স্টাফ রিপোর্টার:
ফতুল্লায় স্বামী ও তার বোন এবং বোন জামাই গৃহবধু রেশমি ইসলামকে পিটিয়ে বাড়ি থেকে বের করে দিয়েই ক্ষান্ত হননি। নানাভাবে রেশমি ইসলামকে হুমকি দিয়ে যাচ্ছে অভিযুক্ত ডাক্তার আলমগীর হোসাইন ও তার পরিবার। প্রশাসনের দ্বারে দ্বারে ঘুরেও কোন প্রতিকার পাচ্ছেন না রেশমি ইসলাম। আদালতের দ্বারস্থ্য হওয়ার পরও তার উপর নেমে এসেছে হুমকির খড়গ। নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে রেশমি ইসলাম ও তার পরিবার। এনিয়ে রেশমি ইসলাম ঢাকার কোতয়ালী থানায় একটি সাধারন ডায়েরীও করেছে।
রেশমি ইসলাম জানান, অভিযুক্ত ডাক্তার আলমগীর হোসাইনের মামা ইসকান্দার আমাদের এলাকার কিছু গণ্যমান্য ব্যক্তিদের নিয়ে আমার বাসায় আসে গত ২৫-১১-২০১৭ রাত ৯ টায়। এসে বলে মামলা করেছো। মামলা উঠিয়ে নাও, মামলা করে কিছুই হবে না। শেষমেশ দেনমোহর এর টাকা ও পাবা না, কাগজ পত্র কিছুই পাবা না। ভালোয় ভালোয় ডিভোর্সে সই দিয়ে টাকা বুঝে নাও আর মামলা উঠিয়ে নাও। ওরা অনেক পাওয়ারফুল। ওদের কিছুই করতে পারবা না। শুধু ২-৪ বছর মামলার পিছে দৌড়াতে হবে তোমার। এতে কোন ভালো রেজাল্ট আশা কইরো না।
এরপর অভিযুক্ত ডাক্তার আলমগীর হোসাইন রেশমি ইসলামের আইনজীবিকেও ফোন করে মামলা উঠানোর জন্য চাপ প্রয়োগ করে বলে জানান রেশমি ইসলাম। মামলা না উঠালে পরিনাম খারাপ হবে বলেও হুমকি প্রদান করেন তিনি। ডাক্তার আলমগীর হোসাইন উল্টো রেশমি ইসলামের নামে মামলা করা হুমকি প্রদান করে।
অভিযুক্ত ডাক্তার আলমগীর হোসাইন ফতুল্লায় অবস্থিত শোভন গ্রুপ অব কোম্পানীতে মেডিকেল অফিসার হিসেবে কর্মরত আছেন।
মামলার করার পরও নির্যাতিত রেশমি ইসলামকে নানাভাবে হয়রানি করছে অভিযুক্ত ডাক্তার আলমগীর হোসাইন, তার বোন কুলসুম বেগম ও বোন জামাই জাহাঙ্গীর হোসেন। তিনি আরও জানান, তার পাসপোর্ট, শিক্ষা জিবনের প্রাপ্ত সার্টিফিকেট সব অই বাড়িতে তাকে এগুলো আনতে দেয়া হয় নি।
প্রসঙ্গত, গত অক্টোবরের ২০ তারিখে রেশমি ইসলামকে গলা টিপে হত্যা চেষ্টা চালায় ফতুল্লার আদর্শ চাষাড়া এলাকা নিবাসি ডাক্তার আলমগীর হোসাইন এবং তার বোন কুলসুম বেগম ও বোন জামাই জাহাঙ্গীর হোসেন। রেশমি ইসলামকে তারা মারধর করেই ক্ষান্ত হয়নি তার কাছ থেকে সাদা কাগজে স্বাক্ষর করিয়েও রাখে। এবং থানায় উল্টো নির্যাতিতের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করে। মারধরের শীকার গৃহবধূ বাবার বাড়িতে গেলে স্বামী ডাক্তার আলমগীর হোসাইন রেশমির মাকে ফোন করে বলে, আপনার মেয়ে পালিয়ে গেছে। এমনই চাঞ্চল্যকর ঘটনার জন্ম দিয়েছে
এনিয়ে নির্যাতিত গৃহবধূ নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার, সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও র্যাব ১১ বরাবর একটি অভিযোগ দায়ের করে।
পরবর্তিতে, রেশমি ইসলাম বাদী হয়ে ঢাকার বিজ্ঞ মহানগর হাকিমের আদালতে একটি মামলা দায়ের করেন। যার নম্বর ৫২৫/২০১৭।
রেশমি ইসলাম আরও জানান, এনিয়ে কয়েকবার বিচার শালিস হয়। বিচার শালিসেও বিচারকদের সামনেই ডাঃ আলমগীর হোসাইন পাঁচ লাখ টাকা যৌতুক দাবি করেন। এবং তার বোন কুলসুম বেগম হুমকি দিয়ে বলেন, পাঁচ লাখ টাকা আনলে এ মেয়ে আমার ভাইয়ের বউ হিসেবে থাকতে পারবে। অন্যথায় পাঁচ লাখ টাকা নিয়ে আমার ভাইকে (ডাঃ আলমগীর হোসাইনকে) অন্যত্র বিয়ে দেবো।
এনিয়ে ডাক্তার আলমগীর হোসাইনের মোবাইলে যোগাযোগ করা হলে সে জানান, সব মিথ্যা ও বানোয়াট। আদালতের বিষয় আমরা আদালতে বুঝবো।
ডাক্তার আলমগীর হোসাইন উল্টো অভিযোগ করে বলেন, ওরাই আমার কাছে পাওনা দাবি করছে। আমি বলেছি আসো যা পাইবা নিয়ে যাও।