থাকব।
‘তবে আকাশ যখন উন্মুক্ত তখন সেখানে দুই একটা চিল বা বাঁজপাখি উড়বেই। কিন্তু সেখানে যখন উড়োজাহাজ উড়ে চলে তখন বাঁজপাখি ম্লান হয়ে যায়।’
এসময় দৈনিক মানব কণ্ঠের প্রকাশক জাকারিয়া চৌধুরী বলেন, বাংলাদেশ শুরু হয়েছে হত্যা দিয়ে। বঙ্গবন্ধুকে হত্যার মধ্য দিয়ে শুরু হওয়া সেই গর্হিত অপরাধ আজো চলমান রয়েছে।
সভায় সভাপতিত্ব করেন উত্তরা মিডিয়া ক্লাবের আহবায়ক সিনিয়র সাংবাদিক আমিনুল ইসলাম বেদু। এসময় উপস্থিত ছিলেন, ক্লাবের সিনিয়র যুগ্ম আহবায়ক মো. সাহেদ, উত্তরা ১নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর আফছার উদ্দিন খান, বীর মুক্তিযোদ্ধা কুতুব উদ্দিন আহমেদ, ঢাকা জেলা পরিষদের সদস্য সামসুদ্দিন লাভলু, দৈনিক মানবকন্ঠের প্রকাশক জাকারিয়া চৌধুরী, সদস্য সচিব একেএম শরিফুল ইসলাম খান, যুগ্ম আহবায়ক মাহমুদ আল ফয়সাল, দৈনিক আমাদের অর্থনীতির সহ-সম্পাদক সজিব খান প্রমুখ।