আজ শুক্রবার, ১৪ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২৯শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

প্রথম দিন শেষে বাংলাদেশের সংগ্রহ ৩১৫/৮

প্রথম দিন শেষে

প্রথম দিন শেষেনিজস্ব প্রতিবেদক:

ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে দুই ম্যাচ টেস্ট সিরিজের প্রথম ম্যাচে মুখোমুখি হয়েছে স্বাগতিক বাংলাদেশ । টস জিতে ব্যাটিংয়ে নেমে প্রথম দিন শেষে টাইগারদের সংগ্রহ ৮ উইকেট হারিয়ে ৩১৫ রান। দ্বিতীয় দিন উইকেটে অপরাজিত থেকে ব্যাটিংয়ে নামবেন নাঈম হাসান (২৪) এবং তাইজুল ইসলাম (৩২)।

বৃহস্পতিবার (২২ নভেম্বর) চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরি স্টেডিয়ামে সকাল সাড়ে নয়টায় শুরু হয় ম্যাচটি। টস জিতে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেন ইনজুরি থেকে দীর্ঘদিন পর ফেরা অধিনায়ক সাকিব আল হাসান। এই ম্যাচের মধ্যদিয়ে অভিষেক হয় নাঈম হাসানের। ৯৩তম বাংলাদেশি টেস্ট ক্রিকেটার হিসেবে এই ম্যাচে অভিষেক হয় নাঈম হাসানের। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সিরিজ থেকে বাদ পড়েছেন খালেদ আহমেদ, আরিফুল হক এবং লিটন দাস। তাদের জায়গায় এসেছেন নাঈম হাসান, সৌম্য সরকার এবং সাকিব আল হাসান।

বাংলাদেশের সেরা ওপেনার তামিম ইকবাল ইনজুরির কারণে এই ম্যাচে খেলতে না পারায় ইমরুল কায়েসের সঙ্গে ওপেনিংয়ে জুটি গড়তে নামেন দারুণ ফর্মে দলে ফেরা সৌম্য সরকার। কিন্তু, ইনিংসের প্রথম ওভারের তৃতীয় বলে কেমার রোচের বলে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিয়ে সাজঘরে ফেরেন তিনি। অফ স্টাম্পের বাইরের বল ডিফেন্স করতে গিয়ে সুইং মিস করেন সৌম্য, ব্যাটের কানায় বল লাগলে গ্লাভসবন্দি করতে ভুল করেননি উইকেটরক্ষক শেন ডরউইচ। দলের রান ১ হতেই বাংলাদেশ হারায় প্রথম উইকেট। ব্যক্তিগত ৩ রানে দ্বিতীয় স্লিপে ক্যাচ দিয়েও জীবন পান ইমরুল কায়েস। ব্যক্তিগত ১৬ রানে নো-বলের কল্যানে আবারো বেঁচে যান ইমরুল।

মধ্যাহ্ন বিরতির তিন-চার মিনিট আগে বিদায় নেন ওপেনার ইমরুল কায়েস (৪৪)। ওয়ারিকানের বলে শর্ট লেগে থাকা অ্যামব্রিসের তালুবন্দি হন তিনি। তার আগে ৮৭ বলে পাঁচটি বাউন্ডারি হাঁকান ইমরুল। শুরুর ধাক্কা সামলে ইমরুল-মুমিনুল স্কোরবোর্ডে যোগ করেন ১০৪ রান। দলীয় ১০৫ রানের মাথায় বাংলাদেশ দ্বিতীয় উইকেট হারায়, এরপরই মধ্যাহ্ন বিরতিতে যায় দুই দল। দ্বিতীয় সেশনের এক ঘণ্টা বেশ ভালোভাবেই পার করেন মুমিনুল-মোহাম্মদ মিঠুন। জুটি গড়েন ৪৮ রানের। পানি পানের বিরতির পর দেবেন্দ্র বিশুর বল অযথাই তুলে মারতে গিয়ে আউট হন মিঠুন। তার আগে ৫০ বলে ২০ রান করেন বাজে শটে আউট হওয়া মিঠুন। দলীয় ১৫৩ রানের মাথায় বাংলাদেশ তৃতীয় উইকেট হারায়। দ্বিতীয় সেশন শেষে বাংলাদেশের সংগ্রহ দাঁড়ায় ৩ উইকেটে ২১৬ রান।

শেষ সেশনে ব্যাটিংয়ে নেমে বেশিক্ষণ থাকতে পারেননি মুমিনুল হক। দলীয় ২২২ রানে শেনন গ্যাব্রিয়েলের বলে শেন ডরউইচের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন বাঁহাতি এই ব্যাটসম্যান। চট্টগ্রামের মাটিতে মুমিনুল এর আগে পাঁচটি সেঞ্চুরি করেছিলেন, ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ ১৮১ রানের ইনিংসটিও সেখানেই। এবার করলেন এই মাঠে ষষ্ঠ সেঞ্চুরি, ক্যারিয়ারে দেখা পেলেন অষ্টম সেঞ্চুরির।
মুমিনুলের পর সাজঘরের পথে হাঁটেন মুশফিকুর রহিম। ৩ বলে ১টি বাউন্ডারিতে ৪ রান নিয়ে গ্যাব্রিয়েলের বলে এলবির শিকার হয়ে ফেরেন বাংলাদেশি এই উইকেটরক্ষক ব্যাটসম্যান। দলীয় ২৩০ রানে গ্যাব্রিয়েলের বলেই বোল্ড হয়ে ব্যক্তিগত ৩ রানে ফেরেন মাহমুদউল্লাহ। এরপর মিরাজকে সঙ্গী হিসেবে পান সাকিব। তবে দলের রান যখন ২৩৫, ঠিক তখনই গ্যাব্রিয়েলের বলে বোল্ড হয়ে ব্যক্তিগত ৩৪ রানে ফেরেন সাকিব। আর তাতেই বিপাকে পড়ে বাংলাদেশ।

এরপর অভিষিক্ত নাঈম হাসানকে সঙ্গী করে এগুতে থাকলেও দলীয় ২৫৯ রানে ব্যক্তিগত ২২ রান করে বোল্ড হয়ে ফেরেন মেহেদী হাসান মিরাজ। তবে, লেজের ঝাপটা দেখিয়ে দিয়েছে বাংলাদেশ। নাঈমের সঙ্গে জুটি বেধে তাইজুল স্কোরবোর্ডে যোগ করেন অবিচ্ছিন্ন ৫৬ রান।
টেস্ট র‌্যাংকিংয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজ আট নম্বরে আর বাংলাদেশ নয় নম্বরে। এর আগে সাতটি সিরিজে মুখোমুখি হয়েছিল বাংলাদেশ-উইন্ডিজ। ১০টিতেই জয় পায় ক্যারিবীয়ানরা। দুটি ম্যাচে জয় পায় টাইগাররা। বাকি দুটি ম্যাচ ড্র হয়। সবশেষ ক্যারিবীয় সফরে গিয়ে দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজে হোয়াইটওয়াশ হয়েছে বাংলাদেশ। সবশেষ পাঁচ টেস্টের চারটিতেই হেরেছে মুশফিক-ইমরুল-মিরাজরা। আর নিজেদের খেলা সবশেষ পাঁচ ম্যাচের তিনটিতে হেরেছে উইন্ডিজ।

চট্টগ্রাম থেকে ম্যাচটি সরাসরি সম্প্রচার করে গাজী টিভি। এছাড়া, ম্যাচটি সরাসরি দেখা যায় র‌্যাবিটহোলবিডিতে।

বাংলাদেশ একাদশ: সাকিব আল হাসান (অধিনায়ক), ইমরুল কায়েস, সৌম্য সরকার, মুমিনুল হক, মাহমুদউল্লাহ, মুশফিকুর রহিম, মোহাম্মদ মিঠুন, মেহেদি হাসান মিরাজ, তাইজুল ইসলাম, মোস্তাফিজুর রহমান এবং নাঈম হাসান।

উইন্ডিজ একাদশ: ক্রেইগ ব্রাথওয়েইট (অধিনায়ক), কিয়েরন পাওয়েল, শাই হোপ, শিমরন হেটমেয়ার, সুনীল অ্যামব্রিস, রোস্টন চেজ, শেন ডরউইচ, দেবেন্দ্র বিশু, কেমার রোচ, জোমেল ওয়ারিকান এবং শ্যানন গ্যাব্রিয়েল।