আজ বৃহস্পতিবার, ১৩ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২৮শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

বিএনপির দশ কমিটি ঘোষণার অপেক্ষা

বিষাদসিন্ধু:

আজকালের মধ্যে অথবা যেকোন সময় ঘোষণা হতে পারে নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির অন্তর্ভূক্ত থানা, উপজেলা ও পৌর বিএনপির আহ্বায়ক কমিটি। তবে, ঘোষিত কমিটিতে তৈমূর আলম খন্দকারের আধিক্য থাকছে, কোণঠাসা হয়েছেন মামুন মাহমুদ।

ঘোষিত হতে যাওয়া কমিটিগুলো হচ্ছে, ফতুল্লা, সিদ্ধিরগঞ্জ থানা, সোনারগাঁ উপজেলা ও পৌরসভা, রূপগঞ্জ উপজেলা ও তারাবো এবং কাঞ্চন পৌরসভা, আড়াইহাজার উপজেলা ও পৌরসভা, গোপালদী পৌরসভা।

এদিকে নেতাকর্মীরা বলছেন, ত্যাগী নেতাকর্মী যারা আছেন তাদের যেন মূল্যায়ন করা হয় কমিটিতে। কমিটি গঠনের ক্ষেত্রে কে কার লোক সে বিবেচনা না করে বরং দলের জন্য কার কতটুকু ত্যাগ রয়েছে সে বিবেচনায় মূল্যায়ন করা উচিৎ। সেটি হলে কমিটি সাংগঠনিকভাবে গতিশীল হবে বলে তারা মনে করেন।

সূত্র বলছে, ত্যাগী নেতাকর্মীদের বাদ দিয়ে আওয়ামী লীগ ঘেঁষা ও বিতর্কিত ব্যক্তিদের নেতৃত্বে ওই দশটি কমিটি ঘোষণা চূড়ান্ত করে ফেলেছিলেন জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য সচিব মামুন মাহমুদ। এ নিয়ে আহ্বায়ক তৈমূর আলমের সাথে দ্বন্দ্ব শুরু হয়। তৈমূর আলম খন্দকার ত্যাগী ও নিবেদিত প্রাণ নেতাকর্মীদেরকে কমিটিতে মূল্যায়ন করার পক্ষে শক্ত অবস্থান নিলে কমিটি ঘোষণা ভেস্তে যায়। এতে তৈমূর আলমও তৃণমূলের কাছে বেশ সমাদৃতি হোন।

সূত্র আরও জানায়, মামুন মাহমুদ বেশ কয়েকবার চেষ্টা তদবির করেন তৈমূর আলম খন্দকারের সাথে বসে বিষয়টি মিটমাট করার। কেন্দ্রীয় নেতারাও তৈমূরকে মানানোর চেষ্টা করেন। তবে, সব রকম চেষ্টা তদবিরই ব্যর্থ হয় অনড় তৈমূর আলম খন্দকারের কাছে। তার একটাই কথা, ত্যাগী, নির্যাতিত নেতাকর্মীদেরকে কমিটিতে মূল্যায়ন করতে হবে।

তৈমূর আলম জানিয়েছিলেন, যারা দলের মধ্যে নির্যাতিন, ‘নীপিড়িত আমি তাদের পাশে আছি। তারা সবাই আমার লোক। তাদের অবমূল্যায়ন করে কমিটি গঠন হবে সেটিতে আমি স্বাক্ষর করবো না।’ শেষতক তার সেই অনড় অবস্থানের কারণে ত্যাগী নেতাকর্মীরাই মূল্যায়িত হতে যাচ্ছেন। এবং সব কিছু যদি ঠিকঠাক থাকে তবে, আজকালের মধ্যেই জেলার দশটি কমিটি ঘোষণা করা হবে বলে জেলা বিএনপির একাধিক সূত্র জানিয়েছে।

দলীয় সূত্রটি আরও জানায়, ঘোষিত হতে যাওয়া কমিটিতে বেশ কিছু রদবদল করা হয়েছে। এরমধ্যে মামুন মাহমুদ কুতুবপুরের নজরুল ইসলাম পান্না মোল্লাকে ফতুল্লা বিএনপির সদস্য সচিব করতে চেয়েছিলেন। ঘোষিত হতে যাওয়া কমিটিতে পান্না মোল্লাকে বাদ দেওয়া হচ্ছে। তার স্থানে জেলা যুবদলের সভাপতি শহিদুল ইসলাম টিটু এবং রিয়াদ মোহাম্মদ চৌধুরী আসতে যাচ্ছে। তবে, পাল্লা ভারি শহিদুল ইসলাম টিটুর।

অন্যদিকে সিদ্ধিরগঞ্জ কমিটিতে আওয়ামী লীগের পরিবারের সন্তান শাহ আলম হীরাকে সদস্য সচিব করতে চেয়েছিলেন মামুন মাহমুদ। শেষতক শাহ আলম হীরাকে এই পদ থেকে বাদ দেওয়া হচ্ছে। ঘোষিত কমিটিতে সদস্য সচিব হিসেবে কাউন্সিলর ইকবাল হোসেন আসতে যাচ্ছেন বলেই খবর পাওয়া গেছে। এছাড়াও সোনারগাঁ উপজেলা বিএনপির সদস্য সচিব হিসেবে মামুন চেয়েছিলেন তার বন্ধু মোশারফ হোসেনকে। যিনি দলীয় প্রার্থীর বিরোধীতা করে আওয়ামী লীগের প্রার্থীর পক্ষে প্রচারণায় নেমেছিলেন। তাকেও কমিটির নেতৃত্বে রাখা হচ্ছে না বলেই খবর পাওয়া যাচ্ছে।

তবে, ঘোষিত হতে যাওয়া দশ কমিটিতে মামুন মাহমুদের প্রভাব আর থাকছে না বলেই সূত্র বলছে। সূত্রের মতে, কেন্দ্রীয় পর্যায়েও মামুন মাহমুদের অবস্থান নড়বড়ে হয়ে গেছে। আর সেটি সম্ভব হয়েছে একমাত্র তৈমূর আলম খন্দকারের শক্ত অবস্থানের কারণে।

এদিকে মামুন মাহমুদকে ছাড়াই তৈমূর আলম তেলের মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে কর্মসূচি পালন করে বেশ চম দেখিয়েছেন। তার এই কর্মসূচি সফলতার পেছনে কাজ করেছে গিয়াসউদ্দিন পন্থী নেতাকর্মীরাও। এদিন সাবেক এই এমপি অনুসারিরাও এই কর্মসূচিতে ব্যাপকভাবে অংশগ্রহণ করেন। এবং এই কর্মসূচি সফলতার ওপরই তৈমূর আলম খন্দকারের সাফল্য এখন কেন্দ্রী নেতাদের মুখে মুখে। একই সাথে এই কর্মসূচির মধ্য দিয়ে নারায়ণগঞ্জ বিএনপির তৃণমূলেও ফিরে এসেছে চাঙ্গাভাব।