আজ বৃহস্পতিবার, ২০শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ৫ই ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

পূর্ণ্য স্নান উৎসবে মেলা স্থগিত

হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের লাঙ্গলবন্দ মহাষ্টমী পূর্ণ্য স্নান উৎসব আগামী ৩১ মার্চ থেকে শুরু হবে । বন্দর উপজেলার মুছাপুর ইউনিয়নের লাঙ্গলবন্দ এলাকায় ব্রহ্মপুত্র নদে ওই দিন বিকেল ৫টা থেকে শুরু স্নান উৎসব চলবে ১ এপ্রিল রাত ১০টা পর্যন্ত। প্রতিবারের মত এবারেও শান্তিপূর্ন পরিবেশে উৎসবটি পালন এবং পূণ্যার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে প্রয়োজনীয় সকল ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে। তবে করোনা ভাইরাসের কারণে পূন্যার্থীদের স্বাস্থ্য সুরক্ষার কথা চিন্তা করে এ বছর স্নান উৎসবের আয়োজনে কিছুটা পরিবর্তন আনা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার বিকেল ৩টায় নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে জেলা ও উপজেলা প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন এবং হিন্দু নেতৃবৃন্দদের সাথে মত বিনিময় সভায় সর্বসম্মতিক্রমে এমন সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে। মত বিনিময় সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনের সংসদ সদস্য সেলিম ওসমান।

জেলা প্রশাসক জসিম উদ্দিন এর সভাপতিত্বে উক্ত মত বিনিময় গৃহিত সিদ্ধান্ত অনুয়ারী মহাষ্টমী স্নানকে উপলক্ষ্য করে স্নান এলাকায় মেলার আয়োজন এবং রাস্তার দুপাশে ভিক্ষুকদের বসা এবং দোকানপাট বসানো নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এছাড়াও পূন্যার্থীদের সেবা দিতে বিভিন্ন সংগঠনের পক্ষ থেকে যেসব সেবা ক্যাম্প স্থাপন করা হয়ে থাকে সেগুলোকে নির্দিষ্ট নিয়মের আওতায় আনা হয়েছে। এক্ষেত্রে সংগঠনগুলো স্নানঘাট এলাকায় কোন প্রকার প্যান্ডেল নির্মাণ করে ক্যাম্প স্থাপন করতে পারবেন না। তবে সেবা প্রদানে রান্না করা খাবার নিজ নিজ সংগঠনের নামে প্যাকেটজাত করে বিভিন্ন স্পটে ট্রাক বা পিকাপ ভ্যানে করে পূন্যার্থীদের মাঝে বিতরণ করতে পারবে। স্নানঘাট এলাকায় জনসমাগম এড়াতেই এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তবে নদ এবং যাতায়াতের রাস্তা থেকে নিরাপদ দূরত্বে অন্যত্র জায়গা পেলে সেখানে ক্যাম্প করার ব্যবস্থা করে দেওয়া হবে বলেও জানানো হয়েছে। এছাড়াও লাঙ্গলবন্দ স্ট্যান্ড থেকে ঋষিপাড়া পর্যন্ত এলাকায় রিকশা চলাচলও বন্ধ থাকবে। আর এবারের আয়োজনটি কোন কমিটির মাধ্যমে সম্পূর্ন জেলা প্রশাসনের তত্ত্বাবধানে আয়োজিত হবে।

সংসদ সদস্য সেলিম ওসমান বলেন, আমাদের পরিবার আমার দাদার আমল থেকে নারায়ণগঞ্জের হিন্দু সম্প্রদায়ের সাথে অত্যন্ত সুসম্পর্ক বজায় রেখে কাজ করে আসছেন। সেই ধারাবাহিতায় আমার বাবা এবং ভাইয়েরাও কাজ করছে। ইতোমধ্যে করোনা ভাইরাস সারা বিশ্বে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়েছে। আল্লাহর রহমতে আমাদের বাংলাদেশে এখনো সেটি মহামারি আকার ধারণ করেনি। কিন্তু তারপরেও বর্তমান সরকার বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্ব সহকারে বিবেচনায় নিয়েছেন। দেশের সাধারণ মানুষের স্বাস্থ্য সুরক্ষার কথা চিন্তা করে সরকার ১৭মার্চ জাতীয় শিশু দিবস ও বঙ্গবন্ধুর শততম জন্ম বার্ষিকী উপলক্ষ্যে মুজিববর্ষের অনুষ্ঠান পুনবিন্যাস করেছেন। যেখানে ইতোমধ্যে করোনা ভাইরাসের প্রকৌপ ঠেকাতে সৌদি আরবে পবিত্র হজ্ব পালন বন্ধ রাখা হয়েছে, ভারতে এবছর হিন্দু সম্প্রদায়ের হোলি উৎসব বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। সেখানে আমরা লাঙ্গলবন্দের অনুষ্ঠানটি শুধুমাত্র স্বাস্থ্য সুরক্ষা কথা চিন্তা করে কিছুটা পরিবর্তন এনেছি। আশা করছি আল্লাহ রহমতে আগামী বছর আমরা সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় পূর্বে থেকে আরো ব্যাপক আয়োজনের মধ্য দিয়ে স্নানোৎসব উদযাপন করতে করবো।

মতবিনিময় সভায় আরো উপস্থিত ছিলেন, জেলা পুলিশ সুপার জাহিদুল ইসলাম, বন্দর উপজেলার চেয়ারম্যান এম.এ রশিদ, ভাইস চেয়ারম্যান সানাউল্লাহ সানু, জেলা জাতীয় পার্টির আহবায়ক আবুল জাহের, বন্দর উপজেলার নির্বার্হী কর্মকর্তা শুক্লা সরকার, মুছাপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মাকসুদ হোসেন, এফবিসিসিআই এর পরিচালক প্রবীর কুমার সাহা, লাঙ্গলবন্দ স্নান উদযাপন পরিষদের সভাপতি সরোজ কুমার সাহা, সাধারণ সম্পাদক সুজিত সাহা, হিন্দু কল্যাণ ট্রাস্টের ট্রাস্টি পরিতোষ কান্তি সাহা, স্নান উদযাপন পরিষদের সাবেক সভাপতি বাসুদেব চক্রবর্তী, বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ নারায়ণগঞ্জ জেলার সাধারণ সম্পাদক শিপন সরকার শিখন, রিপন ভাওয়াল সহ শতাধিক হিন্দু নেতৃবৃন্দরা।

সর্বশেষ সংবাদ