সংবাদচর্চা রিপোর্ট:
দীর্ঘদিন সম্মেলন না হওয়ায় হতাশ হয়ে পড়েছেন রূপগঞ্জের যুবলীগের নেতাকর্মীরা। জাতীয় নির্বাচনের পর রূপগঞ্জ উপজেলা যুবলীগের সম্মেলন হওয়ার কথা থাকলেও শেষ পর্যন্ত তা বাস্তবায়ন হবে কি না, সেটি নিয়েও সন্দিহান তৃণমূলের নেতাকর্মীরা। নেতাকর্মীরা বলেছেন, নেতৃত্ব বিকাশ এবং সংগঠনে গতিশীলতা তৈরিতে নতুন নেতৃত্ব তৈরির বিকল্প কিছুই নেই। এক দশক ধরে সে প্রক্রিয়া বন্ধ আছে।
যুবলীগের একটি সূত্র জানিয়েছে, দীর্ঘ ৭ বছর কমিটি না হওয়ায় তৃণমূল নেতাকর্মীদের মধ্যে ক্ষোভ দেখা দিয়েছে। উপজেলা কমিটির সর্বশেষ সম্মেলন হয় ২০১৭ সালে। সেই সম্মেলনে সভাপতি নির্বাচিত হন সাবেক ছাত্র নেতা কামরুল হাসান তুহিন। ক্লিন ইমেজের এই নেতা বর্তমানে গোলাকান্দাইল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান। জনপ্রতিনিধি হওয়ায় কামরুল হাসান তুহিন এখন আর আগের মতো সংগঠনকে সময়দিতে পারছেন না । এমন অবস্থায় রূপগঞ্জে যুবলীগের নেতৃত্বে আশার মতো তেমন কাউকে দেখা যাচ্ছে না। আর রূপগঞ্জ উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন সাবেক ছাত্রলীগ নেতা মোস্তাফিজুর রহমান শাহীন। তিনি তুখোর বক্তা হিসেবে এলাকায় ব্যাপক পরিচিতি পেয়েছেন। তুহিন , শাহিনের আমলে মাঠে নেতৃত্ব দেওয়ার মতো তেমন নতুন নেতা তৈরী হয়নি। আর যারা যুবলীগের নেতৃত্ব দেওয়ার যোগ্য ছিলেন তারা সবাই রূপগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের কমিটিতে বড় বড় পদ পেয়েছেন। যুবলীগের কমিটি দেড়ি হওয়ায় এমনটা হয়েছে। কিছু সাবেক ছাত্রলীগ নেতা রাজনীতি থেকে দূরে সরে গেছেন। গত ২০১৭ সালের মে মাসে রূপগঞ্জ উপজেলা যুবলীগের ৭১ সদস্য বিশিষ্ঠ পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করা হয়। কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন সহ-সভাপতি কাউন্সিলর রফিকুল ইসলাম মনির। জনপ্রতিনিধি হওয়ার কারণে এবং কমিটিতে পূর্ণ দায়িত্ব না পাওয়ায় রফিকুল ইসলাম মনিরও তেমন যুবলীগে কাজ করতে পারছে না।
এব্যাপারে রূপগঞ্জ উপজেলা যুবলীগ সভাপতি কামরুল হাসান তুহিন দৈনিক সংবাদচর্চাকে বলেন, সদর থানা কমিটি ২১ বছর হয়েছে । নারায়ণগঞ্জের মধ্যেই আমাদের কমিটিই এখন নতুন কমিটি । কেন্দ্র থেকে আমাদেরকে কাজ চালিয়ে যাওয়ার নির্দেশনা দিয়েছেন।
আপনাদের পরে কে কে নেতৃত্বে আসতে পারে এমন প্রশ্নের জবাবে কামরুল হাসান তুহিন বলেন, আমাদের কমিটি থেকেই নতুন নেতৃত্ব আসবে। মাঠে অনেক ত্যাগী, মেধাবী নেতাকর্মী কাজ করছে।
নাম প্রকাশে অনইচ্ছুক রূপগঞ্জের এক যুবলীগ নেতা দৈনিক সংবাদচর্চাকে বলেন, চেয়ারম্যান হওয়ার পর কামরুল হাসান তুহিন সংগঠনকে একটু সময়ও দিতে পারছে না। তাঁর কারণে রূপগঞ্জ উপজেলা যুবলীগের কমিটি হচ্ছে না। আমরা চাই দ্রুত রূপগঞ্জ উপজেলা যুবলীগের নতুন কমিটি হোক। তা না হলে রূপগঞ্জ উপজেলা যুবলীগ নেতৃত্ব সংকটে পড়বে।
তিনি আরও বলেন, মোস্তাফিজুর রহমান শাহীনকে রূপগঞ্জ উপজেলা যুবলীগের আরও বড় পদ দেওয়া হোক।
এদিকে রূপগঞ্জ উপজেলা যুবলীগের সভাপতি প্রার্থী হিসেবে যে কজনের নাম শোনা যাচ্ছে তাঁরা হলেন, রফিকুল ইসলাম মনির, এইচ.এম ইমরান হোসেন, রাতুল আহমেদ খোকন, নাজমুল হাসান ।
গোলাকান্দাইল এলাকার এই সময়ের আলোচিত নাম এইচ.এম ইমরান হোসেন। তিনি রূপগঞ্জ উপজেলা যুবলীগের সভাপতি হওয়ার জন্য মাঠে দীর্ঘদিন যাবত কাজ করে যাচ্ছেন। রাজনীতির পাশাপাশি তিনি একজন ব্যবসায়ী। গোলাকান্দাইল ব্যবসা অঞ্চল হওয়ায় ইমরান রূপগঞ্জ উপজেলা যুবলীগের ভালো নেতৃত্ব দিতে পারবে বলে ধারণা করছে অনেকে। তবে সবকিছু নির্ভর করছে গাজী পরিবারের উপর। রাতুল আহমেদ খোকন ও নাজমুল হাসান তারা দুইজন সাবেক ছাত্রলীগ নেতা। তারা দুইজন দীর্ঘদিন দলীয় পদে না থাকলেও তাদের কর্মীরা মাঠে থাকছেন।
রূপগঞ্জ উপজেলা যুবলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আজমত আলী দৈনিক সংবাদচর্চাকে বলেন, আমাদের পর রূপগঞ্জে যুবলীগের তেমন নতুন নেতা তৈরী হয়নি। তুহিন ,শাহীন দীর্ঘদিন রূপগঞ্জ উপজেলা যুবলীগের নেতৃত্বে দিয়ে আসছেন। তুহিন এখন গোলাকান্দাইল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হয়েছে। দলের ত্যাগী নেতাকর্মীদের নিয়ে আমি রূপগঞ্জ উপজেলা যুবলীগের নতুন কমিটি চাই।